ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সূর্যের পথে ভারতের সৌরযান

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৩:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৪
  • 105

গত বছরের সেপ্টেম্বরে যাত্রা শুরু করে চার মাসের মাথায় অবশেষে সূর্যের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে ইসরোর সৌরযান আদিত্য-এল১। বিজ্ঞানীদের হাড়ভাঙা খাটুনির ফল পাওয়ার অপেক্ষায় পুরো ভারত। এই যাত্রা সফল হলে ভারতের মহাকাশ গবেষণা যুক্ত হবে নতুন পালক।

গত ২ সেপ্টেম্বর অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস রিসার্চ সেন্টার থেকে সূর্যের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল আদিত্য-এল১। ইসরোর বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, শনিবার বিকেলেই গন্তব্যে পৌঁছে যাবে এই সৌরযান।

ভারতের প্রথম সৌরযান আদিত্য-এল১। এই সৌরযান তার কাঙ্ক্ষিত কক্ষপথে পৌঁছে যাবে বলেই আশা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে দীর্ঘ চার মাসের যাত্রা শেষ হচ্ছে। তবে নির্দিষ্ট লক্ষ্যপথে তাকে পাঁচ বছরের জন্য অবস্থান করতে হবে। বিকেলে আদিত্য-এল১-এর চূড়ান্ত পর্যায়ের কক্ষপথ পরিবর্তন করানো হবে। বিকেল ৪টার দিকে ইসরোর বিজ্ঞানীরা সৌরযানটিকে পৌঁছে দেবেন ল্যাগারেঞ্জ পয়েন্ট বা এল১ পয়েন্টের নির্দিষ্ট কক্ষপথে।

সেখান থেকে সূর্য আরও কয়েক কোটি কিলোমিটার দূরে। সূর্য এবং পৃথিবীর দূরত্ব ১৫ কোটি কিলোমিটার। এর মাত্র এক শতাংশ পেরিয়েছে আদিত্য-এল১। পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব ১৫ লাখ কিলোমিটার।

এর আগে ভারতের কোনও মহাকাশযান সূর্যের এত কাছে যায়নি। সূর্য সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য এই সৌরযান জানাতে পারবে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা। আদিত্য-এল১-কে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছে দেওয়াই এখন ইসরোর সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ অত্যন্ত সাবধানেই কাজটি করতে হবে।

এই প্রক্রিয়ায় সামান্য ভুল হলেই এত দিনের পরিশ্রম বৃথা হয়ে যাবে মুহূর্তেই। যে চাপ দিয়ে সৌরযানটিকে এল১ পয়েন্টে পাঠানো হবে তা কমবেশি হলে বিপদ ঘটতে পারে। অধীর আগ্রহ আর উৎকণ্ঠায় তাই বিকেল ৪টা বাজার অপেক্ষায় রয়েছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।

সৌরযানকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছে দেওয়ার কাজ সফল হলে বছরের শুরুতে আরও এক সাফল্যের দেখা পাবে ইসরো। এল১ পয়েন্টে সূর্য এবং পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে ঘুরতে থাকবে সৌরযানটি।

এই সৌরযানকে নিয়ন্ত্রণ করতে তখন আর খুব বেশি শক্তি খরচের প্রয়োজন হবে না। সূর্যকে ওই এলাকা থেকে বিনা বাধায় স্পষ্ট দেখতে পাবে আদিত্য-এল১। কয়েক সপ্তাহ অন্তর অন্তর সামনে কোনও পাথর বা বাধা এলে ইসরোর বিজ্ঞানীরা কেবল তার মোড় ঘুরিয়ে দেবেন। এই মুহূর্তে ওই এলাকায় নাসার পাঠানো আরও চারটি মহাকাশযান রয়েছে। সেগুলোর সঙ্গেও যাতে সংঘর্ষ না হয়, তা নিশ্চিত করবেন বিজ্ঞানীরা।

আদিত্য-এল১ সূর্য এবং পৃথিবীর মাঝের এল১ পয়েন্টে পৌঁছে সূর্যকে কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করবে। পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব হবে ১৫ লাখ কিলোমিটার। সূর্য সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য এর ফলে ভারতীয় বিজ্ঞানীরা জানতে পারবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত বছরের অক্টোবরে আদিত্য এল১-এ থাকা এল১ অরবিটিং এক্সরে স্পেকট্রোমিটারের মাধ্যমে ধরা পড়েছিল সূর্যের শিখার বিস্ফোরণের একটি পর্যায়। সূর্যের পৃষ্ঠে বিস্ফোরণে তৈরি হয় এই সৌর শিখা।

