ঢাকা , শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ কমার আশঙ্কা

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৫:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ জুলাই ২০২৪
  • 22

দেশব্যাপী কারফিউ জারি ও পাঁচ দিন ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় পুঁজিবাজারে ব্যাপকহারে বিদেশি বিনিয়োগ কমতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতিতে অন্যান্য খাতের মতো পুঁজিবাজারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।

ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কাজ করে যাবে। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম অর্থসূচককে বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে পুঁজিবাজারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিএসইসি ও স্টেকহোল্ডাররা মিলে একসঙ্গে কাজ করবো। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে প্রচারণা চালাবো, যাতে করে বিদেশিরা আসতে আগ্রহী হয়।

এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতি ও কারফিউ জারির কারণে গত সপ্তাহে তিনদিন (রোববার, সোমবার ও মঙ্গলবার) সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে বুধবার থেকে সীমিত পরিসরে চালু হয় ব্যাংকিং কার্যক্রম। ওই সপ্তাহের দুই দিন ব্যাংক খোলা ছিল ৪ ঘণ্টা। তখন ব্যাংকের সঙ্গে মিল রেখে দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছিলো সকাল ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত।

এদিকে আজ রোববার (২৮ জুলাই) থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনদিন ব্যাংকগুলোর লেনদেন চলবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। আর লেনদেন পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যাংক খোলা থাকবে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। এই তিনদিন পুঁজিবাজারে লেনদেন চলবে সকাল ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ আগেই কমে গেছে। বর্তমান এই অস্থিরতার মধ্যে বিদেশিরা আর বিনিয়োগ নিয়ে আসতে চাইবে না। পুরো অর্থনীতি খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে পুঁজিবাজার থেকে ভালো কিছু আশা করা ঠিক হবে না বলেও মনে করেন তিনি।

এদিকে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে মূল্যসূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। পাশপাশি গত কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে লেনদেন। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ২৯ দশমিক ৯২ পয়েন্ট কমেছে। বর্তমানে সূচকটি অবস্থান করছে ৫ হাজার ৩৮৩ পয়েন্টে। আজ ডিএসইতে ৪৮৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিলো ৪৯৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।

এর আগে গত সপ্তাহের বুধবার ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ৯৬ পয়েন্ট পতন হয়েছিলো। এরপরের কার্যদিবস অর্থ বৃহস্পতিবারে সূচকটির সামান্য উত্থান হয়েছিলো। এদিন আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেনও কিছুটা বেড়েছিলো।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, চলমান অস্থিরতার কারণে কেবল দেশের অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, এতে দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীদের আস্থার জায়গায় সংকট তৈরি হবে। তাই এখন অগ্রাধিকার হওয়া উচিত পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা। কারণ এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের প্রতি আস্থা হারাবেন। পরে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা খুব কঠিন হবে।

টানা ১০ দিন পর মোবাইল ইন্টারনেট চালু হলেও দেশে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত চারটি সামাজিক মাধ্যম এখনই চালু হচ্ছে না। মেটার প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ এবং বাইটড্যান্সের প্ল্যাটফর্ম টিকটক বন্ধ থাকবে।

এদিকে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। মোবাইলে লেনদেনকে আরও সহজ ও জনপ্রিয় করতে ডিএসই এই অ্যাপ চালু করেছিলো। তবে দেশে চলমান অস্থিরতায় এসব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।

ট্যাগস

পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ কমার আশঙ্কা

আপডেট সময় ০৫:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ জুলাই ২০২৪

দেশব্যাপী কারফিউ জারি ও পাঁচ দিন ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় পুঁজিবাজারে ব্যাপকহারে বিদেশি বিনিয়োগ কমতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতিতে অন্যান্য খাতের মতো পুঁজিবাজারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।

ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কাজ করে যাবে। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম অর্থসূচককে বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে পুঁজিবাজারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিএসইসি ও স্টেকহোল্ডাররা মিলে একসঙ্গে কাজ করবো। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে প্রচারণা চালাবো, যাতে করে বিদেশিরা আসতে আগ্রহী হয়।

এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতি ও কারফিউ জারির কারণে গত সপ্তাহে তিনদিন (রোববার, সোমবার ও মঙ্গলবার) সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে বুধবার থেকে সীমিত পরিসরে চালু হয় ব্যাংকিং কার্যক্রম। ওই সপ্তাহের দুই দিন ব্যাংক খোলা ছিল ৪ ঘণ্টা। তখন ব্যাংকের সঙ্গে মিল রেখে দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছিলো সকাল ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত।

এদিকে আজ রোববার (২৮ জুলাই) থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনদিন ব্যাংকগুলোর লেনদেন চলবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। আর লেনদেন পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যাংক খোলা থাকবে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। এই তিনদিন পুঁজিবাজারে লেনদেন চলবে সকাল ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ আগেই কমে গেছে। বর্তমান এই অস্থিরতার মধ্যে বিদেশিরা আর বিনিয়োগ নিয়ে আসতে চাইবে না। পুরো অর্থনীতি খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে পুঁজিবাজার থেকে ভালো কিছু আশা করা ঠিক হবে না বলেও মনে করেন তিনি।

এদিকে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে মূল্যসূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। পাশপাশি গত কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে লেনদেন। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ২৯ দশমিক ৯২ পয়েন্ট কমেছে। বর্তমানে সূচকটি অবস্থান করছে ৫ হাজার ৩৮৩ পয়েন্টে। আজ ডিএসইতে ৪৮৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিলো ৪৯৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।

এর আগে গত সপ্তাহের বুধবার ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ৯৬ পয়েন্ট পতন হয়েছিলো। এরপরের কার্যদিবস অর্থ বৃহস্পতিবারে সূচকটির সামান্য উত্থান হয়েছিলো। এদিন আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেনও কিছুটা বেড়েছিলো।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, চলমান অস্থিরতার কারণে কেবল দেশের অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, এতে দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীদের আস্থার জায়গায় সংকট তৈরি হবে। তাই এখন অগ্রাধিকার হওয়া উচিত পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা। কারণ এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের প্রতি আস্থা হারাবেন। পরে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা খুব কঠিন হবে।

টানা ১০ দিন পর মোবাইল ইন্টারনেট চালু হলেও দেশে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত চারটি সামাজিক মাধ্যম এখনই চালু হচ্ছে না। মেটার প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ এবং বাইটড্যান্সের প্ল্যাটফর্ম টিকটক বন্ধ থাকবে।

এদিকে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। মোবাইলে লেনদেনকে আরও সহজ ও জনপ্রিয় করতে ডিএসই এই অ্যাপ চালু করেছিলো। তবে দেশে চলমান অস্থিরতায় এসব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।