২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর মৃত্যু হয়েছে দিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনার। এরপর কেটে গেছে তিন বছরেরও বেশি সময়। অবশেষে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে চলা কর ফাঁকির মামলা থেকে মুক্তি পেলেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। ইতালির সুপ্রিম কোর্ট ম্যারাডোনাকে করফাঁকি মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।
সর্বকালের সেরা ফুটবলার ম্যারাডোনার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি লিখটেনস্টাইনের প্রক্সি কোম্পানি ব্যবহার করে ১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত তখনকার ক্লাব নাপোলি থেকে পাওয়া ইমেজ স্বত্বের কর ফাঁকি দিয়েছিলেন। ৩০ বছর ইতালিয়ান রাজস্ব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মামলা চলার পর জাগা গেলো, ম্যারাডোনা নির্দোষ।
মৃত্যুর পরও জিতে চলেছেন ম্যারাডোনা। তার এই অন্যরকম জয় নিয়ে আইনজীবী অ্যাঞ্জেলো পিসানি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এটা শেষ হলো। আমি স্পষ্টভাবে নির্ভয়ে বলতে পারি যে ম্যারাডোনা কখনোই কর ফাঁকি দেননি।’
১৯৯০ সালে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির বিপক্ষে কর ফাঁকি অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়। ম্যারাডোনার বিপক্ষে মোট ৩ কোটি ৭০ লাখ ইউরো কর ফাঁকির অভিযোগও তোলা হয়। এরপর বিভিন্ন সময় ইতালি সফরকালে তার বেশ কিছু সম্পদও বাজেয়াপ্ত করা হয়। এ নিয়ে লম্বা সময় ধরে আইনি লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েন ম্যারাডোনা। যদিও মামলার নিষ্পত্তির আগেই, ২০২০ সালে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন আর্জেন্টিনাকে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ উপহার দেয়ার নায়ক।
ম্যারাডোনার মৃত্যু হলেও আইনী লড়াই থামেনি। শেষ পর্যন্ত এ লড়াইয়ে জয় পেলেন ম্যারাডোনা। পিসানি বলেছেন, ‘চূড়ান্ত রায় ভক্ত, ফুটবলের মূল্যবোধ ও ম্যারাডোনার স্মৃতির প্রতি ন্যায়বিচার করেছে। ৩০ বছর ধরে যে নিপীড়ন তার ওপর চলছিল, তারও সমাপ্তি ঘটল। পাশাপাশি এখন তার উত্তরাধিকারীদের ক্ষতিপূরণ দাবি করার আইনগত অধিকার রয়েছে। আমি আশা করি, তারাই এ সুযোগ গ্রহণ করবে। তাদের বাবার স্মৃতির উদ্দেশে তারা এটি করবে।’
উল্লেখ্য, ১৯৮৪ সালে বার্সেলোনা থেকে ইতালিয়ান ক্লাব ন্যাপোলিতে যোগ দেন ম্যারাডোনা। তার হাত ধরে পুরোপুরি বদলে যায় ন্যাপোলি। ১৯৮৬-৮৭ ও ১৯৮৯-৯০ সালে নাপোলিকে লিগ শিরোপা এবং ১৯৮৮-৮৯ সালে উয়েফা কাপ জেতান এই কিংবদন্তি। ম্যারাডোনার এ অবদান এখনো শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন নেপলসের আধিবাসীরা। ভালোবেসে অনেকে তাকে ‘নেপলসের রাজা’ বলেও ডাকেন।