ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শেয়ারবাজার থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা লুট সালমানের

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০১:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 23

দেশের শেয়ারবাজার থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা সরকারের বেসরকারি বিনিয়োগ উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান। দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা পড়া অভিযোগ থেকে এই তথ্য জানা যায়।

অভিযোগ পাওয়ার পর লুটপাটের অনুসন্ধানে নেমেছে সংস্থাটি।

দুদকের জমা পড়া অভিযোগ থেকে জানা গেছে, কারসাজির মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে সালমান এফ রহমান ২০ হাজার কোটি টাকা লুট করেছে।

সালমান এফ রহমান বেক্সিমকো সুকুক গ্রীন বন্ড ছেড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা হাতিয়েছে। এছাড়াও একটি বন্ড ছেড়ে কোম্পানিটি আরো ২ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শেয়ারবাজার থেকে লুটপাট ছাড়াও সালমান দেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সাতটি ব্যাংকে ৩৭ হাজার কোটি টাকার ঋণের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঋণ নিয়েছেন রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা। ইতিমধ্যেই জনতা ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের মধ্যে ১৮ হাজার কোটি টাকা খেলাপি হয়েছেন সালমান এফ রহমান।

এর আগে জনতা ব্যাংক বেক্সিমকো গ্রুপকে ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে বলে দেখিয়ে আসছিল। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে তার ২৯ প্রতিষ্ঠানে ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড ২৫ হাজার কোটি টাকার ঋণের তথ্য বেরিয়ে আসে।

সালমানের নিয়ন্ত্রণাধীন আইএফআইসি ব্যাংক থেকে শ্রীপুর টাউনশিপ প্রতিষ্ঠানের নামে নন-ফান্ডেড এক হাজার ২০ কোটি টাকা, সানস্টার বিজনেসের নামে ৬১৫ কোটি, ফারইস্ট বিজনেসের নামে ৬১৪ কোটি টাকা, কসমস কমোডিটিস লিমিটেডের নামে ৬১২ কোটি, অ্যাপোলো ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নামে ৪৫৫ কোটি, আল্ট্রন ট্রেডিং লিমিটেডের নামে ৪৪৯ কোটি, নর্থস্টোন কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের নামে ৪২১ কোটি, আলফা এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের নামে ৫৬৯ কোটি এবং অ্যাবসলিউট কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের নামে ৪৬৩ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানগুলো সবগুলোই বেক্সিমকো গ্রুপ সংশ্লিষ্ট।

ব্যাংক খাতের আরেক আলোচিত প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ব্যাংক থেকেও সালমান এফ রহমান নামে-বেনামে টাকা ঋণ নিয়েছেন। এই ব্যাংক থেকে ব্লুম সাকসেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের অনুকূলে ফান্ডেড ৮৩৬ কোটি টাকা, বেক্সিমকো গ্রুপের অনুকূলে ফান্ডেড ৮২৩ কোটি টাকা, বেক্সিমকো এলপিজি ইউনিট ১ ও ২ অনুকূলে ফান্ডেড এক হাজার ২৩৪ ও নন-ফান্ডেড ৫৯ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন।

সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান অগ্রণী ব্যাংক থেকে বেক্সিমকো লিমিটেডের ফান্ডেড ৬৬৩ কোটি টাকা, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড নিয়েছে ফান্ডেড ৩৭৫ কোটি টাকা এবং বেক্সিমকো কমিউনিকেশন লিমিটেড ফান্ডেড ৩০০ কোটি ও নন-ফান্ডেড ৭১ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে।

সরকারি মালিকানাধীন আরেক প্রতিষ্ঠান রূপালী ব্যাংক থেকে বেক্সিমকো লিমিটেডে ৯৬৫ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। রাষ্ট্রায়াত্ব সোনালী ব্যাংকে রয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপের ১ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে পুনর্গঠিত ঋণ এক হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। এসব ঋণ পরিশোধ না করার পরও নিয়মিত রয়েছে। অথচ পুনর্গঠিত ঋণের দুই কিস্তি পরিশোধ না করলেই ঋণ খেলাপি হয়ে যাওয়ার কথা।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবি ব্যাংকে সালমান এফ রহমানের চার প্রতিষ্ঠানের ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৬০৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে বেক্সিমকো লিমিটেডের ১২০ কোটি। একই প্রতিষ্ঠানে আরও ৫৫ কোটি টাকা। এছাড়া ইন্টারন্যাশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপারেলসের ৮৩ কোটি এবং নিউ ঢাক্কা ইন্ডাস্ট্রিজের ৩৪৫ কোটি টাকা।

