কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে রাবি ক্যাম্পাসে। এ অবস্থায় আতঙ্কে হল ছাড়ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, চলমান কোটা ইস্যু নিয়ে গতকাল সারাদেশে ছয়জন নিহতের খবরে জীবনের অনিশ্চয়তায় ভুগছেন তারা। বাড়ি থেকে অভিভাবকরা বারবার ফোন করে হল ছেড়ে বাড়ি চলে যেতে বলছেন। তাই আবাসিক হল ছেড়ে বাড়ি অথবা নিকটাত্মীয়ের বাসায় উঠবেন তারা।
রাবি শিক্ষার্থী শিক্ষার্থী রেজওয়ান বলেন, ক্যাম্পাসের অবস্থা ভালো না। বাড়ি থেকে বাবা-মা বারবার ফোন দিচ্ছে। তাই ক্যাম্পাস ছেড়ে বাড়ি চলে যাচ্ছি। পরিস্থিতি ভালো হলে তারপর হলে ফিরবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান হলের রামীম বলেন, কাল রাতে মেসে ছিলাম। সকালে হলে এসে জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছি। আতঙ্কে দিন কাটানোর চেয়ে বাসায় চলে যাই। বাড়ি থেকেও কল দিচ্ছে। দু’একদিনের মধ্যে সবকিছু স্বাভাবিক হলে ক্যাম্পাসে আসবো।
এদিকে মঙ্গলবার সারাদেশের মতো রাবিতেও সহিংসতা শুরু হলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুর ১২টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ প্রদান করা হয়।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শহীদ শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. একরামুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আমরা চাই না আমাদের কোনো শিক্ষার্থীর ক্ষয়ক্ষতি হোক। সবার নিরাপত্তার স্বার্থে হল বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে ইউজিসির সহকারী সচিব কাজী মো. ইসমাইল হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় দেশের সকল পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত মেডিকেল, টেক্সটাইল, ইঞ্জিনিয়ারিং ও অন্যান্য কলেজসহ সকল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে আবাসিক হল ত্যাগের নির্দেশনা দিয়ে নিরাপদ আবাসস্থলে অবস্থানের নির্দেশনা প্রদানের নিমিত্ত নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো হলো।
অপরদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রাতে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বহিরাগতদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ ঠেকাতে পরিচয়পত্র যাচাইসহ পুলিশকে তৎপর থাকতে দেখা গেছে।