ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিচারপতি নিয়োগে যা আছে কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাবে

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৯:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
  • 6

উচ্চ আদালতের বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত জুডিসিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাবনা আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রি থেকে আইন মন্ত্রণালয় বরাবর এ প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

প্রস্তাবনায় বিচারপতি নিয়োগে আইন প্রণয়নের বিষয়ে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি ‘জুডিসিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’ গঠনের কথা বলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গণমাধ্যম কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলামের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সুপ্রিম কোর্টের বিচারক পদে নিয়োগের লক্ষ্যে উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাইপূর্বক সুপারিশ প্রেরণ করার জন্য অনুরোধ প্রাপ্তির পর কাউন্সিল এরূপ সুপারিশ প্রদান করবে মর্মে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, দেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বিগত ২১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট উভয় বিভাগের বিচারপতি ও সারাদেশের জেলা আদালতসমূহে কর্মরত বিচারকদের সম্মুখে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণে বিচার বিভাগ সংস্কারের রূপরেখা নির্ণীত করে একটি পরিপূর্ণ রোডম্যাপ তুলে ধরেন। যেখানে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে দেশের উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে আইন প্রণয়নের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেন।

এরই ধারাবাহিকতায় সুপ্রিম কোর্টসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত আইন, বিধি-বিধান, উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত, প্রথাসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিষদ গবেষণা পরিচালনাপূর্বক একটি প্রস্তাব আজ আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি ‘জুডিসিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’ গঠনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

বিশ্বের অনেক দেশেই, বিশেষত ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, কেনিয়া, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকায় উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন বা এরূপ প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের প্রস্তাবকৃত কাউন্সিলটি সংবিধানের ৯৫ ও ৯৮ অনুচ্ছেদের অধীনে বিচারক নিয়োগের জন্য সুপারিশ প্রেরণের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুরোধ জ্ঞাপনের ভিত্তিতে ওই পদে নিয়োগের সুপারিশ প্রেরণের জন্য প্রার্থীদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করবে মর্মে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে।

এছাড়া প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের বিষয়ে মতামত বা পরামর্শ গ্রহণের জন্য কাউন্সিল সংশ্লিষ্ট যেকোনো ব্যক্তিকে কাউন্সিলের সভায় আহ্বান করতে পারবে বা যেকোনো সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে কাউন্সিল কর্তৃক চাহিদাকৃত তথ্য উপস্থাপনের জন্য নির্দেশ দিতে পারবে মর্মে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে। কাউন্সিলটি গঠিত হলে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে দুপুরে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, মহাসচিব ও দুজন সহ-সভাপতির সমন্বয়ে মোট চারজনের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে তারা প্রধান বিচারপতি কর্তৃক ঘোষিত রোডম্যাপের সঙ্গে একাত্মতা জানান।

এছাড়া তারা বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া প্রধান বিচারপতির কাছে উপস্থাপন করেন।

বিশেষত তারা বিচারকদের গাড়ি নগদায়ন সুবিধা, আবাসন সুবিধা, চৌকি আদালতসহ দেশের সব আদালতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। প্রধান বিচারপতি অ্যাসোসিয়েশনের দাবিগুলো বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেবেন মর্মে তাদের আশ্বস্ত করেন।

ট্যাগস

বিচারপতি নিয়োগে যা আছে কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাবে

আপডেট সময় ০৯:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

উচ্চ আদালতের বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত জুডিসিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাবনা আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রি থেকে আইন মন্ত্রণালয় বরাবর এ প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

প্রস্তাবনায় বিচারপতি নিয়োগে আইন প্রণয়নের বিষয়ে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি ‘জুডিসিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’ গঠনের কথা বলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গণমাধ্যম কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলামের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সুপ্রিম কোর্টের বিচারক পদে নিয়োগের লক্ষ্যে উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাইপূর্বক সুপারিশ প্রেরণ করার জন্য অনুরোধ প্রাপ্তির পর কাউন্সিল এরূপ সুপারিশ প্রদান করবে মর্মে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, দেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বিগত ২১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট উভয় বিভাগের বিচারপতি ও সারাদেশের জেলা আদালতসমূহে কর্মরত বিচারকদের সম্মুখে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণে বিচার বিভাগ সংস্কারের রূপরেখা নির্ণীত করে একটি পরিপূর্ণ রোডম্যাপ তুলে ধরেন। যেখানে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে দেশের উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে আইন প্রণয়নের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেন।

এরই ধারাবাহিকতায় সুপ্রিম কোর্টসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত আইন, বিধি-বিধান, উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত, প্রথাসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিষদ গবেষণা পরিচালনাপূর্বক একটি প্রস্তাব আজ আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি ‘জুডিসিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’ গঠনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

বিশ্বের অনেক দেশেই, বিশেষত ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, কেনিয়া, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকায় উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন বা এরূপ প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের প্রস্তাবকৃত কাউন্সিলটি সংবিধানের ৯৫ ও ৯৮ অনুচ্ছেদের অধীনে বিচারক নিয়োগের জন্য সুপারিশ প্রেরণের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুরোধ জ্ঞাপনের ভিত্তিতে ওই পদে নিয়োগের সুপারিশ প্রেরণের জন্য প্রার্থীদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করবে মর্মে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে।

এছাড়া প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের বিষয়ে মতামত বা পরামর্শ গ্রহণের জন্য কাউন্সিল সংশ্লিষ্ট যেকোনো ব্যক্তিকে কাউন্সিলের সভায় আহ্বান করতে পারবে বা যেকোনো সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে কাউন্সিল কর্তৃক চাহিদাকৃত তথ্য উপস্থাপনের জন্য নির্দেশ দিতে পারবে মর্মে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে। কাউন্সিলটি গঠিত হলে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে দুপুরে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, মহাসচিব ও দুজন সহ-সভাপতির সমন্বয়ে মোট চারজনের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে তারা প্রধান বিচারপতি কর্তৃক ঘোষিত রোডম্যাপের সঙ্গে একাত্মতা জানান।

এছাড়া তারা বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া প্রধান বিচারপতির কাছে উপস্থাপন করেন।

বিশেষত তারা বিচারকদের গাড়ি নগদায়ন সুবিধা, আবাসন সুবিধা, চৌকি আদালতসহ দেশের সব আদালতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। প্রধান বিচারপতি অ্যাসোসিয়েশনের দাবিগুলো বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেবেন মর্মে তাদের আশ্বস্ত করেন।