ফের বিতর্কে জড়ালো চলচ্চিত্র পরিচালক অনন্য মামুনের নাম। এবার তার বিরুদ্ধে পারিশ্রমিক পরিশোধে গড়িমসির অভিযোগ করেছেন অভিনেত্রী এলিনা শাম্মী। অনন্য মামুনের পরিচালনায় ‘রেডিও’, ‘কসাই’ এবং মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ‘দরদ’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন এই উপস্থাপিকা-অভিনেত্রী।
প্রাথমিকভাবে অবশ্য সরাসরি অনন্য মামুনের নাম নিয়ে অভিযোগ করেননি শাম্মী। তবে মামুন তাকে ইঙ্গিত করে কিছু বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলে আর রাখঢাক করেননি এই অভিনেত্রী।
শাম্মী গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘ভারতে ‘দরদ’ সিনেমায় ১৯ দিন শ্যুটিং করেছি। মামুন আমাকে মাত্র ১৬ হাজার টাকা দিয়েছেন। বাকি টাকা চাইলেই ক্রাইসিসের কথা জানান। ‘রেডিও’ সিনেমাতেও আমাকে কোনো পারিশ্রমিক দেননি। এমনকি কয়েক বছর আগে মুক্তি পাওয়া ‘কসাই’ সিনেমার সব পারিশ্রমিক বুঝে পাইনি।’
শাম্মী যোগ করেন, ‘এবারই প্রথম নয়। পারিশ্রমিক নিয়ে অনন্য মামুন কী করেন, তা প্রায় সব শিল্পীরই জানা। উনি এসব জেনেবুঝেই করেন। তিনি আপাদমস্তক একজন ব্যবসায়ী। আমি অন্য পরিচালকদের সঙ্গেও কাজ করেছি। অনন্য মামুনের মধ্যে পরিচালকের কোনো ছাপ পাই না। তার মধ্যে সব সময় ধান্দাবাজি করার পাঁয়তারা কাজ করে।’
এর আগে গত বুধবার (১৪ আগস্ট) প্রথমে এক ফেসবুক পোস্টে মামুনের নাম উল্লেখ না করে একজন নির্মাতার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন শাম্মী, ‘যে নির্মাতা সাবেক সরকারের আমলে দালালি, চাটুকারিতা, তোষামোদি করে টিকে থেকেছে, শিল্পীদের দিয়ে কাজ করিয়ে পারিশ্রমিক দেয়নি, তার মুখে নীতিবাক্য মানায় না। কথার ফুলঝুরি ছড়িয়েছে সব সময়, চাপাবাজিতে সে বদ্ধপরিকর।’
ওই রাতেই অনন্য মামুন ফেসবুকে অনেকটা জবাব দেওয়ার ভঙ্গিতে লিখেছিলেন, ‘একজন অদক্ষ অভিনেতা আমার সিনেমায় কাজ না করতে পেরে এখন গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। টিজারে নিজের মুখটা না দেখতে পারাই কি কষ্ট?’
মামুনের ওই মন্তব্যের পর শাম্মী ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘এতদিন দরদ সিনেমার জন্য কোনো কথা বলিনি। ভেবেছি কথা বললে সিনেমার ক্ষতি হবে। এ ছাড়া অনন্য মামুনকে আমার নিজের ভাইয়ের মতো মনে করি। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি আমাকে ন্যায্য পাওনাটুকু দেননি। উল্টো ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জানান, আমি নাকি অদক্ষ অভিনেতা। আমার যোগ্যতা বলেই তিনি তার কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করিয়েছেন। আর টিজারে দেখা যায়নি বলে আমার কষ্টের কথা বললেন। হ্যাঁ, আমি কষ্ট পেয়েছি। আমি গুরুত্বহীন কোনো চরিত্রে অভিনয় করিনি যে আমাকে রাখা যাবে না। আমি তো নায়িকা নই, চরিত্রাভিনেতা। আমার তো কাজ দিয়েই এগিয়ে যেতে হয়।’
এদিকে সামাজিক মাধ্যমে পারিশ্রমিক পরিশোধ না করার কথা ছড়িয়ে পড়ার পর পাওনা বুঝে নেওয়ার জন্য শাম্মীকে ডেকেছেন মামুনের সহকারী। তবে এই অভিনেত্রী বলছেন, ‘তার অফিসে গিয়ে টাকা আনতে আমি নিরাপদ বোধ করছি না। এ ছাড়া স্ট্যাটাস দেওয়ার পর অনেকেই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে। তারাও মামুনের কাছে টাকা পায়। আমাদের সবার পারিশ্রমিক বুঝিয়ে দিতে হবে।’