ভরা মৌসুমেও কক্সবাজারের টেকনাফে আশানুরূপ পর্যটকের দেখা মিলছে না। উপজেলার সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ, জাহাজপুরা গর্জন বাগান ও উখিয়ার ইনানী এবং হিমছড়িতে পর্যটক নেই বললেই চলে। এ মৌসুমে পর্যটকবাহী কোনো জাহাজ এখনো সেন্টমার্টিনে যায়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্ষার পরে সেন্টমার্টিন, টেকনাফ, উখিয়ার ইনানী ও হিমছড়ির বিভিন্ন পর্যটন স্পটে বিগত সময়ে বিপুল পর্যটকের আনাগোনা ছিল। পর্যটন মৌসুমের একমাস পেরিয়ে গেলেও এখানে প্রত্যাশিত পর্যটক মিলছে না। এতে পর্যটন শিল্পের ওপর নির্ভরশীল ব্যবসায়ীরা চরম হতাশায় রয়েছেন।
অপরদিকে সেন্টমার্টিনেও এসময় পর্যটকে ভরপুর থাকতো। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় সেন্টমার্টিনে এখন পর্যন্ত পর্যটকবাহী কোনো জাহাজ পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যায়নি। মিয়ানমারের রাখাইনের চলমান যুদ্ধের কারণে টেকনাফ-দমদমিয়া ঘাট থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ।
যদিও শুক্রবার (১ নভেম্বর) ইনানী ঘাট দিয়ে দুটি পর্যটকবাহী জাহাজ পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে ইনানী ঘাটের কিছু অংশ ভেঙে পড়ে। তাই সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটক এ নৌরুট দিয়ে পারবে কিনা সেটা এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।
দমদমিয়া ঘাটের শ্রমিক রহমত উল্লাহ বলেন, পর্যটকরা সেন্টমার্টিন যাওয়ার জন্য ঘাটে আসলে তাদের ব্যাগ-লাগেজ ও মালামাল আনা-নেওয়া করলে টাকা ইনকাম হতো। এখন পর্যটন মৌসুম চলছে পর্যটকদের দেখা মিলছে না।
টেকনাফ বাজারের কসমেটিক ব্যবসায়ী রাশেদুল হক বলেন, ব্যবসায়ীরা লাখ লাখ টাকার মালামাল দোকানে তুলছে। কিন্তু পর্যাপ্ত পর্যটক নেই। মাঝেমধ্যে অল্প সংখ্যক পর্যটকের দেখা যায়।
সেন্টমার্টিন হোটেল রয়েল বিচের মালিক জাহেদ হোসেন বলেন, গত এক মাসে দ্বীপে কোনো পর্যটক আসেনি। লাখ লাখ টাকা পুঁজি দিয়ে হোটেল-রেস্টুরেন্ট চালু করছি। দ্বীপে পর্যটক না আসায় চরম চিন্তার মধ্যে আছি।
কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (টুয়াক) সাবেক প্রেসিডেন্ট মো. আনোয়ার কামাল বলেন, উপজেলার সব স্পটে পর্যটক বাড়াতে কাজ করছি। সেন্টমার্টিনে পর্যটক সীমিত হলে দ্বীপবাসীসহ আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, নভেম্বর মাসে পর্যটকবাহী জাহাজ পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিনে যেতে পারবে। তবে কত তারিখ থেকে যাবে সেটি এখনো ঠিক করা হয়নি। পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেন্টমার্টিনে পর্যটকরা যাত্রী যাপন করতে পারবে না। প্রতিদিন দুই হাজার মানুষ যেতে পারবে। তবে টেকনাফের দমদমিয়া জেটিঘাট দিয়ে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করবে কিনা এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।