আবারও উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলায় এই উত্তাপ ছড়িয়েছে জ্বালানি ও স্বর্ণের বাজারে শুক্রবার (১৩ জুন) হামলার খবর প্রকাশের পরই বিশ্ববাজারে জ্বালানি বেড়ে যায় তেলে ও অস্ত্রের দাম। সেইসঙ্গে বড় দরপতন দেখা দিয়েছে বৈশ্বিক পুঁজিবাজারেও।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন বলছে, হামলার খবর প্রকাশের পরপরই ব্রেন্ট ক্রুড ও নাইমেক্স লাইট সুইটের দাম তাৎক্ষণিকভাবে ১০ শতাংশের বেশি বেড়ে জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছায়। স্বর্ণের দামও ১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স ৩৪ হাজার ৪৩৪ ডলার হয়েছে, যা এপ্রিলের রেকর্ডের কাছাকাছি। নিরাপদ মুদ্রা সুইস ফ্রাঁ ও ইয়েনের দামও বেড়েছে।
ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের মালিক আইএজি ও ইজিজেটের শেয়ার ৪ শতাংশের বেশি পড়ে গেছে। তারা মধ্যপ্রাচ্যের আকাশপথ এড়িয়ে চলছে। বিপরীতে অস্ত্র প্রস্তুতকারী বিএই সিস্টেমের শেয়ার ৩ শতাংশ বেড়েছে। তেল কোম্পানি বিপি ও শেলের শেয়ারে ২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি দেখা গেছে।
ধস নেমেছে বিশ্বের পুঁজিবাজারগুলোতেও। লন্ডনের এফটি্এস ১০০ সূচক খোলার সঙ্গে সঙ্গেই ৫০ পয়েন্ট পড়ে যায়। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, হংকংসহ এশিয়ার বাজারগুলোতে দশমিক ৮ থেকে ১ দশমিক ৩ শতাংশ পর্যন্ত পতন হয়েছে। জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেনসহ ইউরোপের প্রধান বাজারগুলোও এক শতাংশের বেশি হারিয়েছে। মার্কিন বাজারেও পতনের পূর্বাভাস মিলেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই উত্তেজনা এমন এক সময়ে দেখা দিল যখন বিশ্ববাজার অনিশ্চয়তায় ভুগছে। একই সঙ্গে প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা খাতের জন্য এটি নতুন চাপ তৈরি করেছে।
এদিকে, চরম পরিস্থিতিতে ইরান হরমুজ প্রণালিতে হামলা বা জ্বালানি অবকাঠামোয় আঘাত হেনে প্রতিদিন কয়েক মিলিয়ন ব্যারেল তেলের সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে। বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ চলাচলের পথ হরমুজ প্রণালি দিয়ে বিশ্বের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ তেল সরবরাহ হয়। উত্তরে ইরান আর দক্ষিণে ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাঝে অবস্থিত এই প্রণালি উপসাগরকে সংযুক্ত করে আরব সাগরের সঙ্গে।