ঢাকা , শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোবাইল ফোন ব্যবহারে ব্রেইন ক্যানসারের ঝুঁকি নেই, জানালো হু

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৯:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 11

অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার নিয়ে অনেকেরই ভিন্ন ভিন্ন মত আছে। কারও মতে, বেশি ফোন ব্যবহারে চোখের বারোটা বাজে! আবার কারও কারও মতে, ব্রেইন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায় মোবাইল আসক্তি। তবে এই ধারণা একেবারেই ঠিক নয়, বলে জানাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক প্রকাশিত এক সমীক্ষা।

বেতার তরঙ্গের কারণে স্বাস্থ্যের উপর কী কী কু-প্রভাব পড়তে পারে, তা নিয়ে একটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে ব্রেইন ক্যানসারের পেছনে মোটেও দায়ী নয় মোবাইল ফোন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু এই বিষয়ে সমীক্ষা করেছে। ৪ সেপ্টেম্বর এনভায়রনমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে সমীক্ষাটি।

সেখানে বলা হচ্ছে, সাধারণভাবে মাথার বিপরীত দিকে রেখেই সবাই মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। মাথার সামনের দিকে বা বিপরীত দিকে থাকে মোবাইল ফোন। সেই ফোন থেকে যে বেতার তরঙ্গ নির্গত হয়, তাকে বলা হয় নন আয়োনাইজিং নিঃসরণ।

দীর্ঘদিন ধরেই ব্রেইন ক্যানসারের কারণ হিসেবে মোবাইল ফোনের প্রভাবকে দায়ী করেছেন অনেকেই। তবে মোবাইল ফোন বা ওয়্যারলেস প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম বর্তমানে সবার জীবনের সঙ্গে জুড়ে আছে।

আর তাই এসব যন্ত্র থেকে যে রেডিও তরঙ্গ নিঃসৃত হয় তা আমাদের শরীরের উপর কোনো খারাপ প্রভাব ফেলে কি না তা দেখার দায়ভার বর্তায় বিজ্ঞানের উপর।

আর এই বিষয়েই সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি সমীক্ষা জানালো, ব্রেন ক্যানসারের সঙ্গে মোবাইল ফোন ব্যবহারের কোনো সংযোগ নেই। হু’র এই সমীক্ষায় বিজ্ঞানীমহলে ঐকমত্য সত্ত্বেও মাঝে মধ্যে বেশ কিছু আলোচনায় উঠে এসেছে মোবাইল ফোনের রেডিও তরঙ্গের কারণে ব্রেন ক্যানসারের ত্বরান্বিত হওয়ার ইঙ্গিত।

২০১১ সালে আইএআরসি, বেতার তরঙ্গকে মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বলে জানায়। আর এই ঘটনার কারণে ব্রেইন ক্যানসার ও মোবাইল ফোনের ব্যবহার নিয়ে আরও গবেষণা ও পর্যালোচনা শুরু হয়।

বর্তমানে হু’র এই সমীক্ষা এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি তথ্যপ্রমাণ সমৃদ্ধ। এতে ৫ হাজার স্টাডি উল্লেখিত হয়েছে, যার মধ্যে ৬৩টি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে ১৯৯৪-২০২২ সালের মধ্যে।

এই সমীক্ষায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তি যদি ১০ বছর বা তার বেশি সময় ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন, তবুও তার ব্রেইন ক্যানসারের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। কতক্ষণ তারা মোবাইল ব্যবহার করছে, কতক্ষণ ফোনে কথা বলছে তার সঙ্গেও ব্রেন ক্যানসারের কোনো সংযোগ নেই।

আগের গবেষণার জের ধরে নতুন সমীক্ষাতেও বলা হয়েছে, বিগত কয়েক দশক ধরে মোবাইল ফোনের মতো ওয়্যারলেস প্রযুক্তির সরঞ্জাম ব্যবহারের প্রবণতা যে হারে বেড়েছে, সেই হারে ব্রেইন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বাড়তে দেখা যায়নি।

সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যের সুরক্ষার জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের বিভিন্ন মোবাইল ফোনে কিছু সেফটি লিমিট থাকে। এই লিমিটের মধ্যেই খুব লো-লেভেল রেডিও ওয়েভ নিঃসরণ করে মোবাইল ফোন। যা মানব স্বাস্থ্যের উপর তেমন কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না।

সূত্র: ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউট/ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

