ইসরায়েলের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি এবার বিক্ষোভে নামছেন দেশটির শ্রমিকরাও। তবে শ্রমিকরা যেন বিক্ষোভে অংশ না নেন সে জন্য ইতোমধ্যেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ। তিনি বলেছেন, যারা শ্রমিক ধর্মঘটে অংশ নেবেন তাদের বেতন দেওয়া হবে না।
সম্প্রতি গাজায় আরও ছয় জিম্মিকে মৃত উদ্ধারের পর বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ইসরায়েল। হামাসের সঙ্গে এখনই যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই করে বাকি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে রোববার (১ সেপ্টেম্বর) রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার মানুষ।
একই দাবিতে সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে দেশটির প্রধান শ্রমিক ইউনিয়ন ফেডারেশন হিস্তাদ্রুত। ইউনিয়ন বলেছে, স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ৮টা থেকে বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর বন্ধ থাকবে। এটি ইসরায়েলের প্রধান বিমান পরিবহন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। বিমানবন্দরটি বন্ধ থাকলে দেশটির ব্যাংকিং এবং স্বাস্থ্যসেবাসহ অর্থনীতির সব প্রধান খাতই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
তবে ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী হুমকি দিয়েছেন যে, হিস্তাদ্রুতের ডাকা এই ধর্মঘটে যোগ দিলে কাউকে বেতন না দেওয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
চরম ডানপন্থি এই মন্ত্রী আদালতকে ধর্মঘট বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। এমনকি তিনি হিস্টাদ্রুতের চেয়ারম্যান আর্নন বার-ডেভিডকে হামাসের নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের স্বার্থে কাজ করার জন্যও অভিযুক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, এটা ভেবে আমার খুব খারাপ লাগছে যে এই কঠিন সময়ে ইসরায়েলের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে, ব্যবসা-বাণিজ্যে সহযোগিতা করতে এবং সেনাবাহিনীকে সমর্থন করার বদলে আর্নন বার-ডেভিড কার্যকরভাবেই সিনওয়ারের স্বপ্ন পূরণে কাজ করছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলি কর্মীদের প্রতিনিধিত্ব করার পরিবর্তে হামাসের স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করাকে বেছে নিয়েছেন এই শ্রমিক নেতা।
এর আগে রোববার রাতে ইসরায়েলি বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। ১১ মাস আগে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলে যতগুলো বৃহৎ সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে, তার মধ্যে এবারেরটি অন্যতম।
এদিন রাস্তায় বিক্ষোভকারীরা ‘এখন! এখন!’ বলে স্লোগান দেন এবং ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির চুক্তি করে বাকি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।
এসময় বিক্ষোভকারীরা তেল আবিবের রাস্তাগুলো অবরোধ করেন এবং পশ্চিম জেরুজালেমে নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের বাইরে বিক্ষোভ দেখান।
এদিকে গাজায় জিম্মি ইসরায়েলিদের পরিবারগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী ‘হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরাম’ এক বিবৃতিতে বলেছে, যুদ্ধ থামাতে এবং তাদের প্রিয়জনদের ঘরে ফিরিয়ে আনার চুক্তি নিশ্চিত করতে নেতানিয়াহু সরকারের ‘ব্যর্থতার ফল’ হলো এই ছয় জিম্মির মৃত্যু।