ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৩৯ বছর ধরে বেতন-ভাতা বঞ্চিত ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৬:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • 148

দীর্ঘ ৩৯ বছর ধরে বেতন-ভাতা বঞ্চিত হয়েও শিক্ষার্থীদের পাঠদান অব্যাহত রেখেছেন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা। এতে তারা চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এজন্য সারা দেশের দেড় হাজার ইবতেদায়ি মাদ্রাসাকে জাতীয়করণের দাবি জানানো হয়েছে।

রোববার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোট আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন সংগঠনের চেয়ারম্যান কাজী মোখলেছুর রহমান।

কাজী ফয়েজুর রহমানের সভাপতিত্বে শিক্ষক সমাবেশ ও মানববন্ধন শেষে প্রধানমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নেতা বশির বিল্লাহ আতাহারী, সামছুল আলম, মাহমুদুল হাসান, আ. রহিম, মো. আলামিন, আ. হান্নান, খোরশেদ আলম, আ. কুদ্দুস, সওকত মাস্টার, ছাইফুল্লাহ হেলাল, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. নুরুল আমিন, আ. করিম ভুইয়া প্রমুখ।

মানববন্ধনে লিখিত বক্তৃতায় সংগঠনের মহাসচিব মো. তাজুল ইসলাম ফরাজী বলেন, ১৯৭৮ অর্ডিনেন্স ১৭ (২) ধারা মোতাবেক মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের শর্ত পূরণ সাপেক্ষে সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত হয়। এরপর থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধি মোতাবেক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। ১৯৯৪ সালে একই পরিপত্রে রেজিস্ট্রার বেসরকারি প্রাইমারি ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে বিগত সরকারের সময়ে ধাপে ধাপে বেতন বৃদ্ধি করে ২০১৩ সালে ৯ জানুয়ারি মহাজোট সরকার ২৬১৯৩টি বেসরকারি প্রাইমারি স্কুল জাতীয়করণ করে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সরকারি একই সিলেবাসে ইবতেদায়ি শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো ইবতেদায়ির ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অতীতে সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও বর্তমানে ৫ম শ্রেণি বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। অথচ মাস শেষে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ২২-৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পান। কিন্তু ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদেরকে জাতীয়করণ তো দূরের কথা, এমপিওভুক্ত করা হয়নি। তারপরও তারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো শিক্ষকতা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, ১৫১৯টি ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা সর্বসাকুল্যে প্রধান শিক্ষক ২৫০০ টাকা, সহকারি শিক্ষক ২৩০০ টাকা ভাতা পান। বাকি রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষকরা ৩৯ বছর যাবৎ বেতন ভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্টরা বারবার বেতন-ভাতা প্রদানের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এজন্য তারা ৭ দফা দাবি পেশ করেন।

দাবিগুলো হলো- বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো জাতীয়করণ করা। প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তিসহ সব সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা।মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত কোড বিহীন মাদ্রাসাগুলোকে অবিলম্বে কোড নাম্বারে অন্তর্ভুক্ত করা। প্রাথমিকের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের পিটিআই ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা। সব মাদ্রাসায় ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদ সৃষ্টি করা। মাদ্রাসাগুলোকে স্থায়ী রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করা ও মাদ্রাসাগুলোর ভৌত অবকাঠামো নিশ্চিত করা।

ট্যাগস

৩৯ বছর ধরে বেতন-ভাতা বঞ্চিত ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা

আপডেট সময় ০৬:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

দীর্ঘ ৩৯ বছর ধরে বেতন-ভাতা বঞ্চিত হয়েও শিক্ষার্থীদের পাঠদান অব্যাহত রেখেছেন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা। এতে তারা চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এজন্য সারা দেশের দেড় হাজার ইবতেদায়ি মাদ্রাসাকে জাতীয়করণের দাবি জানানো হয়েছে।

রোববার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোট আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন সংগঠনের চেয়ারম্যান কাজী মোখলেছুর রহমান।

কাজী ফয়েজুর রহমানের সভাপতিত্বে শিক্ষক সমাবেশ ও মানববন্ধন শেষে প্রধানমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নেতা বশির বিল্লাহ আতাহারী, সামছুল আলম, মাহমুদুল হাসান, আ. রহিম, মো. আলামিন, আ. হান্নান, খোরশেদ আলম, আ. কুদ্দুস, সওকত মাস্টার, ছাইফুল্লাহ হেলাল, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. নুরুল আমিন, আ. করিম ভুইয়া প্রমুখ।

মানববন্ধনে লিখিত বক্তৃতায় সংগঠনের মহাসচিব মো. তাজুল ইসলাম ফরাজী বলেন, ১৯৭৮ অর্ডিনেন্স ১৭ (২) ধারা মোতাবেক মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের শর্ত পূরণ সাপেক্ষে সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত হয়। এরপর থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধি মোতাবেক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। ১৯৯৪ সালে একই পরিপত্রে রেজিস্ট্রার বেসরকারি প্রাইমারি ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে বিগত সরকারের সময়ে ধাপে ধাপে বেতন বৃদ্ধি করে ২০১৩ সালে ৯ জানুয়ারি মহাজোট সরকার ২৬১৯৩টি বেসরকারি প্রাইমারি স্কুল জাতীয়করণ করে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সরকারি একই সিলেবাসে ইবতেদায়ি শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো ইবতেদায়ির ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অতীতে সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও বর্তমানে ৫ম শ্রেণি বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। অথচ মাস শেষে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ২২-৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পান। কিন্তু ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদেরকে জাতীয়করণ তো দূরের কথা, এমপিওভুক্ত করা হয়নি। তারপরও তারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো শিক্ষকতা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, ১৫১৯টি ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা সর্বসাকুল্যে প্রধান শিক্ষক ২৫০০ টাকা, সহকারি শিক্ষক ২৩০০ টাকা ভাতা পান। বাকি রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষকরা ৩৯ বছর যাবৎ বেতন ভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্টরা বারবার বেতন-ভাতা প্রদানের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এজন্য তারা ৭ দফা দাবি পেশ করেন।

দাবিগুলো হলো- বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো জাতীয়করণ করা। প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তিসহ সব সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা।মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত কোড বিহীন মাদ্রাসাগুলোকে অবিলম্বে কোড নাম্বারে অন্তর্ভুক্ত করা। প্রাথমিকের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের পিটিআই ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা। সব মাদ্রাসায় ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদ সৃষ্টি করা। মাদ্রাসাগুলোকে স্থায়ী রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করা ও মাদ্রাসাগুলোর ভৌত অবকাঠামো নিশ্চিত করা।