প্রথম দিন শেষে অপরাজিত থেকে ক্রিজ ছেড়েছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার ও উসমান খাজা। দ্বিতীয় দিনে সবার দৃষ্টি ছিল ওয়ার্নারের ব্যাটের দিকে। তবে সমর্থকদের হতাশ করেছেন বিদায়ী টেস্ট খেলতে নামা অজি ওপেনার। টিকতে পারেননি খাজাও। সঙ্গে যোগ হয়েছে বৃষ্টি। তাতে দ্বিতীয় দিন শেষে ২ উইকেটে ১১৬ রান নিয়ে মাঠ ছেড়েছে অস্ট্রেলিয়া।
সিডনি টেস্টে গতকাল বিনা উইকেটে ৬ রান নিয়ে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছিল অস্ট্রেলিয়া। আজ বৃষ্টি এবং আলোকস্বল্পতায় মাত্র ৪৬ ওভার খেলা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ২ উইকেটে ১১৬ রান। প্রথম ইনিংসে ৩১৩ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়া এখনো ১৯৭ রান পিছিয়ে।
দ্বিতীয় দিনে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৭০ রান যোগ করেন ওয়ার্নার ও খাজা। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে নামা ওয়ার্নার ব্যক্তিগত ২০ রানে স্লিপে সাইম আইয়ুবের হাতে ‘জীবন’ পেলেও সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি। ৩৪ রানে আগা সালমানের বলে স্লিপেই তাকে তালুবন্দি করেন বাবর আজম।
প্রথম সেশনে ওয়ার্নারকে হারানোর পর দ্বিতীয় সেশনে খাজাকে হারায় অস্ট্রেলিয়া। ব্যক্তিগত ৪৭ রানে আমেরের বলে উইকেটকিপার মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ক্যাচ দেন। বাকি পথে আর কোনো উইকেট হারায়নি অস্ট্রেলিয়া। মারনাস লাবুশেনের সঙ্গে জুটি বেঁধে ক্রিজে আছেন স্টিভ স্মিথ। লাবুশেন অপরাজিত আছেন ২৩ রানে।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তানের অধিনায়ক শান মাসুদ। তবে তার সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণিত করেন দুই ওপেনার আবদুল্লাহ শফিক ও সায়েম আইয়ুব। স্কোর কার্ডে কোনো রান যোগ হওয়ার আগেই ফিরে যান দুই ওপেনার। পাকিস্তানের পঞ্চম ওপেনার হিসেবে টেস্ট অভিষেকে শূন্য রানে আউট হয়েছেন সায়েম।
এরপর শান মাসুদ ও বাবর আজম জুটি বাঁধলে ম্যাচে ফিরে আসে পাকিস্তান। তবে এই দুজনের আউটের পর ১০০ রান তোলার আগেই পঞ্চম উইকেট হারায় তারা। ৩০তম ওভারে দলকে ৯৬ রানে রেখে বিদায় নেন অধিনায়ক মাসুদ। এরপর আগা সালমানকে নিয়ে দলের হাল ধরেন মোহাম্মদ রিজওয়ান।
রিজওয়ান ও আগা মিলে ৯৪ রানের জুটি গড়ে প্রথম প্রতিরোধ গড়েন। দারুণ খেলতে থাকা রিজওয়ান সেঞ্চুরির দিকেই আগাচ্ছিলেন। তবে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার থেকে ১২ রান দূরে থাকতে আউট হন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। ১৯০ রানের মাথায় রিজওয়ান আউট হতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং।
দেখতে না দেখতেই ৬ উইকেটে ১৯০ থেকে ৯ উইকেটে ২২৭ হয়ে যায় পাকিস্তান। পরের গল্পটা আমের জামালের, যেখানে তার যোগ্য সঙ্গী মির হামজা। অস্ট্রেলীয়দের হতাশ করে আর ওয়ার্নার ভক্তদের অপেক্ষা বাড়িয়ে কী ব্যাটিংটাই না করলেন দুজন। যা অনেকদিন চোখে লেগে থাকার মতো।
জামাল নেমেছিলেন নয় নম্বরে। তার কাছ থেকে বেশি কিছু আশাও করেনি পাকিস্তান। কিন্তু জামাল ব্যাট করেছেন বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের মতোই। মাত্রই তৃতীয় টেস্ট খেলা এই পেসার বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই তুলে নেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের প্রথম ফিফটি। ৯৭ বলে ৮২ রান করা জামাল মেরেছেন ৪টি ছক্কাও।
অন্য পাশে হামজা দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন জামালকে। প্রথম ২১ বলে কোনো রান না নেওয়া হামজা চার মেরেই খুলেছেন রানের খাতা। জামালকে নিয়ে শেষ জুটিতে ৮৬ রান যোগ করেন তিনি। হামজা শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৪৩ বলে ৭ রান করে।