ঢাকা , রবিবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোপা জয়ী আর্জেন্টিনার বিপক্ষে বর্ণবাদের অভিযোগ ফ্রান্সের

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০১:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪
  • 62

২০২২ বিশ্বকাপ ফাইনালের রেশ এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি আর্জেন্টিনা! সেবারও দেখা গেছে বিশ্বকাপ ফাইনাল জয়ের পর ফ্রান্স ফুটবলারদের বিশেষ করে কিলিয়ান এমবাপেকে নিয়ে আর্জেন্টাইন ফুটবলারদের নানা ধরনের আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি এবং মন্তব্য করতে।

এর রেশ রয়ে গেলো ২ বছর পরও। এবার কোপা আমেরিকায় ফ্রান্স ছিল না। তবুও কোপা জয়ের পর ফ্রান্স ফুটবলারদের উদ্দেশ্য করে বর্ণবাদী আচরণ করছেন আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা। দলটির এক ফুটবলারের প্রচার হওয়া ভিডিও‘য় এমন দৃশ্যই দেখা গেছে। ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশন এ নিয়ে ফিফার কাছে বর্ণবাদী আচরণের বিষয়ে অভিযোগ জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বিশ্বজয়ীদের এই `বর্ণবাদী কু-কীর্তি’ ধরা পড়েছে চেলসি তারকা এনজো ফার্নান্দেজের করা লাইভ ভিডিওয়। কোপা জয়ের পর স্টেডিয়াম থেকে হোটেলে ফেরার বাসে আর্জেন্টিনার ফুটবলারদের উৎসবের ভিডিও লাইভ করেন এনজো ফার্নান্দেজ। সেখানে গানেরছলে ফ্রান্স ফুটবলারদের নিয়ে বর্ণবাদী মন্তব্য করতে শোনা যায় আর্জেন্টিনা ফুটবলারদের।

২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে আর্জেন্টিনা এবং ফ্রান্সের সমর্থকদের মধ্যে রেষারেষি, বাগ্‌যুদ্ধ পৌঁছেছিল চরম পর্যায়। সে সময় দু’দেশের সমর্থকদের একাশের বিরুদ্ধে উঠেছিল বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করার অভিযোগ। বিশ্বকাপের পর এমবাপেকে নিয়ে বর্ণবাদী গান তৈরি করেছিলেন আর্জেন্টিনার সমর্থকরা। এবার সেই একই অভিযোগে অভিযুক্ত হলেন মেসি এবং তার সতীর্থরা।

কলম্বিয়াকে হারিয়ে রেকর্ড ১৬ বার কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপ জয়ের পর কোপার খেতাব ধরে রাখতে পারায় উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভাঙে আর্জেন্টিনার ফুটবলারদের।

স্টেডিয়ামের পর হোটেলের ফেরার বাসেও উৎসবে মেতেছিলেন তারা। উৎসবের সেই মূহূর্তে মোবাইলের ক্যামেরায় বন্দি করছিলেন ফার্নান্দেজ। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ করেন তিনি।

তাতে দেখা যাচ্ছে, আর্জেন্টিনা ফুটবলাররা স্প্যানিশ ভাষায় একটি গানটি গাইছেন। গানের পর হঠাৎ কয়েক জনের গলায় শোনা যায় বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য। দুই বছর আগে বিশ্বকাপের পর সমর্থকদের তৈরি করা সেই বর্ণবিদ্বেষী গানটা গাইতে শুরু করেন তারা।

যার অর্থ, ফ্রান্সের জাতীয় দলের সব ফুটবলারই আসলে অ্যাঙ্গোলার। তাদের বাবা-মায়েরা আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন। কেউ ফরাসি নন। এরপর কেউ একজনকে বলতে শোনা গেছে, ভিডিও বন্ধ করো। ফার্নান্দেজও সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দেন। গানের বাকি অংশ শোনা যায়নি।

ভিডিওর শেষ দিকের অংশ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সমর্থকদের তৈরি করা সে গানে এমবাপের বান্ধবীকে নিয়েও বাজে মন্তব্য রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘…তারা ফ্রান্সে খেলে, কিন্তু তারা সবাই অ্যাঙ্গোলা থেকে আসা, তারা দৌড়ায় ভালো, লিঙ্গান্তরিত মানুষের সঙ্গে শোয়, তাদের মা নাইজেরিয়ান, তাদের বাবা ক্যামেরুনিয়ান, কিন্তু পাসপোর্টে বলা- ফ্রেঞ্চ।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্বজয়ীদের তীব্র নিন্দা করেছেন ফুটবলপ্রেমীরা একাংশ। ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশন এ নিয়ে যারপরনাই অসন্তুষ্ট।

বার্তা সংস্থা এএফপিকে ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের (এফএফএফ) ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, এ ব্যাপারে তারা আর্জেন্টাইন ফুটবল ফেডারেশনকে চিঠি দেবে। ফিফাকেও ব্যাপারটি জানানো হবে। দুই বছর আগেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বর্ণবাদী মন্তব্য নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিল ফ্রান্সের ফুটবল ফেডারেশন।

