ভারতের বিপক্ষে একাদশে ছিলেন না বাংলাদেশ দলের সহ-অধিনায়ক তাসকিন আহমেদ। তখন এ নিয়ে কিছুটা সমালোচনা হয়েছিল। যদিও পরে সবাই বিষয়টা টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত বলে মেনে নিয়েছিল। কিন্তু এখন বেরিয়ে আসছে, মূলত ওইদিন তাসকিন আহমেদ ঘুমিয়েছিলেন। যে কারণে তাকে রেখেই টিম বাস হোটেল ছেড়ে যায়।
ঘটনাটা প্রকাশ হতেই তোলপাড়। যদিও তাসকিন এখন এলপিএল খেলতে চলে গেছেন শ্রীলঙ্কায় এবং সাবেক অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরার নেতৃত্বে আজ কলম্বো স্ট্রাইকার্সের হয়ে এলপিএলে প্রথম ম্যাচ খেলতেও নামবেন।
কিন্তু ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের দিন ঘুমিয়ে থাকার ফলে তিনি যে খেলতে পারেননি, তা নিয়ে দেশে তোলপাড়। তাসকিন এখন টক অব দ্য ক্রিকেট।
তাসকিনকে নিয়ে এ আলোচিত ও আলোড়িত ইস্যুতে মুখ খুলেছেন সাকিব আল হাসান। যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ ক্রিকেট (এমএলসি) খেলতে আজ বিকেলেই দেশ ছেড়েছেন সাকিব। তার আগে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপে তাসকিন ইস্যুতে সাকিবের কাছে মূল ঘটনা জানতে চাওয়া হয়।
তিনি বলেন, ‘আমি জানি না, এটা (দলের খবর বাইরে আসা) কী কারণে হয়েছে। হয়তো তাসকিনের না খেলার একটা ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে হয়েছে। কারণ সে তো দলের সহ-অধিনায়ক। বলতে গেলে অটোমেটিক চয়েজ। যখন সে না খেলবে, স্বাভাবিকভাবে মানুষের মনে প্রশ্ন আসে যে, সে কেন খেলছে না। এখন সেটার ব্যাখ্যা তো দিতে হবে। এখন সে কারণে এমন কথা বলা হয়েছে কি না, যে-ই বলেছে আমি সেটা তো বলতে পারব না।’
সাকিব বোঝালেন সাধারণত কেউ দেরিতে ঘুম থেকে উঠলে তার জন্য অপেক্ষা করা হয় না। টিম বাস ছেড়ে যায় এবং দেরিতে ওঠা ক্রিকেটার পরে অন্য যানবাহনে গিয়ে ড্রেসিং রুমে মিলিত হয় এবং খেলতে নামে।
সাকিবের কাছে ওই সময় সাংবাদিকরা জানতে চাইলেন, মূলত সেদিন ঘটনা কী ঘটেছিল? এ নিয়ে সাকিব বলেন, ‘আসলে যেটা হয়েছিল, দলের বাস তো একটা নির্দিষ্ট সময়ে ছাড়ে। আর এটা আসলে আমরা যারা ক্রিকেটার আছি, তাদের একটা নিয়মই। সাধারণত বাস কখনও অপেক্ষা করে না। কখনো না। যদি কেউ কখনো মিস করে তারা হয়তো পরের গাড়ি নিয়ে আসে কিংবা ম্যানেজারের গাড়ি থাকে কিংবা ট্যাক্সি থাকে।’
‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেহেতু একটা ডিফিকাল্ট জায়গা, ওখানে আসলে ট্রান্সপোর্টেশনের সুবিধা অনেক কঠিন। তো যখন তাসকিন আসলে মাঠে পৌঁছেছিল, অলমোস্ট টস হওয়ার ৫-১০ মিনিট আগে সম্ভবত। খুবই কাছাকাছি সময়ে আসল। স্বাভাবিকভাবে ওই সময়ে ওকে দলে নেওয়া টিম ম্যানেজমেন্টের জন্য কঠিনই ছিল। এরকম পরিস্থিতিতে একজন ক্রিকেটার কোন অবস্থায় থাকে, তার জন্যও একটু কঠিন।’
‘স্বাভাবিকভাবেই তাসকিন পুরো দলের কাছে ক্ষমা চেয়েছে এটা নিয়ে। দলের সবাই এটা খুব স্বাভাবিকভাবে নিয়েছে। মানুষের ক্ষেত্রে ভুল হতেই পারে। অনিচ্ছাকৃত ভুল সবারই হয়। ও সেটা স্বীকার করেছে। তারপরে ওটা ওখানেই শেষ হয়ে গেছে।’
সাংবাদিকদের পক্ষে জানতে চাওয়া হয়, টিম ম্যানেজমেন্টের তো দায়িত্ব ছিল তাকে নক করা। তেমন কী করা হয়নি? সাকিব বলেন, ‘এই জিনিসগুলো (ঘুম থেকে ডেকে তুলে আনা) ক্রিকেটে হয় না। ক্রিকেটের নিয়মে এগুলো নেই যে আপনি এরকম ঘরে থেকে পুরো দল অপেক্ষা করবে। দল কখনও অপেক্ষা করে না। এটা কোথাও হয় না। আমরা যখন বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকে খেলে এসেছি, এখনও মনে আছে আমাদের এমনও হয়েছে যে ক্রিকেটার পেছনে দৌড়াচ্ছে কিন্তু বাসের দরজা লেগে গেছে তাই বাস চলে গেছে। তাই বাস কখনও থামে না। একজনের জন্য পুরো দল থেমে থাকে না আসলে।’