আফগানিস্তানে বিউটি পার্লারগুলো চালু রাখার দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন নারীরা। সম্প্রতি দেশটির সব বিউটি পার্লার বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় তালেবান। এর প্রতিবাদে বুধবার (১৯ জুলাই) কাবুলের রাস্তায় বিক্ষোভ করেছেন একদল নারী। তাদের অভিযোগ, বিউটি পার্লার বন্ধ করে দেওয়ার মাধ্যমে তাদের রুটি-রুজি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। খবর এএফপির।
২০২১ সালের আগস্টে ক্ষমতা দখলের পর থেকেই আফগানিস্তানে নারীদের অধিকার সীমিত করে একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে তালেবান। মেয়েদের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা বন্ধ, নারীদের পার্ক যাওয়া, জিমে যাওয়া, রাস্তায় পর্দাবিহীন বের হওয়া নিষিদ্ধ করেছে তারা। চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বিভিন্ন অফিস-আদালতে কর্মরত নারীদের। এই প্রবণতার সবশেষ পদক্ষেপটি ছিল বিউটি পার্লার বন্ধ করা।
মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বাহিনী থাকাকালে দুই দশকে আফগানিস্তানের শহরগুলোতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছিল অসংখ্য বিউটি পার্লার। এগুলোতে কাজ করতে প্রধানত নারীরা। ফলে এটি হয়ে উঠেছিল অনেকের সংসার চালানোর হাতিয়ার।
কিন্তু গত মাসে তালেবান প্রধান হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার নির্দেশে আফগানিস্তানের সব বিউটি পার্লার বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।
বুধবার বিক্ষোভকারীদের হাতে থাকা একটি কাগজে ‘আমাদের রুটি-রজি কেড়ে নেবেন না’ লেখা দেখা গেছে।
আফগানিস্তানে বিক্ষোভ বেশ বিরল ঘটনা। তবে এদিন প্রায় ৫০ জন নারী বুচার স্ট্রিটের বিক্ষোভে অংশ নেন। অবশ্য কিছুক্ষণের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর তীব্র বাধার মুখে পড়েন তারা।
বিক্ষোভকারীদের পাঠানো ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, তাদের ওপর জলকামান ব্যবহার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। পেছনে ফাঁকা গুলি ছোড়ার শব্দও পাওয়া যাচ্ছিল।
এক পার্লারকর্মী বলেন, আজ আমরা আলোচনা ও সমঝোতার জন্য এই বিক্ষোভের আয়োজন করেছিলাম। কিন্তু কেউ আসেনি আমাদের কথা শুনতে। তারা আমাদের দিকে খেয়ালই করেনি। কিছুক্ষণ পর আকাশে গুলি ছুড়ে ও জলকামান ব্যবহার করে আমাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
গত জুন মাসের শেষের দিকে আফগানিস্তানের নীতি ও নৈতিকতা প্রচারণা মন্ত্রণালয় বিউটি পার্লারগুলো বন্ধ করার জন্য এক মাস সময় বেঁধে দেয়।
তাদের দাবি, মেকআপের পেছনে মোটা টাকা খরচ করা দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য সমস্যা তৈরি করে। অত্যাধিক মেকআপের কারণে নারীরা ঠিকভাবে ওজু করতে পারেন না। তাছাড়া কিছু পার্লারে অ-ইসলামী কর্মকাণ্ডও চলে।
আদেশে বলা হয়, তালোবনের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার মৌখিক নির্দেশের ভিত্তিতে বিউটি পার্লার বন্ধের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।