ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পদত্যাগ করেছেন সিইসি ও ৪ ইসি

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০১:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 23

পদত্যাগ করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ পাঁচ কমিশনার। পাঁচ বছরের জন্য দায়িত্ব নির্ধারণ করা থাকলেও মাত্র আড়াই বছরেই বিদায় নিলো নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় এক সংবাদ সম্মেলনে সিইসি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে ইসি সদস্যরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে যাবেন বলেও জানা গেছে।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর নির্বাচন কমিশন চুপ হয়ে যায়। গত এক মাস প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনাররা অনিয়মিত অফিস করতে শুরু করেন। এর মধ্যে অবশ্য দুদিন তারা জরুরি সভা করেছে। তিনটি দলকে নিবন্ধনও দিয়েছে এ সময়ে।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে নিজেরা আলোচনা করেছেন। সেখানেই তাদের পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত হয়। একইসঙ্গে গণমাধ্যম ডেকে পদত্যাগের কারণসহ সার্বিক বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার বিষয়ে সবাই একমত হন।

বুধবার বিকালে নির্বাচন ভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ‘পদত্যাগের’ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের বলেন, ‘কাল (বৃহস্পতিবার) জানাবো। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলন করে সব কিছু জানানো হবে।’

জানা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর নির্বাচন কমিশন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করেছিল বর্তমান কমিশন। জানা গেছে, প্রথমে রাষ্ট্রপতি সাক্ষাতের সময় দিলেও পরে তা বাতিল করা হয়।

এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগসহ নির্বাচন কমিশন সংস্কারের দাবিতে ইসি সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছে ‘নাগরিক সমাজ’। বিক্ষোভে নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের পাশাপাশি সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এম নুরুল হুদা ও রকিব উদ্দিন আহমেদের বিচার চাওয়া হয়।

এদিকে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক মাস পার হচ্ছে আজ। ইতোমধ্যে সংসদ ভেঙে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। আন্দোলনের মুখে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আওয়ামী লীগ আমলে নিয়োগ পাওয়া আইন অঙ্গনের অনেকে পদত্যাগ করেছেন। পুলিশ, প্রশাসনসহ সবখানে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। সবশেষ স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীও পদত্যাগ করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের পদত্যাগের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে বারবার। বর্তমান নির্বাচন কমিশনও পদত্যাগের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।

২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি দেশের ত্রয়োদশ সিইসি হিসেবে নিয়োগ পান সাবেক আমলা হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন এই কমিশন। তাদের পরিচালনায় ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হয়। এছাড়া এই আড়াই বছরে দেড় সহস্রাধিক পদে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচন, উপনির্বাচন করেছে তারা।

২০২২ সালে নতুন কমিশন গঠনের আগে আকস্মিকভাবেই আইন প্রণয়ন হয়, আর সেই আইনের অধীনে প্রথম নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নেন কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ পাঁচ জন। যদিও দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ ইসিতে নিবন্ধিত বেশিরভাগ দল হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশনকে মেনে নেয়নি। ইসির সংলাপের আহ্বানও প্রত্যাখ্যান করেছিল বিএনপিসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন দল ও জোট। এই কমিশনের আমলে গত জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনও বর্জন করে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল। শুধু আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্র দলগুলো ওই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।

ট্যাগস

পদত্যাগ করেছেন সিইসি ও ৪ ইসি

আপডেট সময় ০১:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পদত্যাগ করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ পাঁচ কমিশনার। পাঁচ বছরের জন্য দায়িত্ব নির্ধারণ করা থাকলেও মাত্র আড়াই বছরেই বিদায় নিলো নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় এক সংবাদ সম্মেলনে সিইসি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে ইসি সদস্যরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে যাবেন বলেও জানা গেছে।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর নির্বাচন কমিশন চুপ হয়ে যায়। গত এক মাস প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনাররা অনিয়মিত অফিস করতে শুরু করেন। এর মধ্যে অবশ্য দুদিন তারা জরুরি সভা করেছে। তিনটি দলকে নিবন্ধনও দিয়েছে এ সময়ে।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে নিজেরা আলোচনা করেছেন। সেখানেই তাদের পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত হয়। একইসঙ্গে গণমাধ্যম ডেকে পদত্যাগের কারণসহ সার্বিক বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার বিষয়ে সবাই একমত হন।

বুধবার বিকালে নির্বাচন ভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ‘পদত্যাগের’ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের বলেন, ‘কাল (বৃহস্পতিবার) জানাবো। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলন করে সব কিছু জানানো হবে।’

জানা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর নির্বাচন কমিশন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করেছিল বর্তমান কমিশন। জানা গেছে, প্রথমে রাষ্ট্রপতি সাক্ষাতের সময় দিলেও পরে তা বাতিল করা হয়।

এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগসহ নির্বাচন কমিশন সংস্কারের দাবিতে ইসি সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছে ‘নাগরিক সমাজ’। বিক্ষোভে নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের পাশাপাশি সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এম নুরুল হুদা ও রকিব উদ্দিন আহমেদের বিচার চাওয়া হয়।

এদিকে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক মাস পার হচ্ছে আজ। ইতোমধ্যে সংসদ ভেঙে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। আন্দোলনের মুখে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আওয়ামী লীগ আমলে নিয়োগ পাওয়া আইন অঙ্গনের অনেকে পদত্যাগ করেছেন। পুলিশ, প্রশাসনসহ সবখানে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। সবশেষ স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীও পদত্যাগ করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের পদত্যাগের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে বারবার। বর্তমান নির্বাচন কমিশনও পদত্যাগের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।

২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি দেশের ত্রয়োদশ সিইসি হিসেবে নিয়োগ পান সাবেক আমলা হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন এই কমিশন। তাদের পরিচালনায় ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হয়। এছাড়া এই আড়াই বছরে দেড় সহস্রাধিক পদে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচন, উপনির্বাচন করেছে তারা।

২০২২ সালে নতুন কমিশন গঠনের আগে আকস্মিকভাবেই আইন প্রণয়ন হয়, আর সেই আইনের অধীনে প্রথম নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নেন কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ পাঁচ জন। যদিও দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ ইসিতে নিবন্ধিত বেশিরভাগ দল হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশনকে মেনে নেয়নি। ইসির সংলাপের আহ্বানও প্রত্যাখ্যান করেছিল বিএনপিসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন দল ও জোট। এই কমিশনের আমলে গত জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনও বর্জন করে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল। শুধু আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্র দলগুলো ওই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।