ঢাকা , শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে তারকাদের স্ট্যাটাস

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৭:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০২৪
  • 66

সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এখন কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। শোবিজ তারকারা প্রথমদিকে এই নিয়ে চুপ ছিলেন। কিন্তু গতকাল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার পর সরব হয়েছেন অনেকে।

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে কোটা সংস্কারের পক্ষে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়েছেন শোবিজ অঙ্গনের একাধিক তারকা।

তাদের মধ্যে রয়েছে চিত্রনায়িকা পরীমণি, শবনম বুবলী, মিষ্টি জান্নাত, নায়ক নিলয় আলমগীর, সালমান মুক্তাদিরসহ আরো অনেকে।

চিত্রনায়িকা পরীমণি আহত এক শিক্ষার্থীর ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতায় আপনার জবান বন্ধ থাকলে আপনি মুনাফিক।’

মিষ্টি জান্নাত ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমার নানা-দাদা মুক্তিযোদ্ধা। আমার কোটা লাগে না। অনেক চাকরি আছে, কেন শুধু সরকারি চাকরিই করতে হবে। আর কিছু কোটা থাকলে সমস্যাটা কী? এত মারামারি কেন?’

অপর এক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘আপনি উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছেন, কিন্তু উচ্চ কণ্ঠে অন্যায়কে অন্যায় এবং ন্যায়কে ন্যায় বলার সাহস নেই, তাহলে আপনি একটা আবর্জনা। রাজাকার। বিশেষ দ্রষ্টব্য- আমি কোটা আন্দোলন নিয়ে কিছু বলিনি ভাই। আমার ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে বলছি।’

নায়িকা শবনম বুবলী লিখেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের রক্ত ঝরবে কেন?’

অভিনেতা নিলয় আলমগীর লিখেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আজকের ছাত্র ছাত্রীরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তারাই একটা সময় দেশের হাল ধরবে। এত এত ছাত্র-ছাত্রী ভুল দাবি করতে পারে না। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়েও বলছি, দয়া করে কোটা সংস্কার করে দিন। বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবারকে যে সম্মান এবং ভালোবাসা আপনি সব সময় দেখিয়েছেন, তার জন্য আমরা আপনার কাছে কৃতজ্ঞ। কিন্তু দেশের সাধারণ মানুষের কাছে মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবার এখন হাসির পাত্র। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানের জায়গাটা ঠিক রাখতে হলেও কোটা সংস্কার মেনে নিন। আন্দোলনরত ছাত্র ছাত্রীদের এই দুরবস্থা সহ্য করার মত না। পুরো জাতি আপনার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে।’

অভিনেতা সিয়াম আহমেদ। ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘আমার ক্যাম্পাস রক্তাক্ত কেন? শিক্ষার্থীদের রক্ত ঝরবে কেন?’

নির্মাতা সুমন আনোয়ার লেখেন, ‘দুর্দান্ত ঢাকা, উত্তেজিত দেশ। ঘুরে দাঁড়াবেই বাংলাদেশ।’

কনটেন্ট ক্রিয়েটর সালমান মুক্তাদির লিখেছেন, ‘এমন কোনো ছাত্র আছেন, যিনি হামলার শিকার হয়েছেন অথবা হলে ঢুকতে পারছেন না? আমি আপনাদের খেয়াল রাখব।… কারও যদি থাকার জায়গার প্রয়োজন হয় অথবা চিকিৎসাসেবার প্রয়োজন হয়, আমি আছি।… আমি সত্যিই ভেঙে পড়েছি, বিব্রত বোধ করছি।’

নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদ ফেসবুকে লেখেন, ‘একের পর এক ভুল। সব পক্ষেরই ভুল। যুক্তি, চিন্তা, স্ট্যাটিকস—সব ভুলে বসে আছি সবাই। হুজুগ আর ক্ষমতা লড়ছে। সংলাপ বসে আছে অসহায় হয়ে।’

নির্মাতা খিজির হায়াত খান লেখেন, ‘আমাদের আগামীরা আজকে দেশব্যাপী রাজপথে। ওদের স্লোগান নিয়ে অনেক প্রশ্ন কিন্তু কেন এই স্লোগান সেটা নিয়ে কোন কথা নাই। ন্যায্য অধিকারের আন্দোলন কাউকে রাজাকার বানায় না, বরং ওদের হাত ধরেই স্বাধিকার আসে। আমি ওদের পক্ষে দাঁড়ালাম।’

নির্মাতা রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত লেখেন, ‘এরা বুক ফুঁলিয়ে যতই “জয় বাংলা” বলে চেঁচাক, ১৯৭১-র মহান মুক্তিযুদ্ধের সাথে ২০২৪-র আজকের এই ছাত্রলীগের কোন ধরণের সম্পর্ক আছে বলে আমি মনে করি না। আজ এরা চেতনাহীন, পথভ্রষ্ট, অর্থলোভী পঙ্গপাল ছাড়া কিছুই নয়। আন্দোলনরত ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনায় না গিয়ে এই পঙ্গপাল বাহিনী লেলিয়ে দেওয়া কোন আদর্শের রাজনীতি আমি জানি না, তবে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি বা দর্শনের সাথে তার কোন মিল নেই, তা ঢের বলতে পারি। এই পঙ্গপাল পুষতে পুষতে কবে গোটা জাতিই চেতনাহীন, পথভ্রষ্ট, ও অর্থলোভী হয়ে যায়!’

