ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যেখানে জিতলেন ট্রাম্প ও হ্যারিস, ফল ঠিক করবে সুইং স্টেট

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ১১:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪
  • 8

ডেমোক্র্যাট কমলা হ্যারিস বনাম রিপাবলিকান ট্রাম্পের মধ্যে তীব্র লড়াই হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত যে ফলাফল বা এগিয়ে পিছিয়ে থাকার নিরিখে হ্যারিস পেয়েছেন ১১২টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট, ট্রাম্প পেয়েছেন ২১০টি। হ্যারিস ৪৬ দশমিক তিন ও ট্রাম্প ৫২ দশমিক পাঁচ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। যে প্রার্থী ২৭০টি বা তার বেশি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পাবেন তিনিই জিতবেন।

এখনো পর্যন্ত ঘোষিত ফলাফলে চমক নেই। যে রাজ্যগুলি ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের ঘাঁটি বলে পরিচিত, সেগুলি তারা ধরে রাখতে পারছে। ফলে সুইং স্টেট, যেগুলি যে কোনো পক্ষেই যেতে পারে, সেগুলিই তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাময় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল ঠিক করে দেবে।

ট্রাম্প ওহাইও এবং টেক্সাসে জিতেছেন। ওহাইওতে ১৭টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট আছে। টেক্সাসে আছে ৪০টি। দুই রাজ্যেই গতবার ট্রাম্প জিতেছিলেন। তবে বারাক ওবামা ২০০৮ ও ২০১২-তে ওহিওতে জিততে পেরেছিলেন।

ডেমোক্র্যাটদের আশা ছিল, তারা টেক্সাস ছিনিয়ে নিতে পারবে। কারণ, এখানে শহর ও আধা শহরের সংখ্যা বেশি। কিন্তু টেক্সাস রিপাবলিকান ট্রাম্পের সঙ্গেই থেকেছে। ট্রাম্প নর্থ ও সাউথ ডাকোটা, লুইসিয়ানা, ওয়াইওমিংয়ে জিতেছেন।

মিয়ামি থেকে ডিডাব্লিউর সাংবাদিক বেঞ্জামিন আলবারেজ গ্রুবের জানিয়েছেন, সেখানে রাস্তায় প্রচুর ট্রাম্প সমর্থক জড়ো হয়েছেন। তারা গাড়ির হর্ন বাজাচ্ছেন। রিপাবলিকানদের পতাকা হাতে নিয়ে ঘুরছেন। মিয়ামির বিখ্যাত কিউবান রেস্তোরাঁ ভরে আছে ট্রাম্পের সমর্থকে।

ট্রাম্পের এক নারী সমর্থক জানিয়েছেন, তিনি কড়া ধাঁচের মানুষ। আমেরিকার এখন এরকম একজন নেতা চাই। আরেক নারী বলেছেন, ‘কোভিডের আগে সবকিছু ভালো ছিল। গত তিন বছরে কিছুই হয়নি। আমরা সেই সময়ে ফিরে যেতে চাই।’

এক পুরুষ সমর্থক বলেছেন, ‘ট্রাম্পই চাকরি দিতে পারেন।’কমলা হ্যারিস নিউ ইয়র্কে জিতেছেন। এই রাজ্য সাধারণত ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে থাকে। তিনি ইলিনয়ে জিতেছেন। এখানে প্রচুর গ্রামীণ এলাকা থাকলেও শিকাগোর মতো শহর আছে। ডেমোক্র্যাটরা তাই এই রাজ্য থেকে সচরাচর জিতে থাকেন। এখানে ১৭টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট আছে।

বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিজের রাজ্য ডেলাওয়ারে হ্যারিস জিতেছেন। ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে থাকা আরেক রাজ্য নিউ জার্সিতেও হ্যারিস জিতেছেন।

ডিডাব্লিউর সাংবাদিক জানেলে ডুমালাসন ওয়াশিংটন ডিসি থেকে জানাচ্ছেন, হ্যারিসের সমর্থকরা দলে দলে হাওয়ার্ড ওয়াচ পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন। তার সমর্থকরা খুবই আত্মবিশ্বাসী ও জয়ের বিষয়ে আশাবাদী। তারা মনে করছেন, আমেরিকা তার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পাবে।

জর্জিয়ার মধ্যবয়সি নারীর কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কেন তিনি হ্যারিসকে পছন্দ করেন, তার জবাব ছিল, কারণ, তিনি সব বিষয়ে ট্রাম্পের একেবারে উল্টো অবস্থানে আছেন। এখানেই একটি পোস্টারে লেখা, ‘আপনারা কি ম্যাডাম প্রেসিডেন্ট চান, নাকি ম্যাডম্যান প্রেসিডেন্ট চান?’

ওয়াশিংটন ডিসি সাধারণত ডেমোক্র্যাট শক্ত জমি। সারাদিন ধরে ভোটদাতাদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে মনে হয়েছে, এখানে অন্তত প্রচুর মানুষ কমলা হ্যারিসকে ভোট দিচ্ছেন। সুইং স্টেট হলো সেই রাজ্য যারা যে কোনো দিকেই চলে যেতে পারে। সমীক্ষকদের মতে, এই রাজ্যগুলিতে ভয়ংকর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এবারো যে কোনো দিকেই তা যেতে পারে।

সুইং স্টেটগুলিতে ভোটদান শেষ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ভোটগণনার ক্ষেত্রে অনেকটা সময় লাগে। এটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। ব্যবধান খুব কম হলে আবার গণনা হয়। ফলে তার জন্য সময় লাগে। তাই এই ভোটগণনায় সময় লাগবে।

