টানা ঊর্ধ্বমুখীতার পর দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসেই কমেছে মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। এতে এক সপ্তাহেই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন ৬ হাজার কোটি টাকার ওপরে কমে গেছে।
বাজার মূলধন ও মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি গত সপ্তাহে কমেছে লেনদেনের গতি। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ১২ শতাংশের ওপরে। আর প্রধান মূল্যসূচক কমেছে দশমিক ৫৮ শতাংশ। তবে বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচক বেড়েছে।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩০৯টির। আর ১৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অর্থাৎ ৭৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে।
সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম কমায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬৬ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা। যা গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৭২ হাজার ৫২৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৬ হাজার ৬০ কোটি টাকা বা দশমিক ৭৮ শতাংশ।
এদিকে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ দশমিক ১০ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৫৯ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। প্রধান মূল্যসূচক কমলেও বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক বেড়েছে। গত সপ্তাহজুড়ে সূচকটি বেড়েছে ১৮ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৮৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ২১ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ।
তবে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক কমেছে। গত সপ্তাহে এই সূচক কমেছে ৫ দশমিক ১১ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ২৪ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
প্রধান মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও কমেছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪৮৮ কোটি ৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ১ হাজার ৬৯৫ কোটি ৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ২০৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকা বা ১২ দশমিক ২১ শতাংশ।
আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৭ হাজার ৪৪০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ৮ হাজার ৪৭৫ কোটি ২০ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে হাজার ১ হাজার ৩৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা বা ১২ দশমিক ২১ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেস্ট হোল্ডিংয়ের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৯৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৭৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা। ২২৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ফরচুন সুজ, আইএফআইসি ব্যাংক, ফু-ওয়াং সিরামিক, মালেক স্পিনিং, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন এবং আইটি কনসালটেন্টস।