দেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসীদের বিরাট অবদান স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে গণভবনে প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে মত বিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীনতা, সংগ্রামে বিশ্ব জনমত সৃষ্টিতে প্রবাসীরা বিরাট অবদান রাখেন। প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসীদের বিরাট অবদান রয়েছে। সেটা ছাড়াও আবার স্বাধীন বাংলাদেশে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি।’
‘প্রবাসীরা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে, যেকোনো আন্দোলনে অবদান রেখেছেন। যখন বাংলাদেশে মার্শাল ল জারি হয় আমরা যখন কাজ করতে পারি না, তখন প্রবাসীরা প্রতিবাদ জানান। আপনারা আন্দোলন সংগ্রাম করেন। জনমত সৃষ্টি করেন। এটা আমাদের জন্য বিরাট শক্তি।’
তিনি বলেন, ‘৭ জানুয়ারি যে নির্বাচনটা হয়ে গেছে, সব থেকে আমি জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। কারণ এই জনগণই স্বতস্ফুর্তভাবে ভোট দিতে এসেছে। বিএনপি যখন নির্বাচনে আসবে না, কেউ যাতে নির্বাচনে না আসে, কেউ যেনো ভোট না দেয় এর জন্য লিফলেট বিতরণ শুরু করলো, এই লিফলেট বিতরণের পরে ঘটনা উল্টো হয়ে গেলো, মানুষজন আরও উৎসাহিত হলো, আমাদের ভোট দিতেই হবে।’
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজনে সরকারের যে প্রতিশ্রুতি ছিলো তা পুনর্ব্যক্ত করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। এবারের নির্বাচন কমিশন একটা আইনের মাধ্যমে হয়েছে। নির্বাচনে কোনো রকম দুর্ঘটনা যেনো না ঘটে, একটা অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন যাতে হয় সেই প্রচেষ্টা আমাদের ছিলো। যার কারণে একের পর এক নির্বাচনের সংস্কার আমরা নিয়ে আসি। কারণ সেনা শাসকরা যখন একের পর এক ক্ষমতা দখল করে তখন তারা নির্বাচনে ভোট কারচুপি করাটা শুরু করেছিলো। সেই জায়গা থেকে মানুষের অধিকার মানুষকে ফিরিয়ে দেওয়া সেই আন্দোলন সংগ্রামটাই আমরা করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই দেশের মানুষ উপলব্ধি করেছে সরকার জনগণের সেবক। সেই ঘোষণাটা জাতির পিতা দিয়েছিলেন, আমি জাতির পিতার কন্যা হিসেবে তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে সেই ঘোষণাটাই দিয়েছি। আমি প্রধানমন্ত্রী না, জাতির জনকের কন্যা হিসেবে মানুষের সেবক হিসেবে কাজ করবো, যেন মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারি।’
বাংলাদেশ যুদ্ধ নয় শান্তিতে বিশ্বাসী উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি, করোনা ভাইরাসের অতিমারি, ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ, যেটা ২০২৪ সালে আমাদের কার্যকর করার কথা ছিলো, সেটা আমরা দু’বছর বাড়িয়ে নিয়েছি। এরপরে প্যালেস্টাইনের ওপর হামলা, শিশু-নারী ও হাসপাতালে আক্রমণ করা। আমরা সব সময় প্যালেস্টাইনের পক্ষে আছি। এভাবে একটা জাতিকে ধ্বংস করা, নারীদের ধ্বংস করা, এটা এক ধরণের গণহত্যা।’
আমরা সাহায্য পাঠিয়েছি, আগামীতে পাঠাবো। এর পরে আবার ইয়েমেনে আক্রমণ। আমরা যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তি চাই। মিয়ানমার যখন অশান্ত হলো, তারা আশ্রয় চাইলো আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। মিয়ানমারের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি, আমরা যুদ্ধে যাইনি। কারণ আমরা শান্তি চেয়েছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে এই যে অস্ত্র প্রতিযোগিতা…আন্তর্জাতিকভাবে আমি যেখানেই গিয়েছি সেখানেই বলেছি এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করে ওই টাকা শিশুদের খাদ্য, শিশুদের চিকিৎসা, শিশুদের শিক্ষায় ব্যয় হোক। মানবকল্যাণে ব্যয় করা হোক, যে দেশ এই টাকা ব্যয় করছে, সেই টাকা তো ওই দেশের জনগণের ট্যাক্সের টাকা, তাদের টাকা ধ্বংসের জন্য কেন ব্যয় হবে, ধ্বংসাত্মক কাজে ব্যয় হবে, মানবকল্যাণে ব্যয় হোক।
আজকে শিশুরা কষ্ট পায়, নারীরা কষ্ট পায়, মানবজাতি কষ্ট পায় সে ধরনের কাজ করতে হবে কেন? আমরা এর ঘোর বিরোধীতা করি, আমরা কখনো যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই।
তিনি বলেন, বিএনপি অফিসে তারাই তালা দেয় তারাই ভাঙ্গে, তারা বলে চাবি হারিয়েছে। চাবিটা গেলো কোথায়? তারাইতো তালা দিয়েছে, তাদের চাবি হারাবে তারা পথও হারাবে। তারা এখন পথ হারানো পথিক হয়ে গেছে। জানি না তাদের সাংগঠনিক কোনো যোগ্যতা আছে কি না। একটাই আছে আগুন দেওয়া।