ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২৯ লাখ মানুষ, ২ জনের মৃত্যু

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৮:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০২৪
  • 29

চলমান বন্যায় এখন পর্যন্ত দেশের আট জেলার ২৯ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সচিবালয়ে চলমান বন্যা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বন্যা কবলিত হয়েছে। আট জেলায় মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার ৮৪০ টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় দিতে মোট এক হাজার ৫৩৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মোট ৭৫ হাজার ৬৬৮ জন লোক এবং ৭ হাজার ৪৫৯টি গবাদিপশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে বলেও জানান অতিরিক্ত সচিব।

তিনি বলেন, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানি বাড়ছে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টির প্রবণতা কমে আসতে পারে। এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি প্রাথমিকভাবে স্থিতিশীল থেকে পরবর্তী সময়ে উন্নতি হতে পারে।

আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য তুলে ধরে আলী রেজা আরও বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টির প্রবণতা কমে আসতে পারে। এ সময় এ অঞ্চলের ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলার মুহুরী, ফেনী, গোমতী, হালদা ইত্যাদি নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি প্রাথমিকভাবে স্থিতিশীল থেকে পরবর্তী সময়ে উন্নতি হতে পারে।

অতিরিক্ত সচিব বলেন, ৫০ উপজেলা বন্যা প্লাবিত এবং ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন ৩৫৭টি।‌ আট জেলায় মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার ৮৪০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ২৯ লাখ ৪ হাজার ৯৬৪ জন। মারা গেছেন দুইজন (ফেনীতে একজন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন)। আট জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা দিতে মোট ৪৪৪টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে।

এছাড়া দেশের সব জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোতে জেলা প্রশাসককে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, মেডিকেল টিম ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে একসঙ্গে কাজ করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২-৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে।

ফেনী জেলায় বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী উদ্ধারকাজে নিয়োজিত রয়েছে। সেনাবাহিনী থেকে ১৬০ জন সদস্য ও ৪০টি উদ্ধারকারী যান ফেনী জেলায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়া একটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে। নৌবাহিনীর ৭১ জন সদস্য ও ৮টি উদ্ধারকারী যান কাজ করছে। এছাড়া বিজিবিসহ আরও নৌযান আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত সচিব।

ত্রাণ কার্যক্রমের বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ নাজমুল আবেদীন বলেন, বন্যা দুর্গত আট জেলায় মোট এক কোটি ৮২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ত্রাণের চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৩ হাজার ৬৫০ টন। এছাড়া শুকনা ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১১ হাজার পিস।

ট্যাগস

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২৯ লাখ মানুষ, ২ জনের মৃত্যু

আপডেট সময় ০৮:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০২৪

চলমান বন্যায় এখন পর্যন্ত দেশের আট জেলার ২৯ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সচিবালয়ে চলমান বন্যা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বন্যা কবলিত হয়েছে। আট জেলায় মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার ৮৪০ টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় দিতে মোট এক হাজার ৫৩৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মোট ৭৫ হাজার ৬৬৮ জন লোক এবং ৭ হাজার ৪৫৯টি গবাদিপশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে বলেও জানান অতিরিক্ত সচিব।

তিনি বলেন, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানি বাড়ছে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টির প্রবণতা কমে আসতে পারে। এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি প্রাথমিকভাবে স্থিতিশীল থেকে পরবর্তী সময়ে উন্নতি হতে পারে।

আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য তুলে ধরে আলী রেজা আরও বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টির প্রবণতা কমে আসতে পারে। এ সময় এ অঞ্চলের ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলার মুহুরী, ফেনী, গোমতী, হালদা ইত্যাদি নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি প্রাথমিকভাবে স্থিতিশীল থেকে পরবর্তী সময়ে উন্নতি হতে পারে।

অতিরিক্ত সচিব বলেন, ৫০ উপজেলা বন্যা প্লাবিত এবং ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন ৩৫৭টি।‌ আট জেলায় মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার ৮৪০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ২৯ লাখ ৪ হাজার ৯৬৪ জন। মারা গেছেন দুইজন (ফেনীতে একজন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন)। আট জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা দিতে মোট ৪৪৪টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে।

এছাড়া দেশের সব জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোতে জেলা প্রশাসককে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, মেডিকেল টিম ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে একসঙ্গে কাজ করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২-৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে।

ফেনী জেলায় বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী উদ্ধারকাজে নিয়োজিত রয়েছে। সেনাবাহিনী থেকে ১৬০ জন সদস্য ও ৪০টি উদ্ধারকারী যান ফেনী জেলায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়া একটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে। নৌবাহিনীর ৭১ জন সদস্য ও ৮টি উদ্ধারকারী যান কাজ করছে। এছাড়া বিজিবিসহ আরও নৌযান আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত সচিব।

ত্রাণ কার্যক্রমের বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ নাজমুল আবেদীন বলেন, বন্যা দুর্গত আট জেলায় মোট এক কোটি ৮২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ত্রাণের চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৩ হাজার ৬৫০ টন। এছাড়া শুকনা ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১১ হাজার পিস।