ঢাকা , সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাবাকে দেওয়া ওয়ালটনের দোকান ধরে রেখেছেন ছেলেরা

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৫:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ জুলাই ২০২৩
  • 478

বিরামপুরে পঙ্গু মেইল মোজাম্মেলের জীবনে নিশ্চয়তা আনতে, আরেকটু ভালোভাবে বাঁচার সংস্থান করে দিতে তার পাশে দাঁড়িয়েছিল দেশের শীর্ষ প্রযুক্তিপণ্যের ব্র্যান্ড ওয়ালটন। সে সময় এই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তাকে একটি দোকান তৈরি করে দেয়া হয়েছিল। পাশপাশি চলাচলের জন্য একটি গাড়ি উপহার দেওয়া হয়েছিল। গত চার মাস আগে মোজাম্মেল হঠাৎ মারা যান। তার মৃত্যুর পর ওয়ালটনের দেওয়া উপহার সেই দোকান এবং গাড়ির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছেন ছেলেরা।

২০২২ সালে মেইল মোজাম্মেল হককে নিয়ে ‘সাহসের প্রতীক মেইল মোজাম্মেল’ শিরোনামে একটি ভিডিও সংবাদ প্রচার হয় দেশের শীর্ষস্থানীয় নিউজ পোর্টালে। সংবাদটি নজরে পড়ে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষের।

মেইল মোজাম্মেল ছিলেন দক্ষ ও অভিজ্ঞ সাইকেল, ভ্যান ও রিকশা সারাইকারী। তার কোমর থেকে দুটি পা কাটা ছিল। তারপরও জীবন যুদ্ধে হেরে যাওয়ার মানুষ তিনি ছিলেন না। দোকান ভাড়া নিয়ে মেকারের কাজ করতেন। চলাচল করতেন হাতে বানানো বিশেষভাবে তৈরি একটি গাড়িতে। নড়বড়ে সেই গাড়ি হাত দিয়ে ঘুরিয়ে চালাতে হতো। এতে তার কষ্টের শেষ ছিল না।

ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানার পর তাকে একটি দোকান তৈরি করে দেয়। দোকানের মালামালও কিনে দেওয়া হয় যাতে সে এখান থেকেই জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। এখানেই শেষ নয়, মেইল মোজাম্মেলের চলাচলের জন্য উন্নতমানের একটি অটোচার্জার গাড়িও সে সময় তৈরি করে দেয় ওয়ালটন। এগুলো পেয়ে খুশি হয়েছিলেন মেইল মোজাম্মেল। নতুন উদ্যমে জীবন যুদ্ধে নামেন তিনি। তার দোকানে কাজের পরিমাণও বেড়ে যায়। সুন্দরভাবে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে চলতে থাকে তার জীবন সংসার। হঠাৎ চার মাস আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান মেইল মোজাম্মেল। থেমে যায় সব। কিন্তু মোজাম্মেলের রেখে যাওয়া সেই দোকান বন্ধ হয়ে যায়নি। সেই দোকানে ব্যবসা করেই তার দুই ছেলে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

মতিয়ার, জব্বরসহ কয়েকজন গ্রামবাসী বলেন, এক সময় মেইল মোজাম্মেল সুস্থ সবল মানুষ ছিলেন। সাইকেল মেকারি করে ছেলেমেয়েদের বড় করেছেন। হঠাৎ তার একটি পায়ে ক্ষত হয়। সেই থেকে পা কাটতে কাটতে কোমরের নিচ পর্যন্ত দুটি পা কেটে ফেলতে হয়। চিকিৎসা করাতে জীবনের সব শেষ করে ফেলেছিলেন তিনি। অনেক কষ্ট করে তাকে চলতে হতো। পরে ওয়ালটন তার কষ্ট দেখে একটি নিজস্ব দোকান ও একটি গাড়ি তৈরি করে দেয়।

মেইল মোজাম্মেলের বড় ছেলে আতাউর রহমান বলেন, চার মাস হলো বাবা মারা গেছেন। আমরা তিন ভাই। বাবার রেখে যাওয়া ওয়ালটন কোম্পানির দেওয়া উপহার এই মেকারের দোকান মেজ ভাইকে দিয়েছি। আর ছোট ভাইকে দিয়েছি অটোচার্জার গাড়িটি। তারা দুজনই দোকান ও গাড়ি চালিয়ে ভালোভাবে সংসার চালাচ্ছে। আমরা ধন্যবাদ জানাই ওয়ালটনকে। তাদের দেওয়া উপহার নিয়ে আমার বাবাও ভালো ছিলেন, আমরাও ভালো আছি।

ট্যাগস

বাবাকে দেওয়া ওয়ালটনের দোকান ধরে রেখেছেন ছেলেরা

আপডেট সময় ০৫:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ জুলাই ২০২৩

বিরামপুরে পঙ্গু মেইল মোজাম্মেলের জীবনে নিশ্চয়তা আনতে, আরেকটু ভালোভাবে বাঁচার সংস্থান করে দিতে তার পাশে দাঁড়িয়েছিল দেশের শীর্ষ প্রযুক্তিপণ্যের ব্র্যান্ড ওয়ালটন। সে সময় এই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তাকে একটি দোকান তৈরি করে দেয়া হয়েছিল। পাশপাশি চলাচলের জন্য একটি গাড়ি উপহার দেওয়া হয়েছিল। গত চার মাস আগে মোজাম্মেল হঠাৎ মারা যান। তার মৃত্যুর পর ওয়ালটনের দেওয়া উপহার সেই দোকান এবং গাড়ির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছেন ছেলেরা।

২০২২ সালে মেইল মোজাম্মেল হককে নিয়ে ‘সাহসের প্রতীক মেইল মোজাম্মেল’ শিরোনামে একটি ভিডিও সংবাদ প্রচার হয় দেশের শীর্ষস্থানীয় নিউজ পোর্টালে। সংবাদটি নজরে পড়ে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষের।

মেইল মোজাম্মেল ছিলেন দক্ষ ও অভিজ্ঞ সাইকেল, ভ্যান ও রিকশা সারাইকারী। তার কোমর থেকে দুটি পা কাটা ছিল। তারপরও জীবন যুদ্ধে হেরে যাওয়ার মানুষ তিনি ছিলেন না। দোকান ভাড়া নিয়ে মেকারের কাজ করতেন। চলাচল করতেন হাতে বানানো বিশেষভাবে তৈরি একটি গাড়িতে। নড়বড়ে সেই গাড়ি হাত দিয়ে ঘুরিয়ে চালাতে হতো। এতে তার কষ্টের শেষ ছিল না।

ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানার পর তাকে একটি দোকান তৈরি করে দেয়। দোকানের মালামালও কিনে দেওয়া হয় যাতে সে এখান থেকেই জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। এখানেই শেষ নয়, মেইল মোজাম্মেলের চলাচলের জন্য উন্নতমানের একটি অটোচার্জার গাড়িও সে সময় তৈরি করে দেয় ওয়ালটন। এগুলো পেয়ে খুশি হয়েছিলেন মেইল মোজাম্মেল। নতুন উদ্যমে জীবন যুদ্ধে নামেন তিনি। তার দোকানে কাজের পরিমাণও বেড়ে যায়। সুন্দরভাবে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে চলতে থাকে তার জীবন সংসার। হঠাৎ চার মাস আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান মেইল মোজাম্মেল। থেমে যায় সব। কিন্তু মোজাম্মেলের রেখে যাওয়া সেই দোকান বন্ধ হয়ে যায়নি। সেই দোকানে ব্যবসা করেই তার দুই ছেলে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

মতিয়ার, জব্বরসহ কয়েকজন গ্রামবাসী বলেন, এক সময় মেইল মোজাম্মেল সুস্থ সবল মানুষ ছিলেন। সাইকেল মেকারি করে ছেলেমেয়েদের বড় করেছেন। হঠাৎ তার একটি পায়ে ক্ষত হয়। সেই থেকে পা কাটতে কাটতে কোমরের নিচ পর্যন্ত দুটি পা কেটে ফেলতে হয়। চিকিৎসা করাতে জীবনের সব শেষ করে ফেলেছিলেন তিনি। অনেক কষ্ট করে তাকে চলতে হতো। পরে ওয়ালটন তার কষ্ট দেখে একটি নিজস্ব দোকান ও একটি গাড়ি তৈরি করে দেয়।

মেইল মোজাম্মেলের বড় ছেলে আতাউর রহমান বলেন, চার মাস হলো বাবা মারা গেছেন। আমরা তিন ভাই। বাবার রেখে যাওয়া ওয়ালটন কোম্পানির দেওয়া উপহার এই মেকারের দোকান মেজ ভাইকে দিয়েছি। আর ছোট ভাইকে দিয়েছি অটোচার্জার গাড়িটি। তারা দুজনই দোকান ও গাড়ি চালিয়ে ভালোভাবে সংসার চালাচ্ছে। আমরা ধন্যবাদ জানাই ওয়ালটনকে। তাদের দেওয়া উপহার নিয়ে আমার বাবাও ভালো ছিলেন, আমরাও ভালো আছি।