‘আমার বাবা নাই, আমার বাবা শহীদ হয়েছেন। আমি শহীদ ফয়সালের গর্বিত পিতা। তিনটি গুলি আমার বাবার দেহটাকে ঝাঁঝরা করে দেয়। তাকে যারা মেরেছে আমি বেঁচে থাকতে তাদের শাস্তি দেখতে চাই।’ কোটাবিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামে পুলিশের গুলিতে নিহত মুহাম্মদ ফয়সাল আহমেদ শান্তর বাবা জাকির হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন।
শান্তর মরদেহ বুধবার দুপুর ১২টায় বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের মানিককাঠি গ্রামে নেওয়া হয়।
জাকির হোসেন বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘তার ছেলে প্রাইভেট পড়ে আসছিল। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি ছোড়ে।
ওই গুলি আমার ছেলের গায়ে লাগে। তিনটি গুলি আমার বাবার দেহটাকে ঝাঁঝরা করে দেয়। আমার একটা মাত্র ছেলে যখন চলে গেল, তখন আমি এই আন্দোলনকারীদের সমর্থন দিলাম।’
শান্তর লাশবাহী গাড়ির সঙ্গে তার বাবা-মা ও শিক্ষক ছিলেন।
পুলিশ প্রটোকল দিয়ে লাশবাহী গাড়ি নিয়ে আসা হয়। গ্রামের বাড়িতে শান্তর মরদেহ পৌঁছার পর শোকের মাতম দেখা যায়। মরদেহ নিয়ে কান্নায় পুরো এলাকার আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে যায়। শান্তর প্রতিবেশী ও স্বজনরা বাড়িতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
পুলিশের গুলিতে নিহত শান্ত চট্টগ্রামের বাকলিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করে সেখানকার এমইসি কলেজে হিসাববিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বর্ষে ভর্তি হন।
শান্ত রহমতপুর এলাকার বাসিন্দা জাকির হোসেনের ছেলে। তার বাবা জাহাজে চাকরি করেন। শান্তর এক বোন রয়েছে।
নিহত মুহাম্মদ ফয়সাল আহমেদ শান্তর জানাজা রহমতপুর মানিককাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জোহর নামাজ শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।