ঈদের টানা ছুটিতে রাজধানী ঢাকা ছেড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। ফলে এখন অনেকটাই ফাঁকা হয়ে গেছে ঢাকা। এমন ফাঁকা ঢাকায় যানজট বিহীন ও ভোগান্তিহীন চলাচলে স্বস্তি প্রকাশ করেছে নগরবাসী।
ঈদুল আজহার তৃতীয় দিন আজ। বিগত দুই দিনের তুলনায় আজ সড়কে কিছুটা বেড়েছে যানবাহন ও সাধারণ মানুষের চলাচল। তবে কর্মব্যস্ত দিনের মতো চলাচলের দুর্ভোগ নেই আজ। আজ সোমবার (৯ জুন) রাজধানীর শ্যামলী, কল্যাণপুর ও শিশুমেলা ঘুরে সড়কের এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিগত দুদিন সড়কে যানবাহনের উপস্থিতি ছিল একদমই হাতে গোনা। ফলে যানবাহন সংকটে কিছুটা বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছিল সাধারণ মানুষের চলাচলে। তবে আজ সকাল থেকেই সড়কে যানবাহন বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে প্রয়োজনের তাগিদে বিভিন্ন গন্তব্যগামী সাধারণ মানুষের চলাচলও।
রাজধানীর কোথাও এখন পর্যন্ত যানজটের চিত্র দেখা যায়নি। তবে বাস স্টপেজ গুলোতে গাড়ির অপেক্ষায় যাত্রীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এছাড়াও সড়কে নিজস্ব পরিবহন, ব্যটারিচালিত অটোরিকশা এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশার উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। সবমিলিয়ে ফাঁকা রাজধানীতে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করে স্বস্তি প্রকাশ করছেন নগরীর বুকে থেকে যাওয়া সাধারণ মানুষ।
রাজধানীর কল্যাণপুরে কথা হয় গুলিস্তানগামী যাত্রী আল-আমিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঢাকা শহরতো এই ছুটির সময় উন্নত শহরের মতো হয়ে যায়। কোথাও কোনো যানজট নেই, বাসে ঝুলতে হয় না। ঢাকা শহরটা সবসময় এমন থাকলে বেশ ভালোই লাগতো।
আমিনবাজার থেকে মৌমিতা পরিবহনের বাসে উঠেছেন রাকিবুল ইসলাম, গন্তব্য যাত্রাবাড়ী। তিনি বলেন, আমিনবাজার থেকে কল্যাণপুর আসতে সময় লেগেছে মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিট। যেখানে সাধারণত যে সময় অফিস চলে সেই সময় এক ঘণ্টার ওপরেও লাগে। ঢাকা শহরের রাস্তা যদি সবসময় এমন থাকতো তাহলে মানুষের অনেক সময় বেঁচে যেত। শহরটাও উন্নত হতো।
রাজধানীর শ্যমলী বাস স্টপেজে দাঁড়িয়ে ছিলেন মো. আনিস। গন্তব্য নিউমার্কেট। আনিস বলেন, বোনের বাসায় এসেছিলাম কোরবানির মাংস দিতে। যদিও আসার সময় গাড়ি পেতে কিছুটা সময় লেগেছে, তারপরও খুব কম সময়ের মধ্যে চলে আসতে পেরেছি। গাড়িও একদম ফাঁকা ছিল। ছুটির দিনগুলোতে ঢাকা শহরে চলাচল করতে বেশ ভালোই লাগে।
বিগত দিনগুলোর তুলনায় আজ সড়কে যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকটা খুশি পরিবহন শ্রমিকরা। মৌমিতা পরিবহনের চালকের সহকারী খোরশেদ আলম বলেন, আগের দুদিন তেমন কোনো যাত্রী ছিল না। আজ মোটামুটি যাত্রী আছে। রাস্তায় গাড়িও বেড়েছে। তবে সকাল থেকে এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো যানজট পাইনি।
গাবতলী লিংক পরিবহনের চালকের সহকারী মো. হাফিজুল বলেন, রাস্তায় যাত্রী কম। যাত্রী কম থাকার কারণে মালিক সবগুলো গাড়ি বের করেননি। তবে আগের দুই দিনের তুলনায় আজ যাত্রী বেড়েছে।
সাধারণত ঈদের সময় মানুষ পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ছুটে যায়। এ বছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। রেলওয়ে স্টেশন, বাস টার্মিনাল আর লঞ্চঘাটের সেই ঈদের ভিড়ের ছাপ এখনো এই ফাঁকা শহরে স্পষ্ট। শহরের বাসিন্দাদের বড় একটা অংশ এখন গ্রামে, পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগিতে ব্যস্ত।
ঈদুল আজহার আগে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শেষ কর্মদিবস ছিল গত বুধবার। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয় টানা ছুটি, চলবে ১৪ জুন পর্যন্ত।