পাকস্থলীতে ছিটেফোঁটা খাবার নেই। শরীর ছিল দুর্বল। পেঙ্গুইনদের মরদেহ পরীক্ষা করে রীতিমতো চমকে উঠেছেন গবেষকরা। গত ১০ দিনে আটলান্টিক উপকূলের দৃশ্যটা ভয়ংকর। একের পর এক পেঙ্গুইনের মরদেহ ভেসে আসছে উরুগুয়ের পূর্ব তীরে। বেশিরভাগই তরুণ পেঙ্গুইন। বাচ্চাও রয়েছে। অনাহারে ও দুর্বলতার কারণেই তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
অনেক সময় এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার কারণে এভাবে পেঙ্গুইনদের মৃত্যু হয়ে থাকে। তবে এবারের কারণ সেটি নয়। মৃত পেঙ্গুইনদের দেহে কোনো অসুখের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
উরুগুয়ের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিকুল বিভাগের প্রধান ড. কারমেন লেইজাগোয়েন জানিয়েছেন, বেশিরভাগ পেঙ্গুইনের পেটেই কোনো খাবার ছিল না। মরদেহগুলো পরীক্ষা করে বোঝা গেছে, তাদের মৃত্যু কোনো অসুখের কারণে হয়নি। দিনের পর দিন না খেতে পেয়ে ধুঁকে ধুঁকে মারা গেছে পেঙ্গুইনগেো।
উরুগুয়ে উপকূল থেকে এ পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি পেঙ্গুইনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত পেঙ্গুইনগুলো ম্যাগেলানিক প্রজাতির। এদের মধ্যে ৯০ শতাংশই তরুণ ও বাচ্চা পেঙ্গুইন।
ম্যাগেলানিক পেঙ্গুইনদের বাস দক্ষিণ আর্জেন্টিনায়। প্রতি বছর খাবার ও উষ্ণ আবহাওয়ার খোঁজে তারা উত্তরে পাড়ি জমায়। কখনো কখনো ব্রাজিল উপকূলেও চলে আসে।
পরিবেশবাদীরা ম্যাগেলানিক পেঙ্গুইনের মৃত্যু বৃদ্ধির কারণ হিসেবে অতিরিক্ত ও অবৈধ মাছ শিকারকে দায়ী করেছেন।
এসওএস মেরিন ওয়াইল্ডলাইফ রেসকিউ এনজিও’র রিচার্ড তেসোর বলেন, ১৯৯০ ও ২০০০র দশক থেকেই প্রাণীদের মধ্যে খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহার করা হচ্ছে।
তার বিশ্বাস, জুলাইয়ের মাঝামাঝি আটলান্টিকে সৃষ্ট একটি ঘূর্ণিঝড় দক্ষিণ-পূর্ব ব্রাজিলে আঘাত হেনেছিল। এর প্রভাবেই সম্ভবত দুর্বল প্রাণীগুলো মারা গেছে।
পেঙ্গুইনের পাশাপাশি সম্প্রতি মালডোনাডোর সৈকতে পেট্রেল, অ্যালবাট্রস, সিগাল, সামুদ্রিক কচ্ছপসহ বিভিন্ন প্রাণীর মরদেহ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন তেসোর।