ট্যাগস

সূর্যের পথে ভারতের সৌরযান

আপডেট সময় ০৩:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৪

গত বছরের সেপ্টেম্বরে যাত্রা শুরু করে চার মাসের মাথায় অবশেষে সূর্যের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে ইসরোর সৌরযান আদিত্য-এল১। বিজ্ঞানীদের হাড়ভাঙা খাটুনির ফল পাওয়ার অপেক্ষায় পুরো ভারত। এই যাত্রা সফল হলে ভারতের মহাকাশ গবেষণা যুক্ত হবে নতুন পালক।

গত ২ সেপ্টেম্বর অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস রিসার্চ সেন্টার থেকে সূর্যের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল আদিত্য-এল১। ইসরোর বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, শনিবার বিকেলেই গন্তব্যে পৌঁছে যাবে এই সৌরযান।

ভারতের প্রথম সৌরযান আদিত্য-এল১। এই সৌরযান তার কাঙ্ক্ষিত কক্ষপথে পৌঁছে যাবে বলেই আশা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে দীর্ঘ চার মাসের যাত্রা শেষ হচ্ছে। তবে নির্দিষ্ট লক্ষ্যপথে তাকে পাঁচ বছরের জন্য অবস্থান করতে হবে। বিকেলে আদিত্য-এল১-এর চূড়ান্ত পর্যায়ের কক্ষপথ পরিবর্তন করানো হবে। বিকেল ৪টার দিকে ইসরোর বিজ্ঞানীরা সৌরযানটিকে পৌঁছে দেবেন ল্যাগারেঞ্জ পয়েন্ট বা এল১ পয়েন্টের নির্দিষ্ট কক্ষপথে।

সেখান থেকে সূর্য আরও কয়েক কোটি কিলোমিটার দূরে। সূর্য এবং পৃথিবীর দূরত্ব ১৫ কোটি কিলোমিটার। এর মাত্র এক শতাংশ পেরিয়েছে আদিত্য-এল১। পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব ১৫ লাখ কিলোমিটার।

এর আগে ভারতের কোনও মহাকাশযান সূর্যের এত কাছে যায়নি। সূর্য সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য এই সৌরযান জানাতে পারবে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা। আদিত্য-এল১-কে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছে দেওয়াই এখন ইসরোর সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ অত্যন্ত সাবধানেই কাজটি করতে হবে।

এই প্রক্রিয়ায় সামান্য ভুল হলেই এত দিনের পরিশ্রম বৃথা হয়ে যাবে মুহূর্তেই। যে চাপ দিয়ে সৌরযানটিকে এল১ পয়েন্টে পাঠানো হবে তা কমবেশি হলে বিপদ ঘটতে পারে। অধীর আগ্রহ আর উৎকণ্ঠায় তাই বিকেল ৪টা বাজার অপেক্ষায় রয়েছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।

সৌরযানকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছে দেওয়ার কাজ সফল হলে বছরের শুরুতে আরও এক সাফল্যের দেখা পাবে ইসরো। এল১ পয়েন্টে সূর্য এবং পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে ঘুরতে থাকবে সৌরযানটি।

এই সৌরযানকে নিয়ন্ত্রণ করতে তখন আর খুব বেশি শক্তি খরচের প্রয়োজন হবে না। সূর্যকে ওই এলাকা থেকে বিনা বাধায় স্পষ্ট দেখতে পাবে আদিত্য-এল১। কয়েক সপ্তাহ অন্তর অন্তর সামনে কোনও পাথর বা বাধা এলে ইসরোর বিজ্ঞানীরা কেবল তার মোড় ঘুরিয়ে দেবেন। এই মুহূর্তে ওই এলাকায় নাসার পাঠানো আরও চারটি মহাকাশযান রয়েছে। সেগুলোর সঙ্গেও যাতে সংঘর্ষ না হয়, তা নিশ্চিত করবেন বিজ্ঞানীরা।

আদিত্য-এল১ সূর্য এবং পৃথিবীর মাঝের এল১ পয়েন্টে পৌঁছে সূর্যকে কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করবে। পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব হবে ১৫ লাখ কিলোমিটার। সূর্য সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য এর ফলে ভারতীয় বিজ্ঞানীরা জানতে পারবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত বছরের অক্টোবরে আদিত্য এল১-এ থাকা এল১ অরবিটিং এক্সরে স্পেকট্রোমিটারের মাধ্যমে ধরা পড়েছিল সূর্যের শিখার বিস্ফোরণের একটি পর্যায়। সূর্যের পৃষ্ঠে বিস্ফোরণে তৈরি হয় এই সৌর শিখা।