ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অবৈধ সম্পদ : পেছাল মির্জা আব্বাসের রায়

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৩:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩
  • 160

আগামী ২৮ ডিসেম্বর নতুন তারিখ ঠিক করে দিয়েছেন জজ আদালতের বিচারক।

সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদকের মামলার রায়ের তারিখ ফের পিছিয়ে গেছে।

মঙ্গলবার ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মঞ্জুরুল ইমামের এ রায় ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু বিচারকের ‘বাবা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে থাকায়’ রায় প্রস্তুত হয়নি বলে জানিয়েছেন আদালতের পেশকার জাহিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, রায়ের জন্য আগামী ২৮ ডিসেম্বর নতুন তারিখ ঠিক করেছেন বিচারক।

আব্বাসের আইনজীবী মহিউদ্দিন চৌধুরীও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে রায় পেছানোর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এই নিয়ে রায় ঘোষণার তারিখ দুইবার তারিখ পেছানো হল।

রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে রায় ঘোষণার জন্য বিচারক প্রথমবার ৩০ নভেম্বর তারিখ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেদিন বিচারক জানিয়েছিলেন ‘সময়ের অভাবে’ রায় প্রস্তুত করা যায়নি, তাই তারিখ ঠিক করেন ১২ ডিসেম্বর।

মির্জা আব্বাসের হয়ে এ মামলা লড়েছেন আইনজীবী মো. আমিনুল ইসলাম, মহিউদ্দিন চৌধুরী ও শাহীনূর ইসলাম অনি। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।

প্রায় সাড়ে ১৬ বছর আগে আয়ের সঙ্গে ‘অসঙ্গিতপূর্ণ’ সাড়ে সাত কোটি টাকার বেশি সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা এ মামলায় মির্জা আব্বাসের সাজা প্রত্যাশা করছেন দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।

তিনি বলেন, “রায়ে তো তার সাজা হওয়ার কথা। বিচারক জানেন কি হবে।”

অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুলের প্রত্যাশা, তার মক্কেল খালাস পাবেন।

এ আইনজীবী দাবি করেন, মির্জা আব্বাসের সম্পদ গোপন করার দরকার নেই। জ্ঞাত আয় বহির্ভূত তার কোনো সম্পদ নেই। রাজারবাগ, শাজাহানপুরে মির্জা আব্বাস পৈত্রিক সূত্রে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি পেয়েছেন।

মামলা ও আব্বাসের বক্তব্য

রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, চার কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ রয়েছে এই বিএনপি নেতার। একই সঙ্গে ২২ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করা হয়েছে।

এ মামলায় বিচার চলাকালে রাষ্ট্রপক্ষে ২৪ জন সাক্ষ্য দেন। মির্জা আব্বাস নিজে, একজন আইনজীবী, ঢাকা ব্যাংকের দুই কর্মকর্তাসহ পাঁচজন সাফাই সাক্ষ্য দেন।

বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে ২৮ অক্টোবর পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের পর শাহজাহানপুর থানার একটি নাশকতার মামলায় মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই মামলায় রিমান্ডের পর দুদকের এ মামলাতেও গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাকে।

সাফাই সাক্ষ্যে মির্জা আব্বাস বলেছিলেন, কৃষি পেশাজীবী থেকে তার আগের প্রজন্ম ব্যবসায়ী পরিবার হয়ে ওঠে। মতিঝিলের পীরজঙ্গী মাজার থেকে রাজারবাগের কাছে ফ্লাইওভার পর্যন্ত তার এবং পরিবারের জায়গা।

‘ধনাঢ্য পরিবার থেকে এসেছেন’ দাবি মির্জা আব্বাস বলেছিলেন, তাকে বাঁকা পথে সম্পদ অর্জন করতে হয়নি। তার চাচা শহীদের নামে শহীদবাগের নামকরণ করা হয়। ঢাকার বিখ্যাত মাজেদ সরদার তাদের পরিবারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। তার চাচা বিডি মেম্বার ও পাকিস্তান আমলে ইউনিয়ন পরিষদে প্রেসিডেন্ট ছিলেন। রাজনীতিতে তার চাচার হাত ধরেই প্রবেশ।

আব্বাসের দাবি, তার নানার কাছ থেকে তার বাবা এবং তিনি ঢাকার খিলগাঁও রেলগেট থেকে রাজারবাগ পর্যন্ত পুরো এলাকার জমির মালিকানা পান। শাজাহানপুর থেকে রাজারবাগ মোড় পর্যন্ত যে রাস্তা তৈরি হয়েছে, সেটি তাদের মালিকানার জয়াগায়।

আয়ের সঙ্গে ‘অসঙ্গতিপূর্ণ’ ৭ কোটি ৫৪ লাখ ৩২ হাজার ২৯০ টাকার সম্পদের মালিক হওয়া এবং ৫৭ লাখ ২৬ হাজার ৫৭১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ১৬ অগাস্ট দুদকের উপপরিচালক মো. শফিউল আলম ঢাকার রমনা থানায় এ মামলা করেন।

তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ২৪ মে দুদকের উপপরিচালক মো. খায়রুল হুদা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

সেখানে আব্বাসের বিরুদ্ধে ৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ২২ লাখ টাকার সম্পত্তির তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়।