আর্জেন্টিনা দল বা ফুটবল ফেডারেশন এ নিয়ে এখনও মুখ খোলেনি।

ট্যাগস

কোপা জয়ী আর্জেন্টিনার বিপক্ষে বর্ণবাদের অভিযোগ ফ্রান্সের

আপডেট সময় ০১:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪

২০২২ বিশ্বকাপ ফাইনালের রেশ এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি আর্জেন্টিনা! সেবারও দেখা গেছে বিশ্বকাপ ফাইনাল জয়ের পর ফ্রান্স ফুটবলারদের বিশেষ করে কিলিয়ান এমবাপেকে নিয়ে আর্জেন্টাইন ফুটবলারদের নানা ধরনের আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি এবং মন্তব্য করতে।

এর রেশ রয়ে গেলো ২ বছর পরও। এবার কোপা আমেরিকায় ফ্রান্স ছিল না। তবুও কোপা জয়ের পর ফ্রান্স ফুটবলারদের উদ্দেশ্য করে বর্ণবাদী আচরণ করছেন আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা। দলটির এক ফুটবলারের প্রচার হওয়া ভিডিও‘য় এমন দৃশ্যই দেখা গেছে। ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশন এ নিয়ে ফিফার কাছে বর্ণবাদী আচরণের বিষয়ে অভিযোগ জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বিশ্বজয়ীদের এই `বর্ণবাদী কু-কীর্তি’ ধরা পড়েছে চেলসি তারকা এনজো ফার্নান্দেজের করা লাইভ ভিডিওয়। কোপা জয়ের পর স্টেডিয়াম থেকে হোটেলে ফেরার বাসে আর্জেন্টিনার ফুটবলারদের উৎসবের ভিডিও লাইভ করেন এনজো ফার্নান্দেজ। সেখানে গানেরছলে ফ্রান্স ফুটবলারদের নিয়ে বর্ণবাদী মন্তব্য করতে শোনা যায় আর্জেন্টিনা ফুটবলারদের।

২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে আর্জেন্টিনা এবং ফ্রান্সের সমর্থকদের মধ্যে রেষারেষি, বাগ্‌যুদ্ধ পৌঁছেছিল চরম পর্যায়। সে সময় দু’দেশের সমর্থকদের একাশের বিরুদ্ধে উঠেছিল বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করার অভিযোগ। বিশ্বকাপের পর এমবাপেকে নিয়ে বর্ণবাদী গান তৈরি করেছিলেন আর্জেন্টিনার সমর্থকরা। এবার সেই একই অভিযোগে অভিযুক্ত হলেন মেসি এবং তার সতীর্থরা।

কলম্বিয়াকে হারিয়ে রেকর্ড ১৬ বার কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপ জয়ের পর কোপার খেতাব ধরে রাখতে পারায় উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভাঙে আর্জেন্টিনার ফুটবলারদের।

স্টেডিয়ামের পর হোটেলের ফেরার বাসেও উৎসবে মেতেছিলেন তারা। উৎসবের সেই মূহূর্তে মোবাইলের ক্যামেরায় বন্দি করছিলেন ফার্নান্দেজ। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ করেন তিনি।

তাতে দেখা যাচ্ছে, আর্জেন্টিনা ফুটবলাররা স্প্যানিশ ভাষায় একটি গানটি গাইছেন। গানের পর হঠাৎ কয়েক জনের গলায় শোনা যায় বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য। দুই বছর আগে বিশ্বকাপের পর সমর্থকদের তৈরি করা সেই বর্ণবিদ্বেষী গানটা গাইতে শুরু করেন তারা।

যার অর্থ, ফ্রান্সের জাতীয় দলের সব ফুটবলারই আসলে অ্যাঙ্গোলার। তাদের বাবা-মায়েরা আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন। কেউ ফরাসি নন। এরপর কেউ একজনকে বলতে শোনা গেছে, ভিডিও বন্ধ করো। ফার্নান্দেজও সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দেন। গানের বাকি অংশ শোনা যায়নি।

ভিডিওর শেষ দিকের অংশ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সমর্থকদের তৈরি করা সে গানে এমবাপের বান্ধবীকে নিয়েও বাজে মন্তব্য রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘…তারা ফ্রান্সে খেলে, কিন্তু তারা সবাই অ্যাঙ্গোলা থেকে আসা, তারা দৌড়ায় ভালো, লিঙ্গান্তরিত মানুষের সঙ্গে শোয়, তাদের মা নাইজেরিয়ান, তাদের বাবা ক্যামেরুনিয়ান, কিন্তু পাসপোর্টে বলা- ফ্রেঞ্চ।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্বজয়ীদের তীব্র নিন্দা করেছেন ফুটবলপ্রেমীরা একাংশ। ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশন এ নিয়ে যারপরনাই অসন্তুষ্ট।

বার্তা সংস্থা এএফপিকে ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের (এফএফএফ) ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, এ ব্যাপারে তারা আর্জেন্টাইন ফুটবল ফেডারেশনকে চিঠি দেবে। ফিফাকেও ব্যাপারটি জানানো হবে। দুই বছর আগেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বর্ণবাদী মন্তব্য নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিল ফ্রান্সের ফুটবল ফেডারেশন।

আর্জেন্টিনা দল বা ফুটবল ফেডারেশন এ নিয়ে এখনও মুখ খোলেনি।