ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আইন উপদেষ্টা

জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০১:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪
  • 16

অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

বুধবার (১৪ আগস্ট) সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গণহত্যা ও গুলিবর্ষণের ঘটনার বিচারের জন্য এরইমধ্যে কিছু মামলা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কিন্তু রাজপথে থাকা ছাত্র সংগঠন, মানবাধিকার সংগঠনসহ অনেকে দাবি করছে যে এটিকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসাবে খতিয়ে দেখা যায় কি না। আমরা দেখেছি, জুলাই গণহত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অধীনে বিচার করা সম্ভব।

জাতিসংঘের অধীনে তদন্ত টিম কাজ করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ যারা যারা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

এই উপদেষ্টা বলেন, আপনাদেরকে আমরা বলতে চাই, ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন আছে। এটা পরে ২০০৯ ও ২০১৩-তে সংশোধন হয়েছে। এই আইনে আমরা জুলাই গণহত্যা, জুলাই গণহত্যা বলতে আমি আগস্ট মাসের প্রথম পাঁচ দিনের হত্যার কথা বলছি, এর জন্য দায়ী যে ব্যক্তিবর্গ আছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ওনাদের বিচারের জন্য আমরা ইতিমধ্যে একটা ছোটখাট গবেষণার মতো করেছি। আমরা গবেষণা করে দেখেছি, এই আইনের অধীনে এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা যারা বিভিন্ন আদেশ দিয়েছেন, সহযোগিতা করেছেন, তাদের সকলকে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব।

আসিফ নজরুল বলেন, আপনারা জানেন এখানে (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল) একটা তদন্ত সংস্থা রয়েছে, একটা প্রসিকিউশন টিম আছে। ‌এগুলোকে আমরা রি-অর্গানাইজ করার চেষ্টা করছি। আদালতটা একটু পরে করবো।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে তদন্ত করার চেষ্টা করা হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, জাতিসংঘ থেকে আমাদের বারবার সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বিচারের ক্ষেত্রে আমরা সত্যিকারের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের টিম জাতিসংঘের সর্বাত্মক তত্ত্বাবধানে কাজ করবে। সেই লক্ষ্যে সমস্ত উদ্যোগ গ্রহণ করবো। ইতিমধ্যে এখানে জাতিসংঘের যে আবাসিক প্রতিনিধি আছে, সিদ্ধান্ত নিয়েছি তার সঙ্গে মিটিং করবো। তারিখ এখনো ঠিক হয়নি। তার কাছে সহযোগিতা চাইবো এছাড়া আরও উচ্চপর্যায়ে থেকে জাতিসংঘের বিভিন্ন কনসার্ন এজেন্সি আছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। আশা করছি দ্রুত আমরা শুরু করতে পারবো।

তিনি আরও বলেন, এই বিচারের আওতায় বিগত পর্যায়ের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখে ওনাদেরও বিচার করা সম্ভব বলে এটা আমরা মনে করছি। ভিকটিম পরিবারের ন্যায়বিচার পাওয়ার সবচেয়ে বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, এখন তো শুধু পুলিশ আর ছাত্রলীগের অপরাধ দেখলে হবে না। যাদের আদেশ নির্দেশে তারা করেছে, সেটা সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিও যদি হয়, সেটাও এই আইনের আওতায় বিচার করা সম্ভব।

বিদায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী বা অন্যদেরও যদি দায়-দায়িত্ব থাকে আমরা সেটা পর্যন্ত খতিয়ে দেখবো, বলেন আসিফ নজরুল।

এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হবে সেটা ক্যাটাগরিক্যালি বলতে পারেন।

ট্যাগস

আইন উপদেষ্টা

জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে

আপডেট সময় ০১:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪

অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

বুধবার (১৪ আগস্ট) সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গণহত্যা ও গুলিবর্ষণের ঘটনার বিচারের জন্য এরইমধ্যে কিছু মামলা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কিন্তু রাজপথে থাকা ছাত্র সংগঠন, মানবাধিকার সংগঠনসহ অনেকে দাবি করছে যে এটিকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসাবে খতিয়ে দেখা যায় কি না। আমরা দেখেছি, জুলাই গণহত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অধীনে বিচার করা সম্ভব।

জাতিসংঘের অধীনে তদন্ত টিম কাজ করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ যারা যারা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

এই উপদেষ্টা বলেন, আপনাদেরকে আমরা বলতে চাই, ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন আছে। এটা পরে ২০০৯ ও ২০১৩-তে সংশোধন হয়েছে। এই আইনে আমরা জুলাই গণহত্যা, জুলাই গণহত্যা বলতে আমি আগস্ট মাসের প্রথম পাঁচ দিনের হত্যার কথা বলছি, এর জন্য দায়ী যে ব্যক্তিবর্গ আছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ওনাদের বিচারের জন্য আমরা ইতিমধ্যে একটা ছোটখাট গবেষণার মতো করেছি। আমরা গবেষণা করে দেখেছি, এই আইনের অধীনে এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা যারা বিভিন্ন আদেশ দিয়েছেন, সহযোগিতা করেছেন, তাদের সকলকে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব।

আসিফ নজরুল বলেন, আপনারা জানেন এখানে (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল) একটা তদন্ত সংস্থা রয়েছে, একটা প্রসিকিউশন টিম আছে। ‌এগুলোকে আমরা রি-অর্গানাইজ করার চেষ্টা করছি। আদালতটা একটু পরে করবো।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে তদন্ত করার চেষ্টা করা হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, জাতিসংঘ থেকে আমাদের বারবার সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বিচারের ক্ষেত্রে আমরা সত্যিকারের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের টিম জাতিসংঘের সর্বাত্মক তত্ত্বাবধানে কাজ করবে। সেই লক্ষ্যে সমস্ত উদ্যোগ গ্রহণ করবো। ইতিমধ্যে এখানে জাতিসংঘের যে আবাসিক প্রতিনিধি আছে, সিদ্ধান্ত নিয়েছি তার সঙ্গে মিটিং করবো। তারিখ এখনো ঠিক হয়নি। তার কাছে সহযোগিতা চাইবো এছাড়া আরও উচ্চপর্যায়ে থেকে জাতিসংঘের বিভিন্ন কনসার্ন এজেন্সি আছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। আশা করছি দ্রুত আমরা শুরু করতে পারবো।

তিনি আরও বলেন, এই বিচারের আওতায় বিগত পর্যায়ের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখে ওনাদেরও বিচার করা সম্ভব বলে এটা আমরা মনে করছি। ভিকটিম পরিবারের ন্যায়বিচার পাওয়ার সবচেয়ে বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, এখন তো শুধু পুলিশ আর ছাত্রলীগের অপরাধ দেখলে হবে না। যাদের আদেশ নির্দেশে তারা করেছে, সেটা সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিও যদি হয়, সেটাও এই আইনের আওতায় বিচার করা সম্ভব।

বিদায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী বা অন্যদেরও যদি দায়-দায়িত্ব থাকে আমরা সেটা পর্যন্ত খতিয়ে দেখবো, বলেন আসিফ নজরুল।

এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হবে সেটা ক্যাটাগরিক্যালি বলতে পারেন।