ঢাকা , শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাখাইনের বাজারে জান্তার গোলাবর্ষণ, ১২ জন নিহত হয়েছেন

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪
  • 144

মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ রাখাইনের একটি ব্যস্ত বাজারে সামরিক বাহিনীর গোলাবর্ষণে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে আহত হয়েছেন ৮০ জনেরও বেশি মানুষ।

শুক্রবার এই ঘটনা ঘটেছে বলে রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছে জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাখাইনের বেশ কিছু এলাকা বর্তমানে নিয়ন্ত্রণ করছে এই গোষ্ঠীটি।

আরাকান আর্মির হাইকমান্ড জানিয়েছে, রাখাইনের রাজধানী ও বন্দরনগরী সিত্তের কাছে একটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে সামরিক বাহিনী। শুক্রবার সেই জাহাজ থেকে সিত্তের নিকটবর্তী মিওমা বাজারকে লক্ষ্য করে একের পর এক গোলা নিক্ষেপ করা হয়। তার জেরেই ঘটেছে এসব হতাহতের ঘটনা।

ক্ষমতাসীন জান্তা অবশ্য উল্টো তথ্য দিয়েছে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল মায়াবতীতে একটি বিবৃতি প্রদান করেছে সামরিক সরকার। সেখানে বলা হয়েছে, মিওমা বাজারে গোলাবর্ষণ করেছে আরকান আর্মি। আরও বলা হয়েছে এই হামলায় নিহত ও আহতের সংখ্যা সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

দু’পক্ষের দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স। এর একটি বড় কারণ, গত কয়েক দিন ধরে সিত্তে এবং রাখাইনের অন্যান্য শহরে ইন্টারনেট এবং মোবাইল ডেটা প্রবাহ সীমিত করেছে জান্তা। ফলে রাখাইনের বর্তমান পরিস্থিতি সংক্রান্ত হালনাগাদ অধিকাংশ তথ্যই জানা যাচ্ছে না।

মিয়ানমারে সংঘাত-সহিংসতার চক্র শুরু হয়েছে ২০২১ সালে। ২০২০ সালের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ০১ ফেব্রুয়ারি গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং এই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেন।

সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করার পরপরই ফুঁসে উঠেছিল মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী জনতা। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু করেন তারা। কিন্তু মিয়ানমারের পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভ দমনে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা শুরু করার পর ২০২২ সালের দিকে গণতন্ত্রপন্থীদের একাংশ জান্তাবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোতে যোগ দেওয়া শুরু করে।

২০২৩ সালের অক্টোবরের শেষ দিক থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জোট পিপলস ডেমোক্রেটিক ফোর্স (পিডিএফ)। পিডিএমভুক্ত তিন গোষ্ঠী ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএ), আরাকান আর্মি (এএ) এবং তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (টিএনএলএ) এই সংঘাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এই তিন গোষ্ঠী একত্রে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স নামেও পরিচিত।

গত প্রায় চার মাসের সংঘাতে মিয়ানমারের অন্তত ৪০টি শহর এবং গুরুত্বপূর্ণ শান প্রদেশসহ অন্তত ৫টি প্রদেশ দখল করে নিয়েছে পিডিএফ। অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাখাইন প্রদেশ দখলের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে আরাকান আর্মি।

ট্যাগস

মার্সেল ফ্রিজ কিনে গাড়ি পেলেন ঢাকার আনিসুর রহমান

রাখাইনের বাজারে জান্তার গোলাবর্ষণ, ১২ জন নিহত হয়েছেন

আপডেট সময় ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪

মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ রাখাইনের একটি ব্যস্ত বাজারে সামরিক বাহিনীর গোলাবর্ষণে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে আহত হয়েছেন ৮০ জনেরও বেশি মানুষ।

শুক্রবার এই ঘটনা ঘটেছে বলে রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছে জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাখাইনের বেশ কিছু এলাকা বর্তমানে নিয়ন্ত্রণ করছে এই গোষ্ঠীটি।

আরাকান আর্মির হাইকমান্ড জানিয়েছে, রাখাইনের রাজধানী ও বন্দরনগরী সিত্তের কাছে একটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে সামরিক বাহিনী। শুক্রবার সেই জাহাজ থেকে সিত্তের নিকটবর্তী মিওমা বাজারকে লক্ষ্য করে একের পর এক গোলা নিক্ষেপ করা হয়। তার জেরেই ঘটেছে এসব হতাহতের ঘটনা।

ক্ষমতাসীন জান্তা অবশ্য উল্টো তথ্য দিয়েছে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল মায়াবতীতে একটি বিবৃতি প্রদান করেছে সামরিক সরকার। সেখানে বলা হয়েছে, মিওমা বাজারে গোলাবর্ষণ করেছে আরকান আর্মি। আরও বলা হয়েছে এই হামলায় নিহত ও আহতের সংখ্যা সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

দু’পক্ষের দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স। এর একটি বড় কারণ, গত কয়েক দিন ধরে সিত্তে এবং রাখাইনের অন্যান্য শহরে ইন্টারনেট এবং মোবাইল ডেটা প্রবাহ সীমিত করেছে জান্তা। ফলে রাখাইনের বর্তমান পরিস্থিতি সংক্রান্ত হালনাগাদ অধিকাংশ তথ্যই জানা যাচ্ছে না।

মিয়ানমারে সংঘাত-সহিংসতার চক্র শুরু হয়েছে ২০২১ সালে। ২০২০ সালের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ০১ ফেব্রুয়ারি গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং এই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেন।

সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করার পরপরই ফুঁসে উঠেছিল মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী জনতা। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু করেন তারা। কিন্তু মিয়ানমারের পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভ দমনে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা শুরু করার পর ২০২২ সালের দিকে গণতন্ত্রপন্থীদের একাংশ জান্তাবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোতে যোগ দেওয়া শুরু করে।

২০২৩ সালের অক্টোবরের শেষ দিক থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জোট পিপলস ডেমোক্রেটিক ফোর্স (পিডিএফ)। পিডিএমভুক্ত তিন গোষ্ঠী ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএ), আরাকান আর্মি (এএ) এবং তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (টিএনএলএ) এই সংঘাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এই তিন গোষ্ঠী একত্রে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স নামেও পরিচিত।

গত প্রায় চার মাসের সংঘাতে মিয়ানমারের অন্তত ৪০টি শহর এবং গুরুত্বপূর্ণ শান প্রদেশসহ অন্তত ৫টি প্রদেশ দখল করে নিয়েছে পিডিএফ। অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাখাইন প্রদেশ দখলের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে আরাকান আর্মি।