ট্যাগস

মোবাইল ফোন ব্যবহারে ব্রেইন ক্যানসারের ঝুঁকি নেই, জানালো হু

আপডেট সময় ০৯:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার নিয়ে অনেকেরই ভিন্ন ভিন্ন মত আছে। কারও মতে, বেশি ফোন ব্যবহারে চোখের বারোটা বাজে! আবার কারও কারও মতে, ব্রেইন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায় মোবাইল আসক্তি। তবে এই ধারণা একেবারেই ঠিক নয়, বলে জানাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক প্রকাশিত এক সমীক্ষা।

বেতার তরঙ্গের কারণে স্বাস্থ্যের উপর কী কী কু-প্রভাব পড়তে পারে, তা নিয়ে একটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে ব্রেইন ক্যানসারের পেছনে মোটেও দায়ী নয় মোবাইল ফোন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু এই বিষয়ে সমীক্ষা করেছে। ৪ সেপ্টেম্বর এনভায়রনমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে সমীক্ষাটি।

সেখানে বলা হচ্ছে, সাধারণভাবে মাথার বিপরীত দিকে রেখেই সবাই মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। মাথার সামনের দিকে বা বিপরীত দিকে থাকে মোবাইল ফোন। সেই ফোন থেকে যে বেতার তরঙ্গ নির্গত হয়, তাকে বলা হয় নন আয়োনাইজিং নিঃসরণ।

দীর্ঘদিন ধরেই ব্রেইন ক্যানসারের কারণ হিসেবে মোবাইল ফোনের প্রভাবকে দায়ী করেছেন অনেকেই। তবে মোবাইল ফোন বা ওয়্যারলেস প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম বর্তমানে সবার জীবনের সঙ্গে জুড়ে আছে।

আর তাই এসব যন্ত্র থেকে যে রেডিও তরঙ্গ নিঃসৃত হয় তা আমাদের শরীরের উপর কোনো খারাপ প্রভাব ফেলে কি না তা দেখার দায়ভার বর্তায় বিজ্ঞানের উপর।

আর এই বিষয়েই সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি সমীক্ষা জানালো, ব্রেন ক্যানসারের সঙ্গে মোবাইল ফোন ব্যবহারের কোনো সংযোগ নেই। হু’র এই সমীক্ষায় বিজ্ঞানীমহলে ঐকমত্য সত্ত্বেও মাঝে মধ্যে বেশ কিছু আলোচনায় উঠে এসেছে মোবাইল ফোনের রেডিও তরঙ্গের কারণে ব্রেন ক্যানসারের ত্বরান্বিত হওয়ার ইঙ্গিত।

২০১১ সালে আইএআরসি, বেতার তরঙ্গকে মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বলে জানায়। আর এই ঘটনার কারণে ব্রেইন ক্যানসার ও মোবাইল ফোনের ব্যবহার নিয়ে আরও গবেষণা ও পর্যালোচনা শুরু হয়।

বর্তমানে হু’র এই সমীক্ষা এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি তথ্যপ্রমাণ সমৃদ্ধ। এতে ৫ হাজার স্টাডি উল্লেখিত হয়েছে, যার মধ্যে ৬৩টি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে ১৯৯৪-২০২২ সালের মধ্যে।

এই সমীক্ষায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তি যদি ১০ বছর বা তার বেশি সময় ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন, তবুও তার ব্রেইন ক্যানসারের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। কতক্ষণ তারা মোবাইল ব্যবহার করছে, কতক্ষণ ফোনে কথা বলছে তার সঙ্গেও ব্রেন ক্যানসারের কোনো সংযোগ নেই।

আগের গবেষণার জের ধরে নতুন সমীক্ষাতেও বলা হয়েছে, বিগত কয়েক দশক ধরে মোবাইল ফোনের মতো ওয়্যারলেস প্রযুক্তির সরঞ্জাম ব্যবহারের প্রবণতা যে হারে বেড়েছে, সেই হারে ব্রেইন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বাড়তে দেখা যায়নি।

সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যের সুরক্ষার জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের বিভিন্ন মোবাইল ফোনে কিছু সেফটি লিমিট থাকে। এই লিমিটের মধ্যেই খুব লো-লেভেল রেডিও ওয়েভ নিঃসরণ করে মোবাইল ফোন। যা মানব স্বাস্থ্যের উপর তেমন কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না।

সূত্র: ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউট/ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস