ঢাকা , বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কাদের প্রতিদিন দুধ পান করা উচিত ও কেন

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০২:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫
  • 1

জন্মের পর প্রথম ছয়মাস একজন মানবশিশুর একমাত্র খাবার মায়ের দুধ। এতে সেসব পুষ্টি উপাদান আছে যা একটি শিশুর বিকাশের জন্য প্রয়োজন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য খাবার খেতে শুরু করলে পুষ্টির উৎসগুলো বৈচিত্রময় হয়ে যায়। তারপরও দুধকে সবার জন্যই সুষম খাদ্য বলা হয়ে থাকে, কারণ এতে প্রায় সব ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। কিন্তু নিয়মিত দুধ পান করা কি সবার জন্যই জরুরি? চলুন জেনে নেওয়া যাক।

১. শিশুদের নিয়মিত দুধ পান করা উচিত শরীরের বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য।

২. গর্ভবতী নারীদের প্রচুর ক্যালসিয়াম ও প্রোটিনের চাহিদা তৈরি হয় যা অনেক সময় রোজকার খাবার থেকে পর্যাপ্ত পাওয়া যায়না। তাই ক্যালসিয়াম ও প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে গর্ভবতী নারীদের জন্য নিয়মিত দুধ পান করা স্বাস্থ্যকর।

৩. বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানবদেহের হাড় ক্ষয় হতে শুরু করে। তাই হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে বয়স্কদের দুধ পান করা উচিত।

৪. খেলোয়াড় ও কঠিন শরীরচর্চাকারীদের জন্য দুধ একটি উপকারী খাদ্য। এটি পেশী পুনর্গঠনে সহায়তা করে। সেই সঙ্গে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে।

অর্থাৎ দুধ শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার জন্যই অত্যন্ত উপকারী। দুধ শুধু শক্তি বৃদ্ধিই করে না, হাড় ও দাঁতের গঠন, পেশী শক্তি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। আজ দুধ দিবসে আসুন জেনে নেওয়া যাক দুধের পুষ্টিগুণ বিষয়ে।

দুধের পুষ্টিগুণ

দুধে রয়েছে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, মিনারেলস ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট।

১. ক্যালসিয়াম: হাড় ও দাঁত মজবুত করে। দুধের ক্যালসিয়াম অস্টিওপোরোসিস বা হাড় ক্ষয় রোগ প্রতিরোধ করে। এটি শিশুদের বৃদ্ধি ও গঠনের জন্য অপরিহার্য।

২. প্রোটিন: পেশী গঠন ও মেরামত করে, শরীরের টিস্যু বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

৩. ভিটামিন-ডি: ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে। ক্যালসিয়াম শুধু খেলেই হবেনা, শরীর যেন সেই ক্যালসিয়াম কাজে লাগাতে পারে, সেদিকেও নজর দিতে হবে। ভিটামিন-ডি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।

৪. ভিটামিন-বি১২ ও রাইবোফ্লাভিন (বি২): রক্তকণিকা গঠনে সাহায্য করে, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়। দুধ শক্তি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

৫. পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে ও হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

৬. স্বাস্থ্যকর ফ্যাট: দুধে থাকা ফ্যাট শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি যোগায়। লো-ফ্যাট বা স্কিমড মিল্ক ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

দুধের এতাসব পুষ্টিগুণ থাকলেও যাদের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স আছে, তাদের জন্য এটি উপকারের চেয়ে অপকার বেশি ডেকে আনতে পারে। তাই তারা দুধের বিকল্প যেমন সয়া বা আমন্ড মিল্ক খেতে পারেন। আবার অতিরিক্ত দুধ পান করলে কিছু মানুষের পেটে গ্যাস বা হজমের সমস্যা হতে পারে।

দুধ একটি প্রাকৃতিক সুপারফুড, যা আমাদের দৈনন্দিন পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। নিয়মিত দুধ পান করলে হাড়, পেশী, হার্ট ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

