এমপিওভুক্ত বেসরকারি কলেজে ডিগ্রি স্তরে কর্মরত তৃতীয় শিক্ষকদের ‘সহকারী অধ্যাপক’ পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে। একই সঙ্গে উচ্চতর বেতন স্কেলও পাবেন তারা। এ নিয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সোমবার (৩ জুন) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়। এতে সই করেছেন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. তৌহিদুল ইসলাম।
নির্দেশনায় বলা হয়, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১-এর ১১.৫ অনুচ্ছেদে বর্ণিত অন্যান্য প্রভাষকরা এমপিওভুক্তির ১০ বছর সন্তোষজনক চাকরিপূর্তিতে বেতন স্কেলের গ্রেড ৯ থেকে ৮ প্রাপ্য হবেন। পরবর্তী ৬ বছরের মধ্যে অর্থাৎ ধারাবাহিকভাবে এমপিওভুক্তির ১৬ বছর সন্তোষজনক চাকরিপূর্তিতে ‘সহকারী অধ্যাপক’ পদে পদোন্নতি পাবেন। বাক্যটিতে ‘অন্যান্য প্রভাষক’ বলতে এমপিওভুক্ত ডিগ্রি স্তরে কর্মরত তৃতীয় শিক্ষক বোঝাবে।
এতে আরও বলা হয়, এমপিওভুক্ত বেসরকারি কলেজে ডিগ্রি স্তরে কর্মরত তৃতীয় শিক্ষকরা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১ এর ১১.৫ অনুচ্ছেদ এবং ৩৭.০০.০০০০.০৭৪.০৩০.০০১.২০১৭ (অংশ-১) ১৪৭ সংখ্যক স্মারকে জারি করা পরিপত্র অনুযায়ী সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি বা উচ্চতর স্কেল প্রাপ্য হবেন। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
গত ১৩ মার্চ ডিগ্রি স্তরের তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির নির্দেশ দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালককে চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, এমপিওভুক্ত হওয়া ডিগ্রির তৃতীয় শিক্ষকরা প্রভাষক হিসেবে চাকরি শুরু করবেন নবম গ্রেডে ২২ হাজার ৫০০ টাকা বেতনে। এর সঙ্গে তারা অল্প কিছু বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা পাবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালা অনুযায়ী ডিগ্রি স্তরে একটি বিষয় পড়ানোর জন্য একটি কলেজে তিনজন শিক্ষক নিয়োগ দিতে হয়। কিন্তু এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো অনুযায়ী কলেজে দুজন শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করা যায়।
ফলে তিনজনকে নিয়োগ দিলেও একজন এমপিওভুক্তির বাইরে থেকে যান। কলেজগুলোতে ওই শিক্ষককে ‘তৃতীয় শিক্ষক’ বলা হয়। এমপিওভুক্ত হতে তৃতীয় শিক্ষকরা উচ্চ আদালতে গেলে আদালত তাদের পক্ষে আদেশ দেন। এরপর তৃতীয় শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করা শুরু হয়।
২০১০ সালের আগ পর্যন্ত বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত তৃতীয় শিক্ষকদের ২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট এমপিওভুক্তির আদেশ জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অধিকাংশ তৃতীয় শিক্ষক এমপিওভুক্ত হন। ২০১০ সালের পর নিয়োগপ্রাপ্ত বিভিন্ন ডিগ্রি কলেজে প্রায় ৮৪১ জন তৃতীয় শিক্ষক নিযুক্ত হন এবং তারা এমপিওভুক্ত হতে পারেননি। এ শিক্ষকরা অর্থ বিভাগ থেকে অনুমোদিত জনবল কাঠামোভুক্ত নয়।
এ কারণে তৃতীয় শিক্ষকদের যোগ্যতা, বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত ও কর্মরত থাকা সাপেক্ষে এমপিওভুক্ত করতে সম্মতির জন্য অনুরোধ জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি পেলে আট শর্তে বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির জন্য মাউশি অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মাউশি সূত্র জানায়, ৯টি অঞ্চল থেকে ৭৬৮ জন শিক্ষকের তথ্য পাওয়া গেছে। এরমধ্যে নতুন করে এমপিওভুক্ত ৫২টি কলেজের শিক্ষকরা রয়েছেন। এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী ডিগ্রি স্তরের জন্য কাম্য শিক্ষার্থী আছে কি না, তা যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শেষ। চূড়ান্ত তালিকা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পর এমপিওভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলমান।