ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছাত্ররা ট্রাফিক পুলিশের চেয়েও কড়া: অটোরিকশাচালক

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ১০:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ অগাস্ট ২০২৪
  • 31

নিয়ম ভেঙে উল্টো পথে যাচ্ছিলেন এক রিকশাচালক। সামনে দাঁড়িয়ে গেলেন এক তরুণ। শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় ওই চালককে বললেন, ‘সরি মামা, আপনাকে ইউটার্ন নিয়ে ঘুরে আসতে হবে।’ পরে ওই চালক নিয়ম মানতে বাধ্য হন।

বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দুপুরে কুমিল্লা নগরীর কান্দিপাড় গোলচত্বর এলাকায় দেখা যায় এমন চিত্র। সেখানে ওই তরুণের মতো আরও ২০-২৫ জন শিক্ষার্থীকে সড়কে শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে দেখা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, ট্রাফিক পুলিশের অনুপস্থিতিতে সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা সড়কের মোড়ে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। কেউ সিগন্যাল অমান্য করলেই বাধা দিচ্ছেন তাদের। এতে করে রাস্তায় বড় ধরনের কোনো যানজট হচ্ছে না। চালকদের মধ্যে কারো ট্রাফিক রুলস ভঙ্গ করার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে কঠোর ছাত্ররা। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে রাস্তা পারাপারে সহায়তা করছেন তারা।

এছাড়া বাইক চালকদের হেলমেট ব্যবহারে সচেতন করছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে সড়কে ফিরেছে শৃঙ্খলা, মুক্ত হয়েছে যানজট। তাদের কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন রাস্তায় চলাচলকারী সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন, ট্রাফিক পুলিশও যদি রুলস মানার ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় না দেয়, সবাই আইন মানতে বাধ্য হবেন।

ফয়সাল আহমেদ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, অনেক চালক ট্রাফিক রুলস সম্পর্কে জানেন না। তাদের সে বিষয়ে সচেতন করছি। কুমিল্লার মানুষের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি আমরা। অনেকেই স্বেচ্ছায় আমাদের জন্য পানি ও খাবার উপহার দিচ্ছেন। আশা করছি এ নগরীর সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে।

নিয়ম ভেঙে উল্টো পথে যাচ্ছিলেন এক রিকশাচালক। সামনে দাঁড়িয়ে গেলেন এক তরুণ। শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় ওই চালককে বললেন, ‘সরি মামা, আপনাকে ইউটার্ন নিয়ে ঘুরে

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বলেন, কুমিল্লার ইতিহাসে কখনই ট্রাফিক রুলস মানা হয় নাই। আজ ছাত্র সমাজ সেটি দেখিয়েছে। আমরা চাই এটি অব্যাহত থাকুক। নগরবাসী এর ফল সুফল ভোগ করুক।

রূপসী বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী ও স্কাউটস সদস্য মো. আনিছুর রহমান বলেন, আমরা ট্রাফিক পুলিশ থেকে ভালো করছি। এখন চালকদের পুলিশকে ঘুস দিতে হচ্ছে না। সড়কে কাউকে চাঁদাও দিতে হচ্ছে না। গত তিনদিনে নগরবাসীকে যানজট মুক্ত ও শৃঙ্খলার মধ্যে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। প্রত্যাশা করছি সড়কে আগামীতে এ শৃঙ্খলা অব্যাহত থাকবে।

শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব পালন প্রসঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক আবুল কালাম বলেন, ছাত্ররা ট্রাফিক পুলিশের থেকেও কড়া। পুলিশকে কিছু বললে শুনতো, কিন্তু এরা শোনে না। যা নিয়ম তাই মানতে হবে। যার কারণে সবাই বাধ্য হয়ে আইন মোতাবেক সড়কে চলাচল করছে। গত ২-৩ দিনে শহরে যানজটের ভোগান্তি নেই। এইভাবে চললে চালক-যাত্রী সবার জন্যই ভালো।

রাকিব নামে এক পথচারী বলেন, গত একযুগ ধরে কুমিল্লার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় আমরা যা দেখিনি, গত তিনদিনে ছাত্র-সমাজ সেটি দেখিয়েছে। সড়কে ফিরিয়ে এনেছে শৃঙ্খলা। দ্বিতীয় স্বাধীনতায় তাদের পেয়ে স্যালুট ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

মো. জামিল নামে এক যাত্রী বলেন, ছাত্ররা যা দেখিয়েছি তা প্রশংসনীয়। ট্রাফিকরা যা পারে নাই, তারা সেটি করে দেখিয়েছে। ভবিষ্যতেও সড়কে এ শৃঙ্খলা বজায় থাকুক এটা আমাদের প্রত্যাশা।