চিরকুট ব্যান্ডের দলনেতা শারমিন সুলতানা সুমি লেখেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়, আমাদের প্রজন্ম, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সকলের নিরাপত্তা ও সুদিন; সদ্বিবেচনার সঙ্গে নিশ্চিত করার বিনীত অনুরোধ রইল।’ শিক্ষার্থীদের সমর্থন দিয়ে চিরকুটের ফেসবুক পেজ থেকেও পোস্ট করা হয়েছে।

ফেসবুক পোস্টে কোটা সংস্কারের এই আন্দোলনে ছাত্রদের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন নির্মাতা আশফাক নিপুন। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি ফেসবুকে এই প্রসঙ্গে শোবিজের মানুষদের নীরব থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নির্মাতা মিশুক মনি।

লেখক ও নির্দেশক মাসুম রেজা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘যারা একাত্তরে পরাজিত হলো তাদের পরিচয়ে নিজেদেরকে পরিচিত করছেন! কী দারুণ মেধাবী আপনারা! এত মেধা আপনাদের কোন প্রেতাত্মা সাপ্লাই করছে!’

অভিনেত্রী শামীমা তুষ্টি লিখেছেন, ‘যারা নিজেদের রাজাকার বলতেও দ্বিধা করে না, আবার তারাই সরকারি চাকরির জন্য কোটা চায়, তাদের হাতে দেশ গেলে কি হবে সেটাই ভাবছি।’

অভিনেতা রওনক হাসান লেখেন, ‘কোটা সংস্কার হতেই পারে।..কিন্তু হাজারো সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের এই আন্দোলনকে সুকৌশলে যেদিকে প্রবাহিত করা হলো তা দেখে এটাই স্পষ্ট এর মাস্টারমাইন্ড কারা।’

ট্যাগস

কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে তারকাদের স্ট্যাটাস

আপডেট সময় ০৭:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০২৪

সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এখন কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। শোবিজ তারকারা প্রথমদিকে এই নিয়ে চুপ ছিলেন। কিন্তু গতকাল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার পর সরব হয়েছেন অনেকে।

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে কোটা সংস্কারের পক্ষে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়েছেন শোবিজ অঙ্গনের একাধিক তারকা।

তাদের মধ্যে রয়েছে চিত্রনায়িকা পরীমণি, শবনম বুবলী, মিষ্টি জান্নাত, নায়ক নিলয় আলমগীর, সালমান মুক্তাদিরসহ আরো অনেকে।

চিত্রনায়িকা পরীমণি আহত এক শিক্ষার্থীর ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতায় আপনার জবান বন্ধ থাকলে আপনি মুনাফিক।’

মিষ্টি জান্নাত ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমার নানা-দাদা মুক্তিযোদ্ধা। আমার কোটা লাগে না। অনেক চাকরি আছে, কেন শুধু সরকারি চাকরিই করতে হবে। আর কিছু কোটা থাকলে সমস্যাটা কী? এত মারামারি কেন?’

অপর এক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘আপনি উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছেন, কিন্তু উচ্চ কণ্ঠে অন্যায়কে অন্যায় এবং ন্যায়কে ন্যায় বলার সাহস নেই, তাহলে আপনি একটা আবর্জনা। রাজাকার। বিশেষ দ্রষ্টব্য- আমি কোটা আন্দোলন নিয়ে কিছু বলিনি ভাই। আমার ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে বলছি।’

নায়িকা শবনম বুবলী লিখেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের রক্ত ঝরবে কেন?’

অভিনেতা নিলয় আলমগীর লিখেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আজকের ছাত্র ছাত্রীরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তারাই একটা সময় দেশের হাল ধরবে। এত এত ছাত্র-ছাত্রী ভুল দাবি করতে পারে না। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়েও বলছি, দয়া করে কোটা সংস্কার করে দিন। বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবারকে যে সম্মান এবং ভালোবাসা আপনি সব সময় দেখিয়েছেন, তার জন্য আমরা আপনার কাছে কৃতজ্ঞ। কিন্তু দেশের সাধারণ মানুষের কাছে মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবার এখন হাসির পাত্র। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানের জায়গাটা ঠিক রাখতে হলেও কোটা সংস্কার মেনে নিন। আন্দোলনরত ছাত্র ছাত্রীদের এই দুরবস্থা সহ্য করার মত না। পুরো জাতি আপনার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে।’

অভিনেতা সিয়াম আহমেদ। ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘আমার ক্যাম্পাস রক্তাক্ত কেন? শিক্ষার্থীদের রক্ত ঝরবে কেন?’