ট্যাগস

শেয়ারবাজার থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা লুট সালমানের

আপডেট সময় ০১:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দেশের শেয়ারবাজার থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা সরকারের বেসরকারি বিনিয়োগ উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান। দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা পড়া অভিযোগ থেকে এই তথ্য জানা যায়।

অভিযোগ পাওয়ার পর লুটপাটের অনুসন্ধানে নেমেছে সংস্থাটি।

দুদকের জমা পড়া অভিযোগ থেকে জানা গেছে, কারসাজির মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে সালমান এফ রহমান ২০ হাজার কোটি টাকা লুট করেছে।

সালমান এফ রহমান বেক্সিমকো সুকুক গ্রীন বন্ড ছেড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা হাতিয়েছে। এছাড়াও একটি বন্ড ছেড়ে কোম্পানিটি আরো ২ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শেয়ারবাজার থেকে লুটপাট ছাড়াও সালমান দেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সাতটি ব্যাংকে ৩৭ হাজার কোটি টাকার ঋণের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঋণ নিয়েছেন রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা। ইতিমধ্যেই জনতা ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের মধ্যে ১৮ হাজার কোটি টাকা খেলাপি হয়েছেন সালমান এফ রহমান।

এর আগে জনতা ব্যাংক বেক্সিমকো গ্রুপকে ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে বলে দেখিয়ে আসছিল। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে তার ২৯ প্রতিষ্ঠানে ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড ২৫ হাজার কোটি টাকার ঋণের তথ্য বেরিয়ে আসে।

সালমানের নিয়ন্ত্রণাধীন আইএফআইসি ব্যাংক থেকে শ্রীপুর টাউনশিপ প্রতিষ্ঠানের নামে নন-ফান্ডেড এক হাজার ২০ কোটি টাকা, সানস্টার বিজনেসের নামে ৬১৫ কোটি, ফারইস্ট বিজনেসের নামে ৬১৪ কোটি টাকা, কসমস কমোডিটিস লিমিটেডের নামে ৬১২ কোটি, অ্যাপোলো ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নামে ৪৫৫ কোটি, আল্ট্রন ট্রেডিং লিমিটেডের নামে ৪৪৯ কোটি, নর্থস্টোন কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের নামে ৪২১ কোটি, আলফা এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের নামে ৫৬৯ কোটি এবং অ্যাবসলিউট কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের নামে ৪৬৩ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানগুলো সবগুলোই বেক্সিমকো গ্রুপ সংশ্লিষ্ট।

ব্যাংক খাতের আরেক আলোচিত প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ব্যাংক থেকেও সালমান এফ রহমান নামে-বেনামে টাকা ঋণ নিয়েছেন। এই ব্যাংক থেকে ব্লুম সাকসেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের অনুকূলে ফান্ডেড ৮৩৬ কোটি টাকা, বেক্সিমকো গ্রুপের অনুকূলে ফান্ডেড ৮২৩ কোটি টাকা, বেক্সিমকো এলপিজি ইউনিট ১ ও ২ অনুকূলে ফান্ডেড এক হাজার ২৩৪ ও নন-ফান্ডেড ৫৯ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন।

সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান অগ্রণী ব্যাংক থেকে বেক্সিমকো লিমিটেডের ফান্ডেড ৬৬৩ কোটি টাকা, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড নিয়েছে ফান্ডেড ৩৭৫ কোটি টাকা এবং বেক্সিমকো কমিউনিকেশন লিমিটেড ফান্ডেড ৩০০ কোটি ও নন-ফান্ডেড ৭১ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে।

সরকারি মালিকানাধীন আরেক প্রতিষ্ঠান রূপালী ব্যাংক থেকে বেক্সিমকো লিমিটেডে ৯৬৫ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। রাষ্ট্রায়াত্ব সোনালী ব্যাংকে রয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপের ১ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে পুনর্গঠিত ঋণ এক হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। এসব ঋণ পরিশোধ না করার পরও নিয়মিত রয়েছে। অথচ পুনর্গঠিত ঋণের দুই কিস্তি পরিশোধ না করলেই ঋণ খেলাপি হয়ে যাওয়ার কথা।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবি ব্যাংকে সালমান এফ রহমানের চার প্রতিষ্ঠানের ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৬০৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে বেক্সিমকো লিমিটেডের ১২০ কোটি। একই প্রতিষ্ঠানে আরও ৫৫ কোটি টাকা। এছাড়া ইন্টারন্যাশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপারেলসের ৮৩ কোটি এবং নিউ ঢাক্কা ইন্ডাস্ট্রিজের ৩৪৫ কোটি টাকা।