দুর্নীতি, প্লেসমেন্ট শেয়ার বাণিজ্য ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের (সিএমএসএফ) সাবেক চেয়ারম্যান এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, এবং বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, নজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ঘুষ, পদোন্নতি-বদলি ও তদবির বাণিজ্য, প্লেসমেন্ট শেয়ার বাণিজ্য এবং প্রতিবন্ধী সাজিয়ে ছেলেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর মতো নানা অভিযোগ রয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব পদ থেকে অবসরের পর ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের (সিএমএসএফ) চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত হন।
নজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার আমলে প্রতিটি কাস্টম হাউস, ভ্যাট কমিশনারেট ও কর অঞ্চলের কমিশনারদের প্রতি মাসে ৫০ লাখ টাকা করে দিতে বাধ্য করা হতো। এই অবস্থায় তিনি নিজের পছন্দের লোকজনকে গুরুত্বপূর্ণ ও লাভজনক দপ্তরগুলোতে নিয়োগ দিতেন।
এছাড়া, দেশের কিছু ব্যবসায়ীদের ভয় দেখিয়ে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগও ওঠে। তিনি একটি গ্রুপকে উচ্চ শুল্ক অব্যাহতির সুযোগ দিয়েছিলেন, যা পরবর্তী সময়ে অন্যান্য ট্রাকের মাধ্যমে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হয়েছে, এতে সরকার কয়েকশ কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে।
সাবেক এই আমলার বিরুদ্ধে তার স্ত্রীর আয়কর ফাইলে ৬০ কোটি টাকা ট্রান্সফার করার অভিযোগও রয়েছে, যা পরে সংশ্লিষ্ট আয়কর কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার মাধ্যমে চাপা দেয়া হয়। বর্তমানে এনবিআর বিষয়টি তদন্ত করছে।
এছাড়া, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব থাকাকালে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুই ছেলের নামে বেস্ট হোল্ডিংয়ের ১০ লাখ প্লেসমেন্ট শেয়ার নেন। ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে ফারাবি এন এ রহমান এবং ফুয়াদ এন এ রহমানের নামে এই শেয়ার দুটি সংগ্রহ করা হয়, যার বিপরীতে কোম্পানির বাজারে তালিকাভুক্ত হতে সহায়তা করার অভিযোগও আছে।
গত ৬ অক্টোবর আত্মগোপনে থাকা নজিবুর রহমান স্থানীয় পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার হন। এর আগে, বিএনপি অফিসে পুলিশের অভিযানে গুলিতে মকবুল নামে দলের একটি কর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় তাকে আসামি দেখানো হয়।