নির্মাতা সুমন আনোয়ার লেখেন, ‘দুর্দান্ত ঢাকা, উত্তেজিত দেশ। ঘুরে দাঁড়াবেই বাংলাদেশ।’

কনটেন্ট ক্রিয়েটর সালমান মুক্তাদির লিখেছেন, ‘এমন কোনো ছাত্র আছেন, যিনি হামলার শিকার হয়েছেন অথবা হলে ঢুকতে পারছেন না? আমি আপনাদের খেয়াল রাখব।… কারও যদি থাকার জায়গার প্রয়োজন হয় অথবা চিকিৎসাসেবার প্রয়োজন হয়, আমি আছি।… আমি সত্যিই ভেঙে পড়েছি, বিব্রত বোধ করছি।’

নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদ ফেসবুকে লেখেন, ‘একের পর এক ভুল। সব পক্ষেরই ভুল। যুক্তি, চিন্তা, স্ট্যাটিকস—সব ভুলে বসে আছি সবাই। হুজুগ আর ক্ষমতা লড়ছে। সংলাপ বসে আছে অসহায় হয়ে।’

নির্মাতা খিজির হায়াত খান লেখেন, ‘আমাদের আগামীরা আজকে দেশব্যাপী রাজপথে। ওদের স্লোগান নিয়ে অনেক প্রশ্ন কিন্তু কেন এই স্লোগান সেটা নিয়ে কোন কথা নাই। ন্যায্য অধিকারের আন্দোলন কাউকে রাজাকার বানায় না, বরং ওদের হাত ধরেই স্বাধিকার আসে। আমি ওদের পক্ষে দাঁড়ালাম।’

নির্মাতা রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত লেখেন, ‘এরা বুক ফুঁলিয়ে যতই “জয় বাংলা” বলে চেঁচাক, ১৯৭১-র মহান মুক্তিযুদ্ধের সাথে ২০২৪-র আজকের এই ছাত্রলীগের কোন ধরণের সম্পর্ক আছে বলে আমি মনে করি না। আজ এরা চেতনাহীন, পথভ্রষ্ট, অর্থলোভী পঙ্গপাল ছাড়া কিছুই নয়। আন্দোলনরত ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনায় না গিয়ে এই পঙ্গপাল বাহিনী লেলিয়ে দেওয়া কোন আদর্শের রাজনীতি আমি জানি না, তবে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি বা দর্শনের সাথে তার কোন মিল নেই, তা ঢের বলতে পারি। এই পঙ্গপাল পুষতে পুষতে কবে গোটা জাতিই চেতনাহীন, পথভ্রষ্ট, ও অর্থলোভী হয়ে যায়!’

চিরকুট ব্যান্ডের দলনেতা শারমিন সুলতানা সুমি লেখেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়, আমাদের প্রজন্ম, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সকলের নিরাপত্তা ও সুদিন; সদ্বিবেচনার সঙ্গে নিশ্চিত করার বিনীত অনুরোধ রইল।’ শিক্ষার্থীদের সমর্থন দিয়ে চিরকুটের ফেসবুক পেজ থেকেও পোস্ট করা হয়েছে।

ফেসবুক পোস্টে কোটা সংস্কারের এই আন্দোলনে ছাত্রদের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন নির্মাতা আশফাক নিপুন। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি ফেসবুকে এই প্রসঙ্গে শোবিজের মানুষদের নীরব থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নির্মাতা মিশুক মনি।

লেখক ও নির্দেশক মাসুম রেজা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘যারা একাত্তরে পরাজিত হলো তাদের পরিচয়ে নিজেদেরকে পরিচিত করছেন! কী দারুণ মেধাবী আপনারা! এত মেধা আপনাদের কোন প্রেতাত্মা সাপ্লাই করছে!’

অভিনেত্রী শামীমা তুষ্টি লিখেছেন, ‘যারা নিজেদের রাজাকার বলতেও দ্বিধা করে না, আবার তারাই সরকারি চাকরির জন্য কোটা চায়, তাদের হাতে দেশ গেলে কি হবে সেটাই ভাবছি।’

অভিনেতা রওনক হাসান লেখেন, ‘কোটা সংস্কার হতেই পারে।..কিন্তু হাজারো সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের এই আন্দোলনকে সুকৌশলে যেদিকে প্রবাহিত করা হলো তা দেখে এটাই স্পষ্ট এর মাস্টারমাইন্ড কারা।’