ট্যাগস

ছাত্ররা ট্রাফিক পুলিশের চেয়েও কড়া: অটোরিকশাচালক

আপডেট সময় ১০:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ অগাস্ট ২০২৪

নিয়ম ভেঙে উল্টো পথে যাচ্ছিলেন এক রিকশাচালক। সামনে দাঁড়িয়ে গেলেন এক তরুণ। শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় ওই চালককে বললেন, ‘সরি মামা, আপনাকে ইউটার্ন নিয়ে ঘুরে আসতে হবে।’ পরে ওই চালক নিয়ম মানতে বাধ্য হন।

বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দুপুরে কুমিল্লা নগরীর কান্দিপাড় গোলচত্বর এলাকায় দেখা যায় এমন চিত্র। সেখানে ওই তরুণের মতো আরও ২০-২৫ জন শিক্ষার্থীকে সড়কে শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে দেখা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, ট্রাফিক পুলিশের অনুপস্থিতিতে সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা সড়কের মোড়ে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। কেউ সিগন্যাল অমান্য করলেই বাধা দিচ্ছেন তাদের। এতে করে রাস্তায় বড় ধরনের কোনো যানজট হচ্ছে না। চালকদের মধ্যে কারো ট্রাফিক রুলস ভঙ্গ করার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে কঠোর ছাত্ররা। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে রাস্তা পারাপারে সহায়তা করছেন তারা।

এছাড়া বাইক চালকদের হেলমেট ব্যবহারে সচেতন করছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে সড়কে ফিরেছে শৃঙ্খলা, মুক্ত হয়েছে যানজট। তাদের কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন রাস্তায় চলাচলকারী সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন, ট্রাফিক পুলিশও যদি রুলস মানার ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় না দেয়, সবাই আইন মানতে বাধ্য হবেন।

ফয়সাল আহমেদ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, অনেক চালক ট্রাফিক রুলস সম্পর্কে জানেন না। তাদের সে বিষয়ে সচেতন করছি। কুমিল্লার মানুষের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি আমরা। অনেকেই স্বেচ্ছায় আমাদের জন্য পানি ও খাবার উপহার দিচ্ছেন। আশা করছি এ নগরীর সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে।

নিয়ম ভেঙে উল্টো পথে যাচ্ছিলেন এক রিকশাচালক। সামনে দাঁড়িয়ে গেলেন এক তরুণ। শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় ওই চালককে বললেন, ‘সরি মামা, আপনাকে ইউটার্ন নিয়ে ঘুরে

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বলেন, কুমিল্লার ইতিহাসে কখনই ট্রাফিক রুলস মানা হয় নাই। আজ ছাত্র সমাজ সেটি দেখিয়েছে। আমরা চাই এটি অব্যাহত থাকুক। নগরবাসী এর ফল সুফল ভোগ করুক।

রূপসী বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী ও স্কাউটস সদস্য মো. আনিছুর রহমান বলেন, আমরা ট্রাফিক পুলিশ থেকে ভালো করছি। এখন চালকদের পুলিশকে ঘুস দিতে হচ্ছে না। সড়কে কাউকে চাঁদাও দিতে হচ্ছে না। গত তিনদিনে নগরবাসীকে যানজট মুক্ত ও শৃঙ্খলার মধ্যে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। প্রত্যাশা করছি সড়কে আগামীতে এ শৃঙ্খলা অব্যাহত থাকবে।

শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব পালন প্রসঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক আবুল কালাম বলেন, ছাত্ররা ট্রাফিক পুলিশের থেকেও কড়া। পুলিশকে কিছু বললে শুনতো, কিন্তু এরা শোনে না। যা নিয়ম তাই মানতে হবে। যার কারণে সবাই বাধ্য হয়ে আইন মোতাবেক সড়কে চলাচল করছে। গত ২-৩ দিনে শহরে যানজটের ভোগান্তি নেই। এইভাবে চললে চালক-যাত্রী সবার জন্যই ভালো।

রাকিব নামে এক পথচারী বলেন, গত একযুগ ধরে কুমিল্লার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় আমরা যা দেখিনি, গত তিনদিনে ছাত্র-সমাজ সেটি দেখিয়েছে। সড়কে ফিরিয়ে এনেছে শৃঙ্খলা। দ্বিতীয় স্বাধীনতায় তাদের পেয়ে স্যালুট ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

মো. জামিল নামে এক যাত্রী বলেন, ছাত্ররা যা দেখিয়েছি তা প্রশংসনীয়। ট্রাফিকরা যা পারে নাই, তারা সেটি করে দেখিয়েছে। ভবিষ্যতেও সড়কে এ শৃঙ্খলা বজায় থাকুক এটা আমাদের প্রত্যাশা।