সূত্র: ডিডাব্লিউ, এপি, এএফপি, রয়টার্স, ডিডাব্লিউ

ট্যাগস

যেখানে জিতলেন ট্রাম্প ও হ্যারিস, ফল ঠিক করবে সুইং স্টেট

আপডেট সময় ১১:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

ডেমোক্র্যাট কমলা হ্যারিস বনাম রিপাবলিকান ট্রাম্পের মধ্যে তীব্র লড়াই হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত যে ফলাফল বা এগিয়ে পিছিয়ে থাকার নিরিখে হ্যারিস পেয়েছেন ১১২টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট, ট্রাম্প পেয়েছেন ২১০টি। হ্যারিস ৪৬ দশমিক তিন ও ট্রাম্প ৫২ দশমিক পাঁচ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। যে প্রার্থী ২৭০টি বা তার বেশি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পাবেন তিনিই জিতবেন।

এখনো পর্যন্ত ঘোষিত ফলাফলে চমক নেই। যে রাজ্যগুলি ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের ঘাঁটি বলে পরিচিত, সেগুলি তারা ধরে রাখতে পারছে। ফলে সুইং স্টেট, যেগুলি যে কোনো পক্ষেই যেতে পারে, সেগুলিই তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাময় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল ঠিক করে দেবে।

ট্রাম্প ওহাইও এবং টেক্সাসে জিতেছেন। ওহাইওতে ১৭টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট আছে। টেক্সাসে আছে ৪০টি। দুই রাজ্যেই গতবার ট্রাম্প জিতেছিলেন। তবে বারাক ওবামা ২০০৮ ও ২০১২-তে ওহিওতে জিততে পেরেছিলেন।

ডেমোক্র্যাটদের আশা ছিল, তারা টেক্সাস ছিনিয়ে নিতে পারবে। কারণ, এখানে শহর ও আধা শহরের সংখ্যা বেশি। কিন্তু টেক্সাস রিপাবলিকান ট্রাম্পের সঙ্গেই থেকেছে। ট্রাম্প নর্থ ও সাউথ ডাকোটা, লুইসিয়ানা, ওয়াইওমিংয়ে জিতেছেন।

মিয়ামি থেকে ডিডাব্লিউর সাংবাদিক বেঞ্জামিন আলবারেজ গ্রুবের জানিয়েছেন, সেখানে রাস্তায় প্রচুর ট্রাম্প সমর্থক জড়ো হয়েছেন। তারা গাড়ির হর্ন বাজাচ্ছেন। রিপাবলিকানদের পতাকা হাতে নিয়ে ঘুরছেন। মিয়ামির বিখ্যাত কিউবান রেস্তোরাঁ ভরে আছে ট্রাম্পের সমর্থকে।

ট্রাম্পের এক নারী সমর্থক জানিয়েছেন, তিনি কড়া ধাঁচের মানুষ। আমেরিকার এখন এরকম একজন নেতা চাই। আরেক নারী বলেছেন, ‘কোভিডের আগে সবকিছু ভালো ছিল। গত তিন বছরে কিছুই হয়নি। আমরা সেই সময়ে ফিরে যেতে চাই।’

এক পুরুষ সমর্থক বলেছেন, ‘ট্রাম্পই চাকরি দিতে পারেন।’কমলা হ্যারিস নিউ ইয়র্কে জিতেছেন। এই রাজ্য সাধারণত ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে থাকে। তিনি ইলিনয়ে জিতেছেন। এখানে প্রচুর গ্রামীণ এলাকা থাকলেও শিকাগোর মতো শহর আছে। ডেমোক্র্যাটরা তাই এই রাজ্য থেকে সচরাচর জিতে থাকেন। এখানে ১৭টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট আছে।

বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিজের রাজ্য ডেলাওয়ারে হ্যারিস জিতেছেন। ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে থাকা আরেক রাজ্য নিউ জার্সিতেও হ্যারিস জিতেছেন।

ডিডাব্লিউর সাংবাদিক জানেলে ডুমালাসন ওয়াশিংটন ডিসি থেকে জানাচ্ছেন, হ্যারিসের সমর্থকরা দলে দলে হাওয়ার্ড ওয়াচ পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন। তার সমর্থকরা খুবই আত্মবিশ্বাসী ও জয়ের বিষয়ে আশাবাদী। তারা মনে করছেন, আমেরিকা তার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পাবে।

জর্জিয়ার মধ্যবয়সি নারীর কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কেন তিনি হ্যারিসকে পছন্দ করেন, তার জবাব ছিল, কারণ, তিনি সব বিষয়ে ট্রাম্পের একেবারে উল্টো অবস্থানে আছেন। এখানেই একটি পোস্টারে লেখা, ‘আপনারা কি ম্যাডাম প্রেসিডেন্ট চান, নাকি ম্যাডম্যান প্রেসিডেন্ট চান?’

ওয়াশিংটন ডিসি সাধারণত ডেমোক্র্যাট শক্ত জমি। সারাদিন ধরে ভোটদাতাদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে মনে হয়েছে, এখানে অন্তত প্রচুর মানুষ কমলা হ্যারিসকে ভোট দিচ্ছেন। সুইং স্টেট হলো সেই রাজ্য যারা যে কোনো দিকেই চলে যেতে পারে। সমীক্ষকদের মতে, এই রাজ্যগুলিতে ভয়ংকর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এবারো যে কোনো দিকেই তা যেতে পারে।

সুইং স্টেটগুলিতে ভোটদান শেষ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ভোটগণনার ক্ষেত্রে অনেকটা সময় লাগে। এটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। ব্যবধান খুব কম হলে আবার গণনা হয়। ফলে তার জন্য সময় লাগে। তাই এই ভোটগণনায় সময় লাগবে।

সূত্র: ডিডাব্লিউ, এপি, এএফপি, রয়টার্স, ডিডাব্লিউ