ট্যাগস

কাদের প্রতিদিন দুধ পান করা উচিত ও কেন

আপডেট সময় ০২:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫

জন্মের পর প্রথম ছয়মাস একজন মানবশিশুর একমাত্র খাবার মায়ের দুধ। এতে সেসব পুষ্টি উপাদান আছে যা একটি শিশুর বিকাশের জন্য প্রয়োজন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য খাবার খেতে শুরু করলে পুষ্টির উৎসগুলো বৈচিত্রময় হয়ে যায়। তারপরও দুধকে সবার জন্যই সুষম খাদ্য বলা হয়ে থাকে, কারণ এতে প্রায় সব ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। কিন্তু নিয়মিত দুধ পান করা কি সবার জন্যই জরুরি? চলুন জেনে নেওয়া যাক।

১. শিশুদের নিয়মিত দুধ পান করা উচিত শরীরের বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য।

২. গর্ভবতী নারীদের প্রচুর ক্যালসিয়াম ও প্রোটিনের চাহিদা তৈরি হয় যা অনেক সময় রোজকার খাবার থেকে পর্যাপ্ত পাওয়া যায়না। তাই ক্যালসিয়াম ও প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে গর্ভবতী নারীদের জন্য নিয়মিত দুধ পান করা স্বাস্থ্যকর।

৩. বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানবদেহের হাড় ক্ষয় হতে শুরু করে। তাই হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে বয়স্কদের দুধ পান করা উচিত।

৪. খেলোয়াড় ও কঠিন শরীরচর্চাকারীদের জন্য দুধ একটি উপকারী খাদ্য। এটি পেশী পুনর্গঠনে সহায়তা করে। সেই সঙ্গে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে।

অর্থাৎ দুধ শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার জন্যই অত্যন্ত উপকারী। দুধ শুধু শক্তি বৃদ্ধিই করে না, হাড় ও দাঁতের গঠন, পেশী শক্তি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। আজ দুধ দিবসে আসুন জেনে নেওয়া যাক দুধের পুষ্টিগুণ বিষয়ে।

দুধের পুষ্টিগুণ

দুধে রয়েছে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, মিনারেলস ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট।

১. ক্যালসিয়াম: হাড় ও দাঁত মজবুত করে। দুধের ক্যালসিয়াম অস্টিওপোরোসিস বা হাড় ক্ষয় রোগ প্রতিরোধ করে। এটি শিশুদের বৃদ্ধি ও গঠনের জন্য অপরিহার্য।

২. প্রোটিন: পেশী গঠন ও মেরামত করে, শরীরের টিস্যু বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

৩. ভিটামিন-ডি: ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে। ক্যালসিয়াম শুধু খেলেই হবেনা, শরীর যেন সেই ক্যালসিয়াম কাজে লাগাতে পারে, সেদিকেও নজর দিতে হবে। ভিটামিন-ডি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।

৪. ভিটামিন-বি১২ ও রাইবোফ্লাভিন (বি২): রক্তকণিকা গঠনে সাহায্য করে, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়। দুধ শক্তি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

৫. পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে ও হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

৬. স্বাস্থ্যকর ফ্যাট: দুধে থাকা ফ্যাট শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি যোগায়। লো-ফ্যাট বা স্কিমড মিল্ক ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

দুধের এতাসব পুষ্টিগুণ থাকলেও যাদের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স আছে, তাদের জন্য এটি উপকারের চেয়ে অপকার বেশি ডেকে আনতে পারে। তাই তারা দুধের বিকল্প যেমন সয়া বা আমন্ড মিল্ক খেতে পারেন। আবার অতিরিক্ত দুধ পান করলে কিছু মানুষের পেটে গ্যাস বা হজমের সমস্যা হতে পারে।

দুধ একটি প্রাকৃতিক সুপারফুড, যা আমাদের দৈনন্দিন পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। নিয়মিত দুধ পান করলে হাড়, পেশী, হার্ট ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।