বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ শেষে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ওআইসি, রাশিয়া, কানাডা, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিস্তিন এবং গাম্বিয়াসহ বিদেশী অন্যান্য পর্যবেক্ষকরা। রোববার (৭ জানুয়ারি) ভোটগ্রহণ শেষে বিকেলে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন তারা।
নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা সন্তুষ্টির কথা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। ভোটার এবং প্রার্থীর এজেন্টদের সঙ্গে কথা বলে তারা সন্তুষ্ট। বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা জানিয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়ারও প্রশংসা করেন।
ওআইসির নির্বাচন ইউনিটের প্রধান শেখ মোহাম্মদ বন্দর সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘পর্যবেক্ষক হিসেবে সহিংসতা কোনো চিহ্ন আমাদের চোখে পড়েনি। আমি অবাক হয়েছি, দোকান-পাট বন্ধ কেন! সড়কে কোনো মানুষ দেখা যায়নি। শহর ছিল শান্ত। নির্বাচনী পরিবেশ দেখে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা ভালো নির্বাচনী প্রক্রিয়া দেখেছি। আমি এখনো জানি না কত শতাংশ ভোট পড়েছে। সকালে যখন আমরা কেন্দ্র পরিদর্শন করি, তখন ভোটার উপস্থিতি খুবই কম ছিল। মানুষ আশা করছিল উপস্থিতি বাড়বে। যদি বাধ্যবাধকতা না থাকে, আপনি কেন্দ্রে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং কেউ আপনাকে ভোট দিতে বাধ্য করতে পারে না। ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে আপনাদের দেশে কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই, তাই এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারি না।
কানাডার এমপি চন্দ্র আর্য বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের জন্য ঐতিহাসিক দিন। আমরা কিছু সহিংসতা নোটিশ করেছি তবে রাজনৈতিক দল শান্তিপূর্ণভাবে মানুষের কাছে নির্বাচনী ক্যাম্পেইন করতে পেরেছে। প্রার্থী এবং রাজনৈতিক দলগুলোর বিচারিক সেবা পাওয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা ছিল। অনেক পুলিশ স্টেশনেই শর্তহীনভাবে প্রবেশাধিকার ছিল। আমরা যে কেন্দ্রেই যেতে চেয়েছি প্রবেশাধিকার পেয়েছি। নারী, পুরুষ সবার সঙ্গেই আমরা কথা বলেছি। হিন্দু বৈদ্ধ, খৃষ্টান সব সম্প্রদায়ের সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলেছি। নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানাই স্বুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য।’
কানাডার আরেক পর্যবেক্ষক ভিক্টর বলেন, ‘অবাধে চলাফেরা করার সুযোগ ছিল, মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। এটি একটি অবাধ নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত ভালোভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কানাডায়ও ৪৩ শতাংশ ভোট পড়েছিল নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি। বাংলাদেশের মানুষকেও কেউ ভোট প্রদান করতে বাধা দেয়নি।’
নাইজেরিয়ান সিনেটর প্যাটরিক সি বলেন, আমরা নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা জেলা পরিদর্শন করেছি। মানুষকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে দেখেছি। আমরা পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে দেখেছি ভোটাররা কাপড়ের আড়ালে বসে ভোট দিচ্ছে। এটাই স্বচ্ছতা। নির্বাচন কমিশনও স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করছে। শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়ার জন্য সবসবই আমরা বাংলাদেশের নাগরিকদের উৎসাহ জানাই।’
আমেরিকান গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিসের সিইও আলেকজান্ডার বি গ্রে বলেন, এদেশের মিডিয়া স্বাধীনভাবে কাজ করছে। অধিকাংশ দেশে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ভোট পড়ে। তবে বাংলাদেশে কম ভোট পড়লেও আমরা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখেছি। আমি দেখেছি খুবই স্ট্যান্ডার্ড প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হচ্ছে।
ভোটের পরিবেশের প্রশংসায় করে আরব পার্লামেন্টের সদস্য আবদিহাকিম মোয়াল্লিম আহমেদ বলেন, আমরা বেশ কিছু ভোট কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করেছি। নির্বাচন প্রক্রিয়া ছিল খুবই স্মুথ। এই নির্বাচন অন্যান্য দেশের জন্য এক আলোকোজ্জ্বল উধাহরণ। এটি শান্তি ও একতার উদাহরণ।