২০০৮ সালের ১৬ জুন মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক।

ট্যাগস

অবৈধ সম্পদ : পেছাল মির্জা আব্বাসের রায়

আপডেট সময় ০৩:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩

আগামী ২৮ ডিসেম্বর নতুন তারিখ ঠিক করে দিয়েছেন জজ আদালতের বিচারক।

সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদকের মামলার রায়ের তারিখ ফের পিছিয়ে গেছে।

মঙ্গলবার ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মঞ্জুরুল ইমামের এ রায় ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু বিচারকের ‘বাবা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে থাকায়’ রায় প্রস্তুত হয়নি বলে জানিয়েছেন আদালতের পেশকার জাহিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, রায়ের জন্য আগামী ২৮ ডিসেম্বর নতুন তারিখ ঠিক করেছেন বিচারক।

আব্বাসের আইনজীবী মহিউদ্দিন চৌধুরীও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে রায় পেছানোর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এই নিয়ে রায় ঘোষণার তারিখ দুইবার তারিখ পেছানো হল।

রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে রায় ঘোষণার জন্য বিচারক প্রথমবার ৩০ নভেম্বর তারিখ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেদিন বিচারক জানিয়েছিলেন ‘সময়ের অভাবে’ রায় প্রস্তুত করা যায়নি, তাই তারিখ ঠিক করেন ১২ ডিসেম্বর।

মির্জা আব্বাসের হয়ে এ মামলা লড়েছেন আইনজীবী মো. আমিনুল ইসলাম, মহিউদ্দিন চৌধুরী ও শাহীনূর ইসলাম অনি। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।

প্রায় সাড়ে ১৬ বছর আগে আয়ের সঙ্গে ‘অসঙ্গিতপূর্ণ’ সাড়ে সাত কোটি টাকার বেশি সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা এ মামলায় মির্জা আব্বাসের সাজা প্রত্যাশা করছেন দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।

তিনি বলেন, “রায়ে তো তার সাজা হওয়ার কথা। বিচারক জানেন কি হবে।”

অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুলের প্রত্যাশা, তার মক্কেল খালাস পাবেন।

এ আইনজীবী দাবি করেন, মির্জা আব্বাসের সম্পদ গোপন করার দরকার নেই। জ্ঞাত আয় বহির্ভূত তার কোনো সম্পদ নেই। রাজারবাগ, শাজাহানপুরে মির্জা আব্বাস পৈত্রিক সূত্রে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি পেয়েছেন।

মামলা ও আব্বাসের বক্তব্য

রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, চার কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ রয়েছে এই বিএনপি নেতার। একই সঙ্গে ২২ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করা হয়েছে।

এ মামলায় বিচার চলাকালে রাষ্ট্রপক্ষে ২৪ জন সাক্ষ্য দেন। মির্জা আব্বাস নিজে, একজন আইনজীবী, ঢাকা ব্যাংকের দুই কর্মকর্তাসহ পাঁচজন সাফাই সাক্ষ্য দেন।

বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে ২৮ অক্টোবর পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের পর শাহজাহানপুর থানার একটি নাশকতার মামলায় মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই মামলায় রিমান্ডের পর দুদকের এ মামলাতেও গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাকে।

সাফাই সাক্ষ্যে মির্জা আব্বাস বলেছিলেন, কৃষি পেশাজীবী থেকে তার আগের প্রজন্ম ব্যবসায়ী পরিবার হয়ে ওঠে। মতিঝিলের পীরজঙ্গী মাজার থেকে রাজারবাগের কাছে ফ্লাইওভার পর্যন্ত তার এবং পরিবারের জায়গা।

‘ধনাঢ্য পরিবার থেকে এসেছেন’ দাবি মির্জা আব্বাস বলেছিলেন, তাকে বাঁকা পথে সম্পদ অর্জন করতে হয়নি। তার চাচা শহীদের নামে শহীদবাগের নামকরণ করা হয়। ঢাকার বিখ্যাত মাজেদ সরদার তাদের পরিবারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। তার চাচা বিডি মেম্বার ও পাকিস্তান আমলে ইউনিয়ন পরিষদে প্রেসিডেন্ট ছিলেন। রাজনীতিতে তার চাচার হাত ধরেই প্রবেশ।

আব্বাসের দাবি, তার নানার কাছ থেকে তার বাবা এবং তিনি ঢাকার খিলগাঁও রেলগেট থেকে রাজারবাগ পর্যন্ত পুরো এলাকার জমির মালিকানা পান। শাজাহানপুর থেকে রাজারবাগ মোড় পর্যন্ত যে রাস্তা তৈরি হয়েছে, সেটি তাদের মালিকানার জয়াগায়।

আয়ের সঙ্গে ‘অসঙ্গতিপূর্ণ’ ৭ কোটি ৫৪ লাখ ৩২ হাজার ২৯০ টাকার সম্পদের মালিক হওয়া এবং ৫৭ লাখ ২৬ হাজার ৫৭১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ১৬ অগাস্ট দুদকের উপপরিচালক মো. শফিউল আলম ঢাকার রমনা থানায় এ মামলা করেন।

তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ২৪ মে দুদকের উপপরিচালক মো. খায়রুল হুদা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

সেখানে আব্বাসের বিরুদ্ধে ৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ২২ লাখ টাকার সম্পত্তির তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়।

২০০৮ সালের ১৬ জুন মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক।