জামালপুরে মাদারগঞ্জে উপজেলায় ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনায় পাঁচ দিনব্যাপী জামাই মেলা শুরু হয়েছে। মেলার প্রথম দিনেই হাজারও মানুষের ভিড় ছিল। রোববার (১৭ ডিসেম্বর) মেলার দ্বিতীয় দিন চলছে। মেলা চলবে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। উপজেলার তেঘরিয়া এলাকায় একটি মাঠে ৫ দিনব্যাপী ‘জামাই মেলা’ শুরু হয়েছে।
জামাই মেলায় ৩০০টি বিভিন্ন ধরনের দোকান রয়েছে। এর মধ্যেই এক পাশে সারি সারি মাছের দোকান। সেগুলোতে আছে, বোয়াল, কাতল, বাগাড়, আইড় চিতলসহ বিভিন্ন জাতের মাছ। সেসব মাছের ওজন ৫ থেকে ২০ কেজি বা তারও বেশি। মেলায় বিক্রি হচ্ছে হরেক প্রজাতির মাছ, মিষ্টিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।
জামাই মেলার মূল উদ্দ্যেশ্য হলো ‘জামাই’। এই মেলার সময় আশপাশের গ্রামগুলোতে মেয়ে আর জামাইকে দাওয়াত করে আনা হয়। জামাতারা মেলা থেকে বড় বড় মাছ কেনেন শ্বশুরবাড়ি জন্য। আবার জামাইকে মেলায় কেনাকাটার জন্য শশুর-শাশুড়ি টাকা দেন। সেই টাকা দিয়েই মেলা থেকে কেনাকাটা করে জামাই শ্বশুরবাড়িতে যান। গত দুই বছর ধরে স্থানীয় এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ ‘জামাই মেলা’ শুরু হয়েছে।
মেলার আয়োজক কমিটি ও স্থানীয়রা বলেন, গত বছর থেকে জামাই মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। এই মেলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আত্মীয়-স্বজনদের সম্পর্ক আরও গভীর করার। এই মেলার উপলক্ষ্যে কয়েক এলাকার লোকজন তাদের আত্মীয়-স্বজন ও মেয়ে, জামাইকে দাওয়াত করে ডেকে আনা হয়। জামাই মেলা থেকে জামাইরা কেনাকাটা করে শ্বশুরবাড়ি যান। মেলায় আত্মীয়-স্বজন ও এলাকার জামাই ঘুরতে আসে।
মেলায় ঘুরতে আসা আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে একজন বলেন, এই মেলায় মেয়ে জামাইকে দাওয়াত করে আনা হয়েছে এবং পুরনো আত্মীয়-স্বজনসহ সবাইকে দাওয়াত করে এনেছি। এই মেলার মধ্যে আত্মীয়স্বজনদের সম্পর্ক আরও বেশি সুন্দর ও গভীর হবে। জামাইকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছি, মেলা থেকে কেনাকাটা করার জন্য। মেলা উপলক্ষ্যে কয়েকটি গ্রামের মানুষ তাদের মেয়ে জামাইকে দাওয়াত করে এনেছে।
আবদুল বারিক নামে একজন বলেন, আমার শ্বশুর আমাকে দাওয়াত করে এনেছে। গতকাল এসেছি শ্বশুরবাড়িতে, আজ মেলায় আসার আগে শ্বশুর হাজার টাকা দিয়েছে। শাশুড়ি আর কিছু টাকা দিয়েছে লুকিয়ে। মেলা থেকে বড় একটি মাছ কিনেছি। শশুর শাশুড়ির জন্য পান সুপারি নিয়েছি। আমার একটি ছোট শালিকা রয়েছে তার জন্য এখন কিছু মিষ্টি জাতীয় খাবার নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে যাব।
জামাই মেলার শৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়ক আশরাফুল আলম বলেন, গত বছর থেকে জামাই মেলার আয়োজন শুরু করেছি। গত বছরের মেলা জাঁকজমক, সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজন শেষ হয়েছে। এ বছরে প্রথম দিনই মেলায় ছিল উপচে পড়া ভিড়। মেলায় সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। মেলায় শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা খুবই দায়িত্বশীল।