ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুঁজিবাজার নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সভা ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা

পুঁজিবাজারে চলমান তীব্র মন্দার মুখে টনক নড়েছে সরকারের। বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও করণীয় ঠিক করার উদ্দেশ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

আগামী রোববার (১১ মে) দুপুর ১২টায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’-তে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

দীর্ঘদিন ধরে পুঁজিবাজারের অবস্থা ভাল যাচ্ছে না। অনিয়ম, দুর্নীতি, কারসাজি, দূর্বল কোম্পানি আপিও অনুমোদন, আস্থাহীনতা ইত্যাদি কারণে বাজারের অবস্থা নাজুক হয়ে উঠলে তা আড়াল করতে বিগত সরকারের সময়ে বিএসইসি ফ্লোরপ্রাইস আরোপ করে রাখে। তাতে কৃত্রিমভাবে পতন ঠেকানো গেলেও আস্থাহীনতা আরও বেড়ে যায়। বিশেষ করে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের চেষ্টা দেশের ব্যাংকিং খাত ও অর্থনীতিতে বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু পুঁজিবাজারে কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন তো দেখাই যায়নি, বরং বাজারের অবস্থা আরও নাজুক হয়েছে।

গত বছরের ১৮ আগস্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন সাবেক ব্যাংকার খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। ওইদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ছিল ৫ হাজার ৭৭৮ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট। টানা পতনে গত বছরের অক্টোবরে তা ৫ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে আসে। পরে সূচক আবার ৫ হাজার পয়েন্টের উপরে উঠলেও এপ্রিলে বাজারের অবস্থা আরও নাজুক হয়ে উঠে। এমন অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা কমিশনের চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চেয়ে একাধিক দফায় বিক্ষোভ করেছেন। তারা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠিও দিয়েছেন। তবে এতদিন পর্যন্ত সরকার খুব একটা নড়াচড়া করেনি। চলতি সপ্তাহে পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে উঠলে সরকার নড়েচড়ে বসে। এর প্রেক্ষিতেই আলোচিত বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৬ মে) বৈঠকের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব ফারজানা জাহান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ইস্যু করা হয়েছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে আগামী ১১ মে দুপুর ১২ টায় “পুঁজিবাজার উন্নয়ন ও শক্তিশালীকরণ” বিষয়ক একটি সভা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’-তে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় অর্থ উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানকে উপস্থিত থাকতে বলা হলো।

চিঠি অনুসারে বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক এবং শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।

বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ১১দিনের সফরে বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের পৃথক দুইটি প্রতিষ্ঠানের আমন্ত্রণে তিনি ওই সফর। এমন পরিস্থিতিতে জরুরি এ বৈঠকে তিনি অংশগ্রহণ নির্ধারিত সময়ের আগেই তিনি দেশে ফিরে আসছেন বলে জানা গেছে।

ট্যাগস

পুঁজিবাজার নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সভা ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট সময় ৫ ঘন্টা আগে

পুঁজিবাজারে চলমান তীব্র মন্দার মুখে টনক নড়েছে সরকারের। বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও করণীয় ঠিক করার উদ্দেশ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

আগামী রোববার (১১ মে) দুপুর ১২টায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’-তে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

দীর্ঘদিন ধরে পুঁজিবাজারের অবস্থা ভাল যাচ্ছে না। অনিয়ম, দুর্নীতি, কারসাজি, দূর্বল কোম্পানি আপিও অনুমোদন, আস্থাহীনতা ইত্যাদি কারণে বাজারের অবস্থা নাজুক হয়ে উঠলে তা আড়াল করতে বিগত সরকারের সময়ে বিএসইসি ফ্লোরপ্রাইস আরোপ করে রাখে। তাতে কৃত্রিমভাবে পতন ঠেকানো গেলেও আস্থাহীনতা আরও বেড়ে যায়। বিশেষ করে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের চেষ্টা দেশের ব্যাংকিং খাত ও অর্থনীতিতে বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু পুঁজিবাজারে কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন তো দেখাই যায়নি, বরং বাজারের অবস্থা আরও নাজুক হয়েছে।

গত বছরের ১৮ আগস্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন সাবেক ব্যাংকার খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। ওইদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ছিল ৫ হাজার ৭৭৮ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট। টানা পতনে গত বছরের অক্টোবরে তা ৫ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে আসে। পরে সূচক আবার ৫ হাজার পয়েন্টের উপরে উঠলেও এপ্রিলে বাজারের অবস্থা আরও নাজুক হয়ে উঠে। এমন অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা কমিশনের চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চেয়ে একাধিক দফায় বিক্ষোভ করেছেন। তারা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠিও দিয়েছেন। তবে এতদিন পর্যন্ত সরকার খুব একটা নড়াচড়া করেনি। চলতি সপ্তাহে পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে উঠলে সরকার নড়েচড়ে বসে। এর প্রেক্ষিতেই আলোচিত বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৬ মে) বৈঠকের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব ফারজানা জাহান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ইস্যু করা হয়েছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে আগামী ১১ মে দুপুর ১২ টায় “পুঁজিবাজার উন্নয়ন ও শক্তিশালীকরণ” বিষয়ক একটি সভা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’-তে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় অর্থ উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানকে উপস্থিত থাকতে বলা হলো।

চিঠি অনুসারে বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক এবং শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।

বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ১১দিনের সফরে বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের পৃথক দুইটি প্রতিষ্ঠানের আমন্ত্রণে তিনি ওই সফর। এমন পরিস্থিতিতে জরুরি এ বৈঠকে তিনি অংশগ্রহণ নির্ধারিত সময়ের আগেই তিনি দেশে ফিরে আসছেন বলে জানা গেছে।