ওজন কমাতে অনেকেই দীর্ঘক্ষণ খাবার না খেয়ে থাকেন বা ইন্টারমিটিং ফাস্টিং করেন। বিশেষ করে ওজন কমানোর রেসে যারা এখন দৌড়াচ্ছেন, তাদের নিশ্চয়ই ধারণা আছে ইন্টারমিটিং ফাস্টিংয়ের বিষয়ে। জানলে অবাক হবেন, এর অনেক সুফল আছে।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ যৌথভাবে একটি গবেষণা করেছে। তাতে দেখা গেছে, ফাস্টিং করলে শরীরের অনেক উপকার হয়। যেমন- একটানা ২৪ ঘণ্টা না খেয়ে থাকলেই নাকি বাড়বে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
২১ জন ব্যক্তিকে নিয়ে এই গবেষণা করা হয়। গবেষকদের মতে, ২৪ ঘণ্টা ফাস্টিংয়ের আগে যারা ৫০০ ক্যালোরির খাবার খান, ২৪ ঘণ্টা পর আবার তাদের খাবার দেওয়া হয়। এর মধ্যেই শরীরের গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন দেখা যায়।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বেড়েছে ওই ব্যক্তিদের। ৫০০ ক্যালোরি খাবার খাওয়ার পর ২৪ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হয় ওই ব্যক্তিদের।
এমনকি ফাস্টিংয়ের কারণে রক্তে আরাকিডোনিক অ্যাসিড নামের একটি বিশেষ উপাদানের পরিমাণ বেড়ে যায় তাদের। এটিই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অন্যতম উপাদান।
এটি আদতে এক ধরনের লিপিড। এই লিপিডের পরিমাণ আবার খাবার খেলেই কমে যায়। ২৪ ঘণ্টা পর ৫০০ ক্যালোরির খাবার খাওয়ানো হয় ওই ব্যক্তিদের। তখনই আরাকিডোনিক অ্যাসিডের পরিমাণ কমে যায়।
এই পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে বিজ্ঞানীদের মতামত, উপোস থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। যা প্রদাহ কমায়। তবে কেন এটা হয়, তার কারণ জানা যায়নি এখনও।
এই গবেষণায় শরীরের আরও একটি বিশেষ সমস্যা নিয়ে গবেষণা করা হয়। সমস্যাটির নাম প্রদাহ বা ইনফ্লেমেশন। সাধারণত মেটাবলিজম থেকে ইনফ্লেমেশন তৈরি হয়।
এর ফলে আর্থ্রাইটিসের মতো নানা রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে শুরু করে। এই প্রদাহ কমানোর জন্য চিকিৎসকরা জীবনযাপনে বদল আনার পরামর্শ দেন। এই ইনফ্লেমেশনের অন্যতম কারণ হলো এনএলআরপি৩ ইনফ্লেমেসাম।
আর্থ্রাইটিস ছাড়াও ইনফ্লেমেশন থেকে একদিকে যেমন ওবেসিটি হতে পারে, অন্যদিকে ডিমেনশিয়া বা অ্যালঝাইমার্স ডিজিজের মতো কঠিন রোগও হতে পারে। তার পিছনে দায়ী স্নায়ুর ইনফ্লেমেশন।
সূত্র: কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়/এবিপি লাইভ