ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে পরিবারের কাছে ফিরলেন নাবিকরা

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৯:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪
  • 103

অবশেষে ফুরোলো অপেক্ষার পালা। এক মাসেরও বেশি সময় সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকার পর মুক্তি পেলেও স্বজনদের কাছে ফেরার অপেক্ষা ফুরোচ্ছিল না এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের বাংলাদেশি ২৩ নাবিকের। জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার এক মাস পর এবার দেশে ফিরেছেন তারা। আর তাদের বরণ করে নিতে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে দেখা গেল পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের ভিড়।

মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে ফেরেন জাহাজটির নাবিকেরা। বন্দরের এনসিটি-১ বার্থে পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা আবেগঘন পরিবেশে তাদের বরণ করে নেন। এসময় নাবিক ও স্বজনদের অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এদিন বিকেলে নাবিকেরা এমভি জাহান মণি-৩ নামের কেএসআরএম গ্রুপের একটি লাইটার জাহাজে বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনালে পৌঁছান। জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া নাবিকদের বরণ করে নিতে আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন তাদের স্বজনরা। এসময় স্বজনদের অনেকে প্রিয় মানুষকে ফিরে পেয়ে ফুল হাতে নাবিকদের বরণ করে নেন।

উদ্ধার জাহাজের নাবিক ও ক্রুরা হলেন, জাহাজের মাস্টার মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, চিফ অফিসার আতিক উল্লাহ খান, সেকেন্ড অফিসার মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, থার্ড অফিসার এন মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম, ডেক ক্যাডেট সাব্বির হোসাইন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার এ এস এম সাইদুজ্জামান, সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌফিকুল ইসলাম, থার্ড ইঞ্জিনিয়ার রোকন উদ্দিন, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার তানভীর আহমেদ, ইঞ্জিনি ক্যাডেট আইয়ুব খান, ইলেকট্রিসিয়ান ইব্রাহীম খলিল উল্লাহ, ক্রু মো. আনোয়ারুল হক, আসিফুর রহমান, সাজ্জাদ হোসেন, জয় মাহমুদ, নাজমুল হক, আইনুল হক, মো. শামসুদ্দিন, আলী হোসেন, মোশাররফ হোসেন শাকিল, শরিফুল ইসলাম, নুর উদ্দিন ও সালেহ আহমদ।

এর আগে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়ার বহির্নোঙরে নোঙর করে। সেখান থেকে এমভি জাহান মণি-৩ জাহাজে নাবিকেরা আজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছান।

এসময় ২৩ নাবিকের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও চট্টগ্রামের সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী, বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম সোহায়েল, কেএসআরএম গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহানসহ বন্দর কর্তৃপক্ষ, নৌবাহিনী, পুলিশ ও কেএসআরএম গ্রুপের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর মোজাম্বিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাত হয়ে ৫৫ হাজার মেট্রিক টন চুনাপাথর নিয়ে দেশে ফেরে জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। গতকাল সোমবার দুপুরে জাহাজটি দেশের জলসীমায় প্রবেশ করে এবং কুতুবদিয়ায় নোঙর করে।

গত ৪ মার্চ আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হয় এমভি আবদুল্লাহ। ১২ মার্চ বাংলাদেশি ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। দেশটির উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগরে জাহাজটি জিম্মি করা হয়।

এর ৩২ দিন পর গত ১৪ এপ্রিল জাহাজটি মুক্ত করে দেয় জলদস্যুরা। এরপরই সেটি সোমালিয়া উপকূল থেকে আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। টানা এক সপ্তাহের সমুদ্রযাত্রা শেষে ২১ এপ্রিল বিকেলে জাহাজটি আল হামরিয়াহ বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছায়।

ট্যাগস

দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে পরিবারের কাছে ফিরলেন নাবিকরা

আপডেট সময় ০৯:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪

অবশেষে ফুরোলো অপেক্ষার পালা। এক মাসেরও বেশি সময় সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকার পর মুক্তি পেলেও স্বজনদের কাছে ফেরার অপেক্ষা ফুরোচ্ছিল না এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের বাংলাদেশি ২৩ নাবিকের। জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার এক মাস পর এবার দেশে ফিরেছেন তারা। আর তাদের বরণ করে নিতে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে দেখা গেল পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের ভিড়।

মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে ফেরেন জাহাজটির নাবিকেরা। বন্দরের এনসিটি-১ বার্থে পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা আবেগঘন পরিবেশে তাদের বরণ করে নেন। এসময় নাবিক ও স্বজনদের অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এদিন বিকেলে নাবিকেরা এমভি জাহান মণি-৩ নামের কেএসআরএম গ্রুপের একটি লাইটার জাহাজে বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনালে পৌঁছান। জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া নাবিকদের বরণ করে নিতে আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন তাদের স্বজনরা। এসময় স্বজনদের অনেকে প্রিয় মানুষকে ফিরে পেয়ে ফুল হাতে নাবিকদের বরণ করে নেন।

উদ্ধার জাহাজের নাবিক ও ক্রুরা হলেন, জাহাজের মাস্টার মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, চিফ অফিসার আতিক উল্লাহ খান, সেকেন্ড অফিসার মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, থার্ড অফিসার এন মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম, ডেক ক্যাডেট সাব্বির হোসাইন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার এ এস এম সাইদুজ্জামান, সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌফিকুল ইসলাম, থার্ড ইঞ্জিনিয়ার রোকন উদ্দিন, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার তানভীর আহমেদ, ইঞ্জিনি ক্যাডেট আইয়ুব খান, ইলেকট্রিসিয়ান ইব্রাহীম খলিল উল্লাহ, ক্রু মো. আনোয়ারুল হক, আসিফুর রহমান, সাজ্জাদ হোসেন, জয় মাহমুদ, নাজমুল হক, আইনুল হক, মো. শামসুদ্দিন, আলী হোসেন, মোশাররফ হোসেন শাকিল, শরিফুল ইসলাম, নুর উদ্দিন ও সালেহ আহমদ।

এর আগে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়ার বহির্নোঙরে নোঙর করে। সেখান থেকে এমভি জাহান মণি-৩ জাহাজে নাবিকেরা আজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছান।

এসময় ২৩ নাবিকের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও চট্টগ্রামের সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী, বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম সোহায়েল, কেএসআরএম গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহানসহ বন্দর কর্তৃপক্ষ, নৌবাহিনী, পুলিশ ও কেএসআরএম গ্রুপের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর মোজাম্বিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাত হয়ে ৫৫ হাজার মেট্রিক টন চুনাপাথর নিয়ে দেশে ফেরে জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। গতকাল সোমবার দুপুরে জাহাজটি দেশের জলসীমায় প্রবেশ করে এবং কুতুবদিয়ায় নোঙর করে।

গত ৪ মার্চ আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হয় এমভি আবদুল্লাহ। ১২ মার্চ বাংলাদেশি ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। দেশটির উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগরে জাহাজটি জিম্মি করা হয়।

এর ৩২ দিন পর গত ১৪ এপ্রিল জাহাজটি মুক্ত করে দেয় জলদস্যুরা। এরপরই সেটি সোমালিয়া উপকূল থেকে আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। টানা এক সপ্তাহের সমুদ্রযাত্রা শেষে ২১ এপ্রিল বিকেলে জাহাজটি আল হামরিয়াহ বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছায়।