গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাসের মধ্যে চলা যুদ্ধ চার দিনের জন্য বন্ধ হয়েছে। এরই মধ্যে চলছে বন্দি বিনিময়। গাজা উপত্যকায় হামলা বন্ধ রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর জেরেই দীর্ঘ ৪৮ দিন পর মৃত্যুর ভয় ছাড়া রাত কাটালো গাজাবাসী। খবর আল-জাজিরার।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চল খান ইউনিসে অবস্থান করছেন আল-জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘যুদ্ধ বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনিরা সাত সপ্তাহের মধ্যে প্রথমবারের মতো ঘুমের মধ্যে নিহত হওয়ার ভয় না নিয়ে রাত কাটিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘৪৮ দিনের মধ্যে এটা প্রথম রাত ছিল যেসময় কি না গাজাবাসী নির্ভয়ে ঘুমাতে পেরেছে। ঘুমের মধ্যে ইসরায়েলি বোমার আঘাতে প্রাণ হারানোর ভয় তাদের তাড়া করে ফেরেনি।’
হানি মাহমুদ বলেন, ‘গাজাবাসী মনে করছে, এটা অসম্পূর্ণ ও অযৌক্তিক। আমরা সেই ১৭ লাখ মানুষের কথা বলছি যারা কি না গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে কেন্দ্রীয় বা দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস ও রাফা শহরে চলে এসেছে। জীবন বাঁচাতে অবরুদ্ধ উপত্যকায় এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছুটে বেড়াচ্ছে তারা। কেউই নিজ বাড়িতে ফিরতে পারছে না।’
এই সাংবাদিক বলেন, ‘তাদের মাঝে একটি হতাশা ও ক্ষোভ কাজ করছে। তারা ক্রমাগত জিজ্ঞাসা করছে, কেন তারা বাড়িতে ফিরতে পারছে না। যুদ্ধবিরতিতে কেন এই শর্তটি যুক্ত করা হয়নি তাদের সবার মুখে একই প্রশ্ন। যুদ্ধবিরতি নিয়েও তাদের মধ্যে হতাশা রয়ে গেছে।’
আল-জাজিরা জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি সত্বেও গতকাল শুক্রবার ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে তিন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। আহতও হয়েছে বেশ কয়েকজন। হতাহতের শিকার ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর নির্দেশিত বিভক্তকারী সীমানা লঙ্ঘন করেছিল। গাজার উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলকে বিভক্ত করতেই এই সীমানাটি তৈরি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
হানি মাহমুদ বলেন, ‘গতকাল হতাহতের শিকার পরিবারগুলোর সদস্যরা তাদের বাড়িতে ফিরতে চেয়েছিল। তাদের বসতবাড়ি কেমন আছে দেখতে যেতে চেয়েছিল। সেখানে প্রতিবেশী বা পরিবারের সদস্যরা রয়েছে কি না তা দেখতে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু, তেমনটা তারা করতে পারেনি। জীবন হারাতে হয়েছে তাদের।’
এদিকে, বন্দি বিনিময়ে আওতায় ৩৯ ফিলিস্তিনিকে ইসরায়েলের বিভিন্ন জেল বা বন্দিশালা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। আর ২৪ জনকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। আজও বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি বান্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং এর তালিকা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে তারা।