আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জনগণের কাছে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ঝাঁকুনি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। অথচ বিএনপি নিজেরাই রাজনৈতিকভাবে টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে। ব্যর্থ রাজনীতির ধারায় হাঁটায় হোঁচট আর ঝাঁকুনির প্রকোপে পর্যুদস্ত বিএনপি।
রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে দলের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়ার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দুরভিসন্ধিমূলক, কুরুচিপূর্ণ এবং বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের প্রতি জনগণের কোনো আগ্রহ নেই বরং বিএনপির প্রতি তাদের এক ধরনের ঘৃণা রয়েছে। যে কারণে জনগণ বার বার তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। বিএনপির নেতারা তাদের দুঃশাসনের দুর্বিষহ দিনগুলোতে জনগণকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায়।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অভূতপূর্ব উন্নয়ন-অগ্রগতি এবং ইতিবাচক পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশ ও দেশের জনগণকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। যা দেখে বিএনপির গাত্রদাহ হয়। বিভিন্ন সময় বিএনপি ও তার দোসরদের যৌথ উদ্যোগে প্রযোজিত ও পরিচালিত সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হওয়ায় তারা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে এবং দেশের জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে উসকানি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।
‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জনগণের নিকট রাষ্ট্রযন্ত্রকে ঝাঁকুনি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। অথচ বিএনপি নিজেরাই রাজনৈতিকভাবে টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে। ব্যর্থ রাজনীতির ধারায় হাঁটায় হোঁচট আর ঝাঁকুনির প্রকোপে পর্যুদস্ত বিএনপি। এই ঝাঁকুনি হলো বার বার পরাজয়ের ঝাঁকুনি। হতাশার গভীরে নিমজ্জিত হয়ে বিএনপির নেতাদের বোধশক্তি লোপ পেয়েছে। দিন দিন তারা দেশ, রাষ্ট্র ও জনগণকে শত্রুতে পরিণত করে চলেছে।’
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছে তাদের অর্জনগুলো নাকি বর্তমান সরকার ধ্বংস করেছে! অথচ অন্ধকারের অপশক্তি ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের প্রতিভূ সন্ত্রাসী দল বিএনপি দেশের অগ্রগতি ও জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে কী ভূমিকা রেখেছে? বরং দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করে হত্যা, গুম ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির প্রচলন করেছিল।
তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান। আসাংবিধানিক ও অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে মিলিটারি ডিক্টেটর জিয়াউর রহমান বিরোধী দল ও মত দমনে ইতিহাসে অনন্য নজির স্থাপন করেছিল। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশ পাঁচ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। বিএনপির আমলে রাষ্ট্রের কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে তো ওঠেই নি, বরং তারা ক্ষমতা কুক্ষিগত করার লক্ষ্যে সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের ইচ্ছামতো ব্যবহার করেছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে না দিয়ে সেগুলোকে যেন বিএনপির কার্যালয় ও হাওয়া ভবনের সঙ্গে অঙ্গীভূত করে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল। এগুলোই বিএনপির অর্জন, যা জনগণ বর্জন করে আসছে। জনগণ দ্বারা বর্জিত বিএনপি কখনোই ইতিবাচক কিছু অর্জন করতে পারবে না।
বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, দেশের জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে বরাবরের ন্যায় জননেত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ ও সুদৃঢ় নেতৃত্বে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। জনগণ চেয়েছে বলেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে এসেছে। দেশের স্বার্থ আর জনগণের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার। আর সরকার যে জনগণের সেবক বাংলাদেশে এই ধারণা প্রতিষ্ঠিত করেছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ দেশের জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক সংগঠন। তাই যে অপশক্তি দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে আওয়ামী লীগের প্রবল প্রতিপক্ষ বা শত্রু হিসেবে গণ্য হবে।