ঢাকা , রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুর্বল কোম্পানির ‘বিতর্কিত কারবারি’শেয়ারবাজারে

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ১২:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫
  • 1

দেশের শেয়ারবাজারে দুর্বল কোম্পানির বিপজ্জনক ও বিতর্কিত নাম জাভেদ অপগ্যানহাফেন। তিনি দুর্বল কোম্পানিগুলিকে বিশেষ কৌশলে সবল হিসেবে উপস্থাপন করে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত। রাজনৈতিক প্রভাব এবং বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে তিনি দুর্বল কোম্পানিগুলিকে তালিকাভুক্ত করেছেন এবং এর মাধ্যমে বিশাল পরিমাণ ব্যাংক ঋণ নেন, যা বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

দুর্বল কোম্পানির: উত্থানজাভেদ অপগ্যানহাফেন মূলত দুর্বল কোম্পানি যেমন জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশনস, এসএস স্টিল এবং ফু ওয়াং সিরামিকসকে অতিরঞ্জিত করে শেয়ারবাজারে এনেছেন। শেয়ার ইস্যু এবং ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ তিনি ব্যক্তিগত ফায়দায় ব্যবহার করেছেন। কোম্পানিগুলোর অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতির ফলে তারা কার্যক্রম চালানোতে হিমশিম খাচ্ছে এবং কিছু কোম্পানির শেয়ারদর সাড়ে যথাক্রমে ৩ টাকা ও ৮ টাকায় নেমে গেছে।

ব্যাংক ঋণের সমস্যা :জাভেদের কোম্পানিগুলোকে ব্যাংক থেকে ঋণ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কোম্পানির বর্তমান অবস্থা ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করছে। ব্যাংকগুলো জানায়, ঋণ দেওয়ার সময় কোম্পানিগুলো ভালো অবস্থানে ছিল, কিন্তু অল্প বছরের মধ্যে তাদের অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। এতে ব্যাংকগুলো উদ্বিগ্ন, তারা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ঋণ ফেরত পাবেন কি না।

বিলাসী জীবনযাপন: এদিকে, তার বিপুল ঋণের চাপ সত্ত্বেও জাভেদ গত ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে প্যারিসের এক বিলাসবহুল আয়োজনের মাধ্যমে বিয়ে করেছেন, যা আনুমানিক ২৯২ কোটি টাকা খরচে সম্পন্ন হয়। অভিযোগ রয়েছে যে তিনি কোম্পানির অর্থের ব্যবহার ব্যক্তিগত স্বার্থে করছেন।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার পদক্ষেপ: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এ সকল অনিয়মের তদন্ত শুরু করেছে এবং সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছে। তবে, তারা এখনো কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। কোম্পানির কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও স্পষ্ট উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না, যা পরিস্থিতির জটিলতার ইঙ্গিত দেয়।

শেষকথা: জাভেদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, তিনি শেয়ারবাজারের ব্যাপারগুলোতে রাজনৈতিক প্রভাব, অর্থের অপব্যবহার এবং ব্যবসায়িক নীতিমালার পরিপন্থী কৌশল গ্রহণ করে কোম্পানির দুর্দশা তৈরি করেছেন। বর্তমান পরিস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে। বিএসইসি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এই সমস্যা সমাধানের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

ট্যাগস

দুর্বল কোম্পানির ‘বিতর্কিত কারবারি’শেয়ারবাজারে

আপডেট সময় ১২:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫

দেশের শেয়ারবাজারে দুর্বল কোম্পানির বিপজ্জনক ও বিতর্কিত নাম জাভেদ অপগ্যানহাফেন। তিনি দুর্বল কোম্পানিগুলিকে বিশেষ কৌশলে সবল হিসেবে উপস্থাপন করে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত। রাজনৈতিক প্রভাব এবং বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে তিনি দুর্বল কোম্পানিগুলিকে তালিকাভুক্ত করেছেন এবং এর মাধ্যমে বিশাল পরিমাণ ব্যাংক ঋণ নেন, যা বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

দুর্বল কোম্পানির: উত্থানজাভেদ অপগ্যানহাফেন মূলত দুর্বল কোম্পানি যেমন জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশনস, এসএস স্টিল এবং ফু ওয়াং সিরামিকসকে অতিরঞ্জিত করে শেয়ারবাজারে এনেছেন। শেয়ার ইস্যু এবং ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ তিনি ব্যক্তিগত ফায়দায় ব্যবহার করেছেন। কোম্পানিগুলোর অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতির ফলে তারা কার্যক্রম চালানোতে হিমশিম খাচ্ছে এবং কিছু কোম্পানির শেয়ারদর সাড়ে যথাক্রমে ৩ টাকা ও ৮ টাকায় নেমে গেছে।

ব্যাংক ঋণের সমস্যা :জাভেদের কোম্পানিগুলোকে ব্যাংক থেকে ঋণ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কোম্পানির বর্তমান অবস্থা ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করছে। ব্যাংকগুলো জানায়, ঋণ দেওয়ার সময় কোম্পানিগুলো ভালো অবস্থানে ছিল, কিন্তু অল্প বছরের মধ্যে তাদের অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। এতে ব্যাংকগুলো উদ্বিগ্ন, তারা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ঋণ ফেরত পাবেন কি না।

বিলাসী জীবনযাপন: এদিকে, তার বিপুল ঋণের চাপ সত্ত্বেও জাভেদ গত ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে প্যারিসের এক বিলাসবহুল আয়োজনের মাধ্যমে বিয়ে করেছেন, যা আনুমানিক ২৯২ কোটি টাকা খরচে সম্পন্ন হয়। অভিযোগ রয়েছে যে তিনি কোম্পানির অর্থের ব্যবহার ব্যক্তিগত স্বার্থে করছেন।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার পদক্ষেপ: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এ সকল অনিয়মের তদন্ত শুরু করেছে এবং সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছে। তবে, তারা এখনো কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। কোম্পানির কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও স্পষ্ট উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না, যা পরিস্থিতির জটিলতার ইঙ্গিত দেয়।

শেষকথা: জাভেদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, তিনি শেয়ারবাজারের ব্যাপারগুলোতে রাজনৈতিক প্রভাব, অর্থের অপব্যবহার এবং ব্যবসায়িক নীতিমালার পরিপন্থী কৌশল গ্রহণ করে কোম্পানির দুর্দশা তৈরি করেছেন। বর্তমান পরিস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে। বিএসইসি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এই সমস্যা সমাধানের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা।