আগামী ডিসেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষরের ইঙ্গিত দিয়েছেন ঢাকা সফররত জাপানের অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী উতোশি নিশিমুরা।
রোববার (২৩ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘আগামী ৫০ বছরে বাংলাদেশ-জাপানের অর্থনৈতিক সম্পর্ক ও শিল্পের উন্নতি’ বিষয়ে এক সামিটে তিনি এ বিষয়ে ইঙ্গিত দেন। জেটরো এ সামিটের আয়োজন করে। এতে কো-স্পন্সর ছিল বিডা, এফবিসিসিআই, জেবিসিসিআই সিসিসিআই এবং জেসিআইএডি।
তিনি বলেন, এলডিসি তালিকা থেকে বের হওয়ার আগেই ইপিএ চুক্তি হলে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে না। এখন দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ছে, বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উতোশি নিশিমুরা বলেন, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে জাপানের অনেক উদ্যোক্তা বিনিয়োগ করেছেন। অনেক পুরোনো সম্পর্ক রয়েছে আমাদের মধ্যে। আমরা যমুনা সেতু, বিমানবন্দরসহ অবকাঠামো উন্নয়নে বাংলাদেশের সহযোগী।
বাণিজ্য নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও ডিপ্লোমেসি বেড়েছে। বড় বড় প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি বাড়ছে। আগামী ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হতে হলে মানবসম্পদ উন্নয়ন ও আইসিটি খাতের উন্নয়ন বাড়াতে হবে।
এসময় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্যিক ও উন্নয়ন অংশীদার জাপান। বিগত ৫০ বছর বাংলাদেশকে নানাভাবে সহযোগিতা দিয়ে আসছে দেশটি। বাংলাদেশের বড় রপ্তানি বাজারে পরিণত হয়েছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ এসেছে, আরও আসছে। তাদের সঙ্গে আমাদের আট বিষয়ে চুক্তি হয় প্রধানমন্ত্রীর সফরে। আগামীতে সহযোগিতার ক্ষেত্রে এসব চুক্তি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করবে বলে আশা করি।
শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ন বলেন, দেশের উন্নয়নে ভালো সহযোগী দেশ হলো জাপান। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান সফর করেছেন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে কৃষি, মেট্রোরেল, শিল্প উন্নয়ন, জাহাজ রিসাইক্লিং, শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়, মেধাসম্পদ, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, আইসিটি ও সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে আটটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, জাপান আমাদের বন্ধু দেশ। সেখানে মানুষের বয়সের হার একটি সমস্যা, আমাদের এখন ডেমোগ্রাফি ডিভিডেন্ড চলছে। আমাদের আগামীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞান অর্জনে ইউনিবেটর স্থাপনের মাধ্যমে সম্ভাবনাময় স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদের তত্ত্বাবধানে স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য ইন্ডাস্ট্রি, গভর্নমেন্ট এবং একাডেমিয়ার কোলাবরেশন করা হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ, এজন্য জাপানি সহযোগিতা, বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের ধারা আরও বাড়বে বলে আশা করি।
এসময় জাপানি রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি ইওয়ামা, জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেটরো) প্রেসিডেন্ট কাজুশি নবুতানি বক্তব্